অামার শুভ্রতা ,
অামি জানি এই চিঠি পেয়ে প্রথমে তুমি চমকে যাবেই! থমকে যাবে অথবা হবে চঞ্চলা ভীরু হরিণী। আমি আজ তোমাকে যে চিঠিটি লিখছি, জানিনা সে চিঠি আজও কোন প্রেমিক তার প্রেমিকাকে লিখেছে কি না?আমি তোমাকে লিখছি আমার সমস্ত স্বত্বা আর বিবেকের অনুপ্রেরণায় একটি দীর্ঘ প্রেম ও ভালবাসার চিঠি! একটি স্বপ্নের স্ববিস্তার,মৌনতার বিষাদময়তায় গুটিগুটি অক্ষরগুলো তোমার চেতনাকে আলোড়িত করবে! তুমি কোনদিন ভাবতেও পারোনি কোন এক নিঃস্বঙ্গ প্রেমিক তার বিশ্বাসের পুঁজি দিয়ে তোমার জন্য রচনা করতে পারে এরকম একটি চিঠি ||
মরমিয়া!
হয়তো এই লেখার জন্য অামাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে তোমার জন্য বছরের পর বছর! তুমি কি জানো ভালবাসার মানে কি ? জানোনা, ভালোবাসা হচ্ছে অমর একটি সুর,যে সুরের স্বরলিপি রচনা করবো তুমি অামি দু’জন। শুভ্রা জানো ? আমি যেনো দাঁড়িয়ে আছি একটি নদীর কিনারায় – যেখানে স্রোতের তাণ্ডব আমাকে অমরত্বের সুর শোনায় অবিরত! তোমাকে আমি বিস্ময়কর সে সুরের ভেতর দিয়ে তন্ন তন্ন করে খুঁজেছি নিত্যদিন! কোনদিন আমিও ভাবিনি তোমায় সত্যি সত্যি পেয়ে যাবো অামার দৃষ্টির সীমানায়। এই চিঠি লিখতে বসে শতোকোটি হাজার কোটি অফুরন্ত প্রশ্ন করেছি এ হৃদয়কে, উত্তরে শুধু এটুকুই জেনেছি ভালোবাসি তোমায়! অার জীবনে মরনে আমি শুধু তোমাকেই চাই। তোমার ডাগর নয়নে চোখ রেখে অামি তলিয়ে যাই প্রশান্ত মহা সাগরের অতলে, অথৈ জলে ডুবেও দেখি তোমার মোহনীয় রূপ ||
অপরূপা!
অামার হৃদয় রাজ্যের বর্ষণ মূখর ভোর তুমি। তোমাতে নিমগ্ন অামি, তোমাতে প্রীত। তুমি অামার সুনয়না, সুনাসা, সুনিপুনা ও মনোহরা, তোমার মধ্যে অামি প্রতিনিয়ত হই দিশেহারা। জানো এই বসন্ত রাতে বৃষ্টি হয়েছে , গাছের শাখায় শাখায় তার চিহ্ন টুপটাপ ঝরছে। অাবারও হয়তো হবে, ঝরবে অঝোর ধারায় বরিষণ ! প্রেমের পেয়ালা হাতে আমি সংগ্রহ করবো বসন্তের উদরে বর্ষিত দু:খের নীলাভ বৃষ্টি-জল। যে জলে কালি বানিয়ে শেষ করবো আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রেমের চিঠি! এ চিঠি তোমার কাছে হয়তো তুচ্ছ হতে পারে, নিতান্তই উন্মাদ প্রেমিকের প্রলাপের মত হতে পারে,কিন্তু তুমি নিশ্চিত থাকো, এই চিঠি কোনদিনও তোমার জীবনে কোনো সংশয়ের কারন হবে না। শোনো আজ এই বসন্তের প্রথম দিনে আমি ঘোষণা করছি আমার প্রেমের শ্রেষ্ঠ পরিচ্ছদ। তোমাকে লিখছি যে কথা, তা আজো লিখিনি আমি। আজ আমার প্রতিটি অক্ষরে, আমার প্রতিটি শব্দে তোমার সংশয় পরিত্রাণের কথা বলছি। তোমাকে সৎ এবং সাহসী রমণী হবার প্রেরণা যোগাচ্ছি । তুমি অনায়াসে হয়ে যেতে পারো আমার কামনার বিশ্বস্ত রমণী। তুমিই পারবে বিশ্বাসে ভর দিয়ে ডানা মেলে তুলে আনতে আকাশের রঙ, মেঘের কালিমা মুছে একটি প্রজ্বলিত শিখাময় সূর্যের মুখ । আমিও অপেক্ষা করবো। তুমি একদিন সব জড়তা আর নৈরাশ্যবাদের সংশয় মাড়িয়ে এখানে সাজাবে সহনশীলতা, সাম্য আর ভালবাসার মিলন-মেলা। আমি তোমার বিবেকের বক্ষ-ভেদ করে পাঠিয়ে দিচ্ছি আজ আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ ভালবাসা ও প্রেমের চিঠি । যে চিঠি আজো কোন প্রেমিক তার প্রেমিকার জন্য হয়তো লিখেনি ||
লক্ষ্মীটি!
তোমার হাত ধরে জীবনের চরাই উৎরাই সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না ও অানন্দ- বেদনার বৈতরণী পার হতে চাই জীবনভর ! তুমি, হ্যাঁ তুমিই বইয়ে দিবে অামার জীবনে প্রেমের প্লাবন। তোমায় নিয়ে গড়বো অামি অামার হৃদয় রাজ্যে প্রেমের তাজমহল! তুমি চিরন্তন, তাই তো শুধু তোমাকে একমাত্র তোমাকেই চাই অনুক্ষণ।অামার এই চিঠি হবে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ প্রেমের চিঠি আর তুমি হবে শ্রেষ্ঠ রমণী, আমি লিখে দিচ্ছি তার আগাম দলিল !!
বিঃদ্রঃ ফিরোজা সামাদ এর লেখা উপন্যাস অমরাবতী ভালোবাসা” থেকে উদ্ধৃত কিছু অংশ ||