ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | চট্টগ্রামে ৩ জেএমবি সদস্য গ্রেফতার

চট্টগ্রামে ৩ জেএমবি সদস্য গ্রেফতার

image-70417-1562940815

নিউজ ডেক্স : নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির তিনজন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রামের বন্দর থানার হালিশহর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীস্থ র‌্যাব-১১ প্রধান কার্যালয়ে আনা হয়। এ সময় জঙ্গিদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ উগ্রবাদী বই, লিফলেট ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার বিকালে র‌্যাব-১১ এর অপারেশন অফিসার মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিরা হলেন মো. আশফাক-উর-রহমান অয়ন ওরফে আরিফ ওরফে অনিক (২৬), মো. রনি আহম্মেদ ওরফে রনি (৩১) ও মো. রিপন মণ্ডল ওরফে রিপন (৩০)।

র‌্যাব জানায়, গোপনে খবর পেয়ে র‌্যাব-১১ এর একটি বিশেষ আভিযানিক দল গত রাতে সিএমপি চট্টগ্রাম বন্দর থানার হালিশহর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করে। তারা সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দর থানায় সন্ত্রাস বিরোধী (জঙ্গি) দুটি পৃথক মামলার পলাতক আসামি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন যাবত গোপনে সংগঠিত হয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে এবং নাশকতা মূলক কর্মকাণ্ড করার অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন। র‌্যাব জানায়, গ্রেফতারকৃত মো. আশফাক-উর-রহমান অয়ন ওরফে আরিফ ওরফে অনিকের বাড়ি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানাধীন নরোত্তম এলাকায়। সে ২০০৯ সালে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে বিজ্ঞান শাখায় এসএসসি ও ২০১১ সালে গর্ভ সিটি কলেজ চট্টগ্রাম থেকে এইচএসসি পাশ করে এবং ২০১৬ সালে হয়রত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট থেকে অনার্স (কম্পিউটার সায়েন্স) পাশ করে। এরপর ২০১৪ সালে মোল্লা ইব্রাহীমের বক্তব্য শুনে তার মাঝে উগ্রবাদী চেতনা জাগ্রত হয়। মোল্লা ইব্রাহীমের মাধ্যমে বাংলাদেশী জিহাদি তৎপরতা ও আল কায়দা সম্পর্কে ধারনা নেয়। পরবর্তীতে সিলেটে মোল্লা ইব্রাহীমের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ অনুসারীর মাধ্যমে মো. আশফাক-উর-রহমান অয়ন আনসার-আল-ইসলামের কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন।

তিনি ২০১৫ সালে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার-আল-ইসলামের সামরিক শাখার আইটি বিভাগের দায়িত্ব পান। একই বছর তিনি ঢাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার-আল-ইসলামের একটি ১২ দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করে গেরিলা যুদ্ধ সম্পর্কে তাত্ত্বিক ধারণা নেনে। সেখানে তার সঙ্গে মেজর জিয়ার পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা হয়। ২০১৬ সালে সিলেট থেকে ঢাকায় এসে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার-আল-ইসলামের মিডিয়া উইং এর দায়িত্ব পালন করেন। মো. আশফাক-উর-রহমান অয়ন ২০১৭ সালে মে মাসে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন।

২০১৭ সালের শেষের দিকে জামিনে এসে পুনরায় জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। দুইটি নিষিদ্ধ জঙ্গি ও উগ্রবাদী সংগঠন যথাক্রমে আনসার-আল-ইসলাম ও জেএমবির কার্যক্রম ও আদর্শগত অভিন্নতা, নিজের পরিচয় উৎঘাটিত হাওয়া এবং সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের সুবিধার্থে জেএমবিতে যোগদান করেন। এরপর আগের মত সামরিক শাখার আইটি বিভাগের শীর্ষ নেতা হিসেবে নিযুক্ত হয়ে জঙ্গি তৎপরতা অব্যাহত রাখেন।

র‌্যাব আরও জানায়, জঙ্গি সদস্য মো. রনি আহম্মেদর বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ থানাধীন রুদ্রপুর এলাকায় এবং অপর জঙ্গি মো. রিপন মণ্ডলের বাড়ি রাজবাড়ী জেলার পাংশা থানাধীন কৃষ্টপুর এলাকায়। তারা দুজনই দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামের ইপিজেডের দুটি বেসরকারী কোম্পানিতে চাকরি করেন। ২০১৬ সালের শুরুর দিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সক্রিয় সদস্য মেহেদী হাসান ও আকবর হোসেন ওরফে সুমনের মাধ্যমে তারা উভয়ই উগ্রবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জেএমবিতে যোগদান করেন এবং জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়ে পড়েন। মো. রনি আহম্মেদ চাকরির পাশাপাশি জেএমবির সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালানোর সুবিধার্থে ছদ্মবেশে রাতে রিকশা চালাতেন। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!