Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | সৌম্য-সাব্বির ইমরুল-তাসকিনরা যে কারণে বাদ পড়লেন

সৌম্য-সাব্বির ইমরুল-তাসকিনরা যে কারণে বাদ পড়লেন

6-criketer-20180418205808

নিউজ ডেক্স : মাঝে গুঞ্জন শোনা গেল ২০১৮-২০১৯’এ আবার বেতন বাড়ছে ক্রিকেটারদের। আগের বছরের মত ঢালাওভাবে শতভাগ কিংবা গড়পড়তা ৭৫ শতাংশ না হলেও আনুপাতিক হারে বেতন বাড়ানো হতে পারে। এমন কথাই শোন যাচ্ছিলো; কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় রাতারাতি পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। শেষ পর্যন্ত এক টাকাও বেতন বাড়ানো হয়নি ক্রিকেটারদের।

উল্টো বোর্ডের সাথে বেতনভুক্ত ক্রিকেটারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে ফেলা হয়েছে। শিক্ষানবিশ কোটায় দু’জনসহ আগের বছর বেতনভুক্ত ক্রিকেটার ছিলেন ১৬ জন। এবার সেখান থেকে ছয়জনকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে।

দুই বাঁ-হাতি ওপেনার সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, দুই মিডল অর্ডার সাব্বির রহমান রুম্মন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত আর দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও কামরুল ইসলাম রাব্বি বাদ পড়েছেন। তাদেরকে নতুন চুক্তির আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। শুধু ছয়জনকে ছেঁটে ফেলাই নয়, প্রতি বছর একজন হলেও নতুন করে চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারের তালিকায় যুক্ত হন। এবার সে ধারারও ব্যাত্যয় ঘটেছে। এবার কোন ক্যাটাগরি কিংবা শিক্ষানবিশ হিসেবেও নতুন কোন ক্রিকেটারের সাথে চুক্তি করা হয়নি।

পুরনোদের মধ্য থেকে ১০ জনকে চুক্তির আওতায় আনা হয়েছে। হঠাৎ একসঙ্গে ছয় ক্রিকেটারেরর চুক্তি থেকে বাদ পড়া নিয়ে রীতিমত চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে ক্রিকেটপাড়ায়। নানা প্রশ্ন উঁকি-ঝুকিও দিচ্ছে।

কেউ কেউ বলছেন, বোর্ড কৃচ্ছতা সাধন করছে। তাই ক্রিকেটারদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর বদলে উল্টো চুক্তিভুক্ত ক্রিকেটারের সংখ্যা কমিয়ে ফেলা হয়েছে। যাতে মাস পিছু অর্থ কম খরচ হয়। আবার এমনও শোনা যাচ্ছে সাব্বির রহমান রুম্মন তার অখেলোয়াড়োচিত আচরণ এবং শৃঙ্খলঅ ভঙ্গের কারণে চুক্তির বাইরে চলে গেছেন।

কেন ছয়জন জাতীয় ক্রিকেটারকে একসঙ্গে চুক্তির বাইরে ঠেলে দেয়া হলো? বোর্ড পরিচালকদের নিয়ে সভা শেষে আজ সন্ধ্যায় মিডিয়ার সাথে কথা বলতে গিয়ে এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও। তিনি অবশ্য এক কথাতেই সব পাড়ি দিয়েছেন।

সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস,মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, সাব্বির রহমান রুম্মন, তাসকিন আহমেদ আর কামরুল ইসলাম রাব্বির বাদ পড়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘পারফরমেন্সই ছিল একমাত্র বিবেচ্য। পারফরমেন্সের কারণে তারা চুক্তি থেকে বাদ পড়েছে।’

বিসিবি সভাপতি বোর্ড সভা শেষে মিডিয়ার সাথে আলাপকালে শুধু ওই একটি ব্যাখ্যা দিলেও ভিতরের খবর হলো, এবার বোর্ড আগের মত ঢালাওভাবে চুক্তি না করে মূলতঃ টেস্ট এবং ওয়ানডে দলের ক্রিকেটারদের অগ্রাধিকার দিয়ে চুক্তি করেছে।

আর সে কারণেই ক্রিকেট অপারেশন্সকে আগেই চুক্তিভুক্ত ক্রিকেটারের সংখ্যা ১৬ থেকে কমিয়ে ১২ কিংবা ১০-এ নামিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। বোর্ডের একটি উচ্চ পর্যায়ের অতি নির্ভরযোগ্য সূত্রে পাওয়া খবর হলো, বোর্ড এবার নীতিগতভাবে আগে-ভাগেই ঠিক করে রেখেছিল, যারা টেস্ট এবং ওয়ানডে দলে নিয়মিত সদস্য- তারাই চুক্তিতে অগ্রাধিকার পাবেন। তাদের রেখেই আসলে চুক্তিভুক্ত ক্রিকেটারের তালিকা প্রনয়ণ করবেন।

যে ১০ জনকে চুক্তির আওতায় রাখা হয়েছে, তাদের নাম শুনলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। তারা হলেন, মাশরাফি, তামিম, মুশফিক, সাকিব, মাহমুদউল্লাহ, মুমিনুল, মেহেদি হাসান মিরাজ, মোস্তাফিজ, রুবেল ও তাইজুল।

খুব ভাল করে লক্ষ্য করুন, এর মধ্যে তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিক, মোস্তাফিজ- এই পাঁচজন এখন তিন ফরম্যাটের দলেই নিয়মিত। গত প্রায় এক বছর তারা টেস্ট, ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টিতে নিয়মিত খেলেছেন। আগামী এক বছরও তারা তিন ফরম্যাটের দলে থাকবেন- এমনটাই ভাবা হয়েছে।

এর সঙ্গে অফ স্পিনার মিরাজ এবং পেসার রুবেল হোসেনও তিন ফরম্যাটের অন্তত দুই ফরম্যাটে প্রায় নিয়মিত সুযোগ পাচ্ছেন। আর ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি একদিনের ফরম্যাটে অটোমেটিক ও এক নম্বর চয়েজ। আর বাঁ-হাতি টপ অর্ডার মুমিনুল ও বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল টেস্ট একাদশের প্রায় অপরিহার্য্য সদস্য। মুমিনুল টেস্টের স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে তিন নম্বরে নিয়মিতই ব্যাট করছেন। আর সাকিব আল হাসানের সাথে আরেক বাঁ-হাতি হিসেবে তাইজুলও টেস্ট দলে নিয়মিত। তাই তাদেরকে বিবেচনায় আনা হয়েছে।

আর যে ছয়জনকে বাদ দেয়া হয়েছে, তার মধ্যে ইমরুল কায়েস শুধু টেস্ট খেলেছেন। সেখানেও তার অবস্থান নিয়মিত নয়। সৌম্য সরকারের অবস্থাও তথৈবচ। চন্ডিকা হাথুরুসিংহের ফাস্ট চয়েজ হিসেবে মাঝে কিছুদিন সৌম্য আর সাব্বির টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি টোয়েন্টি- তিন ফরম্যাটে সুযোগ পেলেও হাথুরু চলে যাওয়ার পর তাদের দু’জনার তিন ফরম্যাটে খেলার পথ প্রায় রুদ্ধ হয়ে গেছে।

এই দুই ফ্রি স্টোক মেকারকে মূলতঃ একদিনের সীমিত ওভারের ফরম্যাটে বিবেচনা করা হয়েছে। সেখানেও দু’জনার কারোরই সাম্প্রতিক ফর্ম তেমন ভালো নয়। আর ফাস্ট বোলার তাসকিনেরও দিনকাল মোটেই ভাল কাটছে না। কোন ফরম্যাটেই নিজেকে মেলে ধরতে পারছেন না তিনি। এছাড়া কামরুল ইসলাম রাব্বি তো গত বছরের প্রায় পুরোটা সময়ই দলের বাইরে।

কাজেই তাদেরকে বাইরে রেখে, যারা টেস্ট এবং ওয়ানডেতে প্রায় অপরিহার্য্য সদস্য তাদেরকেই অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!