ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | করোনায় দেশে ২৪ ঘণ্টায় ১৪ জনের মৃত্যু, শনাক্ত আরও ১০৪১

করোনায় দেশে ২৪ ঘণ্টায় ১৪ জনের মৃত্যু, শনাক্ত আরও ১০৪১

নিউজ ডেক্স : করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৪ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে ২৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে আরও এক হাজার ৪১ জন করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৮ হাজার ৮৬৩ জনে।

বৃহস্পতিবার (১৪ মে) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস শনাক্তে আরও সাত হাজার ৮৩৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় সাত হাজার ৩৯২টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো এক লাখ ৫১ হাজার ৯৩০টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও এক হাজার ৪১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ হাজার ৮৬৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ১৪ জন। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৮৩-এ।

নতুন করে যারা মারা গেছেন তাদের ১১ জন পুরুষ ও তিন জন নারী। নয় জন ঢাকার এবং পাঁচ জন চট্টগ্রামের বাসিন্দা। বয়সের দিক থেকে একজন ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী, একজন ত্রিশোর্ধ্ব, পাঁচজন চল্লিশোর্ধ্ব, পাঁচজন পঞ্চাশোর্ধ্ব এবং দুজন সত্তরোর্ধ্ব।

বুলেটিনে নতুন করে সুস্থ কেউ হয়েছেন কি-না, সে তথ্য জানানো হয়নি। ফলে সুস্থ রোগীর সংখ্যা তিন হাজার ৩৬১-ই থাকছে।

গত বুধবারের (১৩ মে) বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা একদিনে সর্বোচ্চ। আর সাত হাজার ৯০০টি নমুনা পরীক্ষায় আরও এক হাজার ১৬২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা হয়তো কমেছে, তবে তা রেকর্ডের প্রথম দিকেই আছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যে রোগী শনাক্ত হয়েছে, তা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত হয় এক হাজার ৩৪ জন। তা জানানো হয় ১১ মের বুলেটিনে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় যে মৃত্যু হয়েছে, সংখ্যার দিক থেকে তা তৃতীয় সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড ১৫ জনের। তা জানানো হয় গত ১৭ এপ্রিলের বুলেটিনে।

বৃহস্পতিবারের বুলেটিনে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, উল্লিখিত নমুনাগুলো ঢাকার ২০টি ল্যাব ও ঢাকার বাইরের ২১টি ল্যাবে সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ঢাকার ল্যাবে চার হাজার ৯৫৬টি ও ঢাকার বাইরের ল্যাবে দুই হাজার ৮৮১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ঢাকার ল্যাবে চার হাজার ৫৮৮টি এবং ঢাকার বাইরের ল্যাবে দুই হাজার ৮০৪টিসহ নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নমুনা পরীক্ষায় ঢাকার ল্যাবগুলোতে ৭৫৪ জন এবং বাইরের ল্যাবগুলোতে ২৮৭ জন শনাক্ত হয়েছেন। 

বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ২০১ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন দুই হাজার ৫৭০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৬৬ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন এক হাজার ৩৯৮ জন। 

সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা আছে আট হাজার ৬৩৪টি। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে দুই হাজার ৯০০টি ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ছয় হাজার ৩৪টি শয্যা রয়েছে। আইসিইউ শয্যা আছে ৩২৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট আছে ১০২টি। আইসিইউ শয্যা ও ডায়ালাইসিস ইউনিট শয্যা বাড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে তিন হাজার ৩১ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই লাখ ৩০ হাজার ৬৭৩ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ২৯৮ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন এক লাখ ৮৪ হাজার ৬৫৯ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৪৬ হাজার ১৪ জন।

দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬১৭টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ১৬৫ জনকে।

বুলেটিনে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়।

গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম শনাক্ত হলেও এখন করোনাভাইরাসের কবলে গোটা বিশ্বই। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪৪ লাখ। মৃতের সংখ্যা তিন লাখ ছুঁই ছুঁই। তবে প্রায় পৌনে ১৭ লাখ রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মার্চ। এরপর দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর মিছিলও।

অবশ্য প্রাণঘাতী এ ভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে মানুষকে ঘরে রাখার লক্ষ্যে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে দফায় দফায় ছুটি বাড়িয়ে তা ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়েছে। যদিও ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার পোশাক কারখানা খুলে দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে খুলে দেয়া হয়েছে মসজিদ এবং দোকানপাট-শপিংমলও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!