আন্তর্জাতিক ডেক্স : ২০২১ সালে ভারতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতে। অতিবৃষ্টিজনিত বন্যা, ধস প্রভৃতির থেকেও বেশি মানুষ মারা গেছে বাজ পড়ার কারণে। ভারতের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী, অতিবৃষ্টির কারণে মৃত্যু হয়েছে ৭৫৯ জনের। সেখানে বজ্রপাতে মারা গেছে ৭৮৭ জন।
ভারতে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা কমানোর জন্য আবহাওয়া দপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সক্রিয় হয়েছে। পাশাপাশি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে এই কাজে ব্যবহার করার চেষ্টাও হচ্ছে। বজ্রপাতের আগে সতর্ক করার জন্য আবহাওয়া দপ্তর ‘দামিনী’ নামে একটি বিশেষ অ্যাপ চালু করেছে। ওই অ্যাপ ৪০ মিনিট আগে কোন কোন এলাকায় বাজ পড়তে পারে, তার ইঙ্গিত দেয়।
ভারতের সরকারি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, এসব ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে বজ্রপাতে মৃত্যু কিছুটা কমেছে। ২০২০ সালে বজ্রপাতে দেশটিতে ১ হাজার ৯৬৭ জন মারা গিয়েছিলেন।
সম্প্রতি ভারত সরকারের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, বজ্রপাতে ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গে ৫৮, উড়িষ্যায় ২১৩, মধ্যপ্রদেশে ১৫৬, বিহারে ৮৯ ও মহারাষ্ট্রে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্য রাজ্য অর্থাৎ ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানে বজ্রপাতের কারণে যথাক্রমে মৃত্যু হয়েছে ৫৪, ৪৯ ও ৪৮ জনের।
এছাড়া ২০২১ সালে মোট ৫টি ঘূর্ণিঝড় হয় ভারতে। ঘূর্ণিঝড়ের জেরে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৭২ জনের। পাঁচটি ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে সব চেয়ে বেশি প্রাণহানির কারণ হয়েছিল ‘তাওকতে’। দেশটির গুজরাত, মহারাষ্ট্র, কেরালা প্রভৃতি রাজ্য মিলিয়ে তাওকতের দাপটে মারা গেছে ১৪৪ জন। এরপর রয়েছে ঘুর্ণিঝড় ‘যশ’, পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের কাছে উড়িষ্যায় যশের কারণে মৃত্যু হয়েছিল ৯ জনের। তাদের মৃত্যু হয় উড়িষ্যা, ঝাড়খণ্ড, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গে।
এছাড়া অতিবৃষ্টির কারণে ২০২১ সালে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে মহারাষ্ট্রে। রাজ্যটিতে ৩৪০ জন মারা যাওয়ার ঘটনা সামনে আসে। একই দুর্যোগে উত্তরাখণ্ড ১৪৩ জন, হিমাচল প্রদেশ ৫৫ জন, কেরালা ও অন্ধ্রপ্রদেশে যথাক্রমে মারা গেছে ৪৩ ও ৪৬ জন।
পশ্চিমবঙ্গে অতিবৃষ্টির কারণে মৃতের সংখ্যা কতজন, তা এই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়নি। কারণ রাজ্য সরকার এ বিষয়ে কোনো তথ্য কেন্দ্রীয় সরকারকে দেয়নি বলে জানা যায়। তবে রিপোর্টের সঙ্গে দেওয়া গ্রাফে ধারণা করা যায়, বাংলায় ১০ জনের আশপাশে মৃত্যু হয়েছে।