নিউজ ডেক্স : ‘ই-পাসপোর্ট’ যুগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ। আগামী মাসের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেওয়ার মাধ্যমে শুরু হবে ই-পাসপোর্টের কর্মযজ্ঞ। মার্চে জনসাধারণের হাতে যাবে বিশেষায়িত এই পাসপোর্ট। এ লক্ষ্যে প্রস্তুতি চলছে চট্টগ্রামসহ সারা দেশের পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসগুলোতে। এরই অংশ হিসেবে ঢাকায় গতকাল শুক্রবার থেকে দুদিনের প্রশিক্ষণে যোগ দিয়েছেন চট্টগ্রামের দুটি পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের উপ-পরিচালকরা।
এ বিষয়ে পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আল আমিন মৃধা জানান, আগামী মার্চ থেকে ই-পাসপোর্ট মানুষের হাতে যাবে। এ লক্ষ্যে ঢাকার আগারগাঁওস্থ পাসপোর্ট অফিসে শুক্রবার থেকে সারা দেশের পাসপোর্ট অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। তিনি জানান, প্রথমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে দিয়েই ই-পাসপোর্টের যাত্রা শুরু হবে।
তথ্য অনুযায়ী, ই-পাসপোর্ট হবে ১০ বছর ও ৫ বছর মেয়াদি। ১৮ বছরের নিচে যাদের বয়স তারা ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট গ্রহণ করতে পারবেন। ১৮ বছরের উপরে যাদের বয়স তাদের পাসপোর্টের মেয়াদ ১০ বছর। তবে তারা চাইলে ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে পারবেন বলে জানিয়ে মোহাম্মদ আল আমিন মৃধা বলেন, বর্তমানে চালু থাকা মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এমআরপি) তুলনায় ই-পাসপোর্টে খরচ বেশি হবে। ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট হবে ৬৪ পৃষ্ঠা এবং ৫ বছর মেয়াদের পাসপোর্ট হবে ৪৮ পৃষ্ঠার।
উল্লেখ্য, দেশে ২০১০ সালের এপ্রিলে এমআরপি পাসপোর্ট প্রদান শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামেও শুরু হয় এমআরপি পাসপোর্ট ইস্যু। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের অংশ হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অথরিটির (আইসিএও) গাইডলাইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) ও মেশিন রিডেবল ভিসা (এমআরভি) প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। সেই থেকে এমআরপি পাসপোর্ট ইস্যু ও বিতরণ চলছে।
এদিকে বিশ্বের ১১৯তম দেশ হিসেবে সম্প্রতি ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট) যুগে যাত্রা শুরুর অপেক্ষায় রয়েছে দেশ। এরই মধ্যে জিটুজি ভিত্তিতে জার্মানির ভেরিডোস জিএমবিএইচের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে ই-পাসপোর্ট চালুর কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে ওই প্রতিষ্ঠানের সাথে ৪ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকার এ চুক্তি সম্পাদন করে বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর।
ই-পাসপোর্টের ব্যাপারে মনসুরাবাদ পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের উপ-পরিচালক আবু নোমান মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, আমরা শীঘ্রই ই-পাসপোর্ট যুগে প্রবেশ করছি।
তথ্য অনুযায়ী, ই-পাসপোর্ট বইয়ের কভার পাতার ভেতরে থাকবে মোবাইল সিমের মতো একটি ডিভাইস। এটাতেই থাকবে পাসপোর্টধারীর যাবতীয় তথ্য। মেশিন মুহূর্তের মধ্যেই রিড করবে এসব তথ্য।
মনসুরাবাদ অফিস থেকে নগরীর বন্দর, ডবলমুরিং (সদরঘাট), সীতাকুণ্ড, পাহাড়তলী (আকবরশাহ), মীরসরাই, হাটহাজারী, রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি, রাউজান, বায়েজিদ, খুলশী, ভূজপুর, সন্দ্বীপ, পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম পোর্ট ও হালিশহর এলাকার বাসিন্দাদের পাসপোর্ট ইস্যু করে। একইসাথে এ অফিস ভিসা প্রদানের কাজটিও করে। বাঁশখালী, আনোয়ারা, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ, পটিয়া ও বোয়ালখালী এবং নগরীর কোতোয়ালী, কর্ণফুলী, বাকলিয়া, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ ও চকবাজার (পাঁচলাইশ ও কোতোয়ালীর অংশ) এলাকার আবেদনকারীদের পাঁচলাইশ অফিস থেকে ইস্যু করা হয় পাসপোর্ট।