Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | চট্টগ্রামে ১৬ আসনে ৭০ ভোট কেন্দ্র নিয়ে আপত্তি

চট্টগ্রামে ১৬ আসনে ৭০ ভোট কেন্দ্র নিয়ে আপত্তি

balot-box_30052

নিউজ ডেক্স : চট্টগ্রামে ১৬টি সংসদীয় আসনে ১ হাজার ৮৭০টি খসড়া ভোট কেন্দ্রের তালিকা প্রকাশের পর ৬৫জন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ৭০ ভোট কেন্দ্র নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনে। ভোট কেন্দ্র পরিবর্তন, পুনঃস্থাপন ও বাতিলের জন্য জেলা নির্বাচন অফিসে যারাই আবেদন করেছেন তাদের বেশির ভাগই স্থানীয় সংসদ সদস্যদের ঘনিষ্ঠজন বলে জানা গেছে। আবেদনে অনেকেই পূর্বের ভোট কেন্দ্র বহাল রাখারও দাবি জানিয়েছেন।

ইতোমধ্যে সারদেশের মতো চট্টগ্রামে ১৬ সংসদীয় আসনে ১ হাজার ৮৭০টি খসড়া ভোট কেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। খসড়া ভোট কেন্দ্রের উপর বিভিন্ন আপত্তি শুনানি আজ বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা ও থানা নির্বাচন অফিসারদের কার্যালয়ে এসব দাবি–আপত্তির ওপর শুনানি শেষে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে।

চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস থেকে জানা গেছে, খসড়া ভোটার তালিকার ওপর জেলা, উপজেলা ও থানা নির্বাচন অফিসে বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ৬৫টি আপত্তির আবেদন জমা পড়েছে। ৬৫টি আবেদনে অসংখ্য ভোট কেন্দ্র নিয়ে আপত্তি জানানো হয়েছে।

এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান জানান, খসড়া ভোট কেন্দ্রের ওপর বিভিন্ন আপত্তি শুনানি বৃহস্পতিবার শেষ হবে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা ও থানা নির্বাচন অফিসারদের কার্যালয়ে যেসব আপত্তি জমা পড়েছে তা শুনানি শেষে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে। চট্টগ্রামে মোট ১ হাজার ৮৭০টি খসড়া ভোট কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে।

জেলা নির্বাচন অফিসে দেয়া আবেদন থেকে জানা গেছে, পটিয়া উপজেলার কাশিয়াইশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো আবুল কাশেম নির্বাচন কমিশনে কাশিয়াইশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি ৩ নং ওয়ার্ড দ্বারক পেরপেরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আরেকটি উপকেন্দ্র স্থাপনের জন্য আবেদন করেছেন। পটিয়ার ধলঘাট ইউপি চেয়ারম্যান রনবীর ঘোষ নির্বাচন কমিশনে ঈম্বরখাইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রটি পরিবর্তন করে ৯নং ওয়ার্ডের চন্দন দে মেমোরিয়াল কমিউনিটি ক্লিনিকে স্থাপনের জন্য আবেদন করেছেন। ১৪ নং ভাটিখাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ বখতিয়ার আবেদন করেছেন ভাটিখাইন এন. কে.এম ইনস্টিটিউট ভোট কেন্দ্রটি পরিবর্তন করে ৬ নং ওয়ার্ডে ভাটিখাইন হযরত মির্জা আলী লেদু শাহ (রা.) দাখিল মাদ্রাসায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের উপকেন্দ্র স্থাপন করতে।

পটিয়া উপজেলার ৯নং ছনহরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি উত্তম বৈদ্য ১২২ নং উত্তর বরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রটি পরির্বতন করে ১২৮ নং দক্ষিণ বরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থাপনের আবেদন করেছেন। ১৬ নং কচুয়াই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম ইনজামুল হক সিটি সরকারি প্রাথমিক ভোট কেন্দ্রটি পরিবর্তন করে চক্রশালা মিলনচক্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানান্তরের আবেদন করেছেন। কেলিশহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরোজ কান্তি সেন ৪ নং ওয়ার্ডে ১১ নং কেলিশহর ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেঙ ভবনে এবং গোয়ালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আরো দুটি নির্বাচনী উপকেন্দ্র স্থাপনের জন্য আবেদন করেছেন। কেলিশহর ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেঙ ভবনে কেলিশহর ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. ভূবন কুমার দে তাদের ১নং ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্রটি কেলিশহর ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেঙ ভবনে পরিবর্তন (স্থাপন) করতে আবেদন করেছেন। ৯নং(ক) বড়লিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুল ইসলাম সানু তার ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্রটির পরিবর্তে ৫নং ওয়ার্ডে সৈয়দ সাইফুল ইসলাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানান্তরের জন্য আবেদন করেছেন। পটিয়ার হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের পূর্বের ভোট কেন্দ্র আয়েশা সিদ্দিকা মহিলা মাদ্রাসায় বহাল রাখার জন্য এলাকাবাসীর পক্ষে আবু বক্কর সুজন ও রফিকুল আলম নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছেন। এদিকে হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের চরকানাই উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রটি পরিবর্তন করে ৪ নং ওয়ার্ডে শাহনেওয়াজ চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থাপনের জন্য আবেদন করেছেন স্থানীয় ইউপি মেম্বার উজ্জ্বল বড়ুয়া।

রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের ৪ নং মরিয়মনগর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম তার ইউনিয়নের মধ্য মরিয়মনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক কেন্দ্রটি পরিবর্তন করে পশ্চিম মরিয়মনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থাপনের জন্য আবেদন করেছেন। এদিকে বেতাগী ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডে মেম্বার মোহাম্মদ সেলিম ২নং ওয়ার্ডের ঢেমির ছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রটি বহাল রাখার জন্য আবেদন করেছেন। বাঁশখালী উপজেলার ১২ নং ছনুয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের পক্ষে ফরহাদুল ইসলাম তার আবেদনে ৬ নং ওয়ার্ডে নতুন একটি ভোট কেন্দ্র স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন। একই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা মো. শহীদুল্লাহ তোতাকাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রটি পরির্বতন করে ১৫০ নং ছনুয়া হাজি কালা মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানান্তরের জন্য আবেদন করেছেন।

আনোয়ারা উপজেলার ২নং বারশত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ তার ইউনিয়নে বখতিয়ার পাড়া সিনিয়র মাদ্রাসার ভোট কেন্দ্রটি পরিবর্তন করে বখতিয়ারপাড়া হযরত চারপীর আউলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপনের আবেদন করেছেন। সাতকানিয়া উপজেলার ১৫ নং ছদহা ইউনিয়নকে সংসদীয় আসন চট্টগ্রাম–১৫তে খসড়া গেজেট অনুযায়ী বহাল রাখার জন্য আবেদন করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোসাদ হোসাইন চৌধুরী। এদিকে চন্দনাইশের জোয়ারা ইউনিয়নের নগরপাড়া ফোরকানিয়া মাদরাসা ভোট কেন্দ্রটি পরির্বতন করে উত্তর জোয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থাপনের জন্য আবেদন করেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আমিন আহমেদ চৌধুরী।

নগরীর পাহাড়তলী থানা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মোস্তাফা কামাল পাশা তাদের বাড়ির এলাকায় ওয়েষ্টার্ন ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রটি বাতিলের জন্য আবেদন করেছেন। বিগত সময়ে এই কেন্দ্রে মারামারি ও দখলের মতো ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে তাদের বাড়ির স্বার্থে এই কেন্দ্রটি এবার বাতিলের জন্য তিনি আবেদন করেছেন। সিটি কর্পোরেশনের ১১ নং দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডে কাউন্সিলর মোরশেদ আকতার চৌধুরী ২টি কেন্দ্র পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছেন। ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নিছার আহমেদ মঞ্জু ২টি ভোট কেন্দ্র পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছেন। বর্তমান ভোট কেন্দ্র–নুরুল হক চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় ও কাট্টলী নুরুল হক চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিবর্তন করে সিডিএ প্রভাতী উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে কেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রস্তাব করেছেন।

৯নং উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. জহুরুল আলম জসিম একটি ভোট কেন্দ্র পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছেন। তিনি কোয়ার্ড এইচ ব্লক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (নিচ তলা ও ২য় তলা) ব্যাংক কলোনি মহিলা ভোট কেন্দ্রটি পরিবর্তন করে কৈবল্যধাম হাউজিং স্টেট বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপনের জন্য আবেদন করেছেন।

এনায়েত বাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. সলিম উল্লাহ বাচ্চু তিনটি কেন্দ্র পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছেন। আন্দরকিল্লাহ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী কদম মোবারক এম ওয়াই বালক–বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিবর্তে কদম মোবারক সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ে ভোট কেন্দ্রটি স্থানান্তরের জন্য দাবি জানিয়েছেন। জামালখান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন জামালখান ওয়ার্ড কার্যালয়কে খসড়া ভোটার তালিকায় ভোট কেন্দ্র হিসেবে উল্লেখ করায় সেই কেন্দ্রটি বাতিল করে শাহ ওয়ালী উল্লাহ ইনস্টিটিউটে স্থাপন করার প্রস্তাব দিয়েছেন। ১ নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল হাসেম একটি ভোট কেন্দ্র পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছেন। ৭ নং পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোবারক আলী একটি ভোট কেন্দ্র পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছেন। চান্দগাঁও ওয়ার্ডের বাসিন্দা সরওয়ার আলম চৌধুরী ২টি কেন্দ্র পরিবর্তনের আবেদন করেছেন। উত্তর মোহরা এলাকাবাসীর পক্ষে মো. নুরুল ইসলাম উত্তর মোহরা চৌধুরী প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ভোট কেন্দ্রের আওতায় আনার আবেদন করেছেন। ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছালেহ আহমদ চৌধুরী একটি কেন্দ্র পরিবর্তনের আবেদন করেছেন। মীরসরাই উপজেলায় তিনটি ভোট কেন্দ্র পরিবর্তনের জন্য আবেদন করা হয়েছে।

সূত্র : দৈনিক আজাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!