Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | শাহ আমানত সেতুতে বাড়ানো হচ্ছে টোল বুথ, কমবে যানজট

শাহ আমানত সেতুতে বাড়ানো হচ্ছে টোল বুথ, কমবে যানজট

নিউজ ডেক্স: কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর টোল প্লাজায় যানজট নিরসন এবং যাতায়াত সহজ করতে ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে দুইপাশে দুই লেইনের বর্ধিতকরণের কাজ শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। এ দুই লেইন চালু হলে যানজট থেকে মুক্তি পাবে বলে আশা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষদের।

এ সেতুর টোল প্লাজায় প্রায় প্রতিদিনই লেগে থাকছে যানজট। যা টোল প্লাজা ছাড়িয়ে কখনো মইজ্জার টেক, আবার কখনো বাকলিয়া পর্যন্ত চলে আসে।
এতে চরম বিপাকে পড়ছেন এ সড়কে যাতায়াতকারীরা। এর জন্য অটোমেশন প্রক্রিয়ায় জটিলতা, অনিবন্ধিত অবৈধ যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি, ভাংতি টাকা ফেরতে সময়ক্ষেপণ ও অদক্ষ শ্রমিক দিয়ে টোল প্লাজা পরিচালনাকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, দিন যত গড়াচ্ছে কর্ণফুলীর শাহ আমানত সেতুর টোল প্লাজায় যানজট তীব্রতর হচ্ছে।  সম্প্রতি দীর্ঘক্ষণ যানজটে আটকে থাকার কারণে রাগ ও ক্ষোভে টোল প্লাজার এক কর্মকর্তাকে মারধর করারও ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া প্রায় প্রতিদিন দীর্ঘ যানজটের কারণে টোল প্লাজায় কর্মরত শ্রমিক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে যাত্রী ও গাড়ি চালকেরা বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ছেন।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) এই প্রকল্পের অধীনে কর্ণফুলীর মইজ্জ্যারটেক টোল প্লাজা সংলগ্ন মহাসড়কের অ্যাপ্রোচ রোডে নতুন আরসিসি পেভমেন্ট রোড এবং ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট নির্মাণের কাজ শুরু করতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেওয়ার পর দুই সপ্তাহ থেকে কাজ শুরু হয় বলে জানিয়েছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা।

সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, টোল প্লাজা এলাকায় দুই পাশে ৪টি করে ৮টি বুথ (চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের দিকে যেতে ৪টি বুথ এবং চট্টগ্রাম শহরে আসার দিকে ৪টি বুথ) রয়েছে। এই দুই পাশে আরও ১টি করে করে দুটি লেইন বাড়ানোর কাজ চলছে।

নতুন দুটি টোল লেইন হলে ১০টিতে দাঁড়াবে টোল বুথ। বর্তমানে আসা-যাওয়ায় চারটি করে মোট আটটি বুথে টোল আদায় করা হয়। নতুন টোল লেইন দুটি নির্মাণ শেষে ব্যবহার শুরু হলে টোল প্লাজা যানজটমুক্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলীরা।

কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর টোল প্লাজার ইজারাদার প্রতিষ্ঠান সেলভ্যান জেভির প্রকল্প ব্যবস্থাপক সুমন ঘোষ বলেন, বর্তমানে শাহ আমানত সেতু দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২৭ হাজারেরও বেশি গাড়ি চলাচল করছে। ৮টি লেইন দিয়ে টোল আদায় করা হচ্ছে, কিন্তু বিশেষ ছুটির দিনে (বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার) চাপ বেড়ে যায়। তখন যানজটের সৃষ্টি হয়। আমরা বিষয়টি সড়ক ও জনপথ বিভাগকে বলেছি। তারা দুই পাশে আরও দুটি লেইন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে। টোল আদায়ে বুথের সংখ্যা দুইপাশে দুটি বেড়ে ১০টি হলে তখন যানজট তেমন থাকবে না।

তিনি বলেন, অটোরিকশার আধিক্য, চালকদের শৃঙ্খলা না মানা, অতিরিক্ত গাড়ির চাপের কারণে ইদানীং যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক গাড়ির নম্বর প্লেট ঢেকে রাখা হয়। বিভিন্ন পরিচয়ে টোল দিতে না চাওয়া, বড় টাকার নোট দেওয়া, ছোট গাড়ি বেশি, সন্ধ্যা হলে কারখানার ছুটি; এসব কারণে এই  যানজট বেড়ে যায়। যার কারণে আরও দুই লেইন বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ দুই লেইন চালু হলে যানজট নিরসন হবে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ চট্টগ্রামের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নিজাম বলেন, কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর টোল প্লাজা এলাকায় যানজট নিরসনে বিদ্যমান টোল প্লাজার দুইপাশে আরও দুই লেইন বাড়ানো হচ্ছে। কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এ কাজ শেষ হলে আশা করি যানজট থাকবে না।

কাজটি দুটি ধাপে সম্পন্ন হবে বেস টাইপ–১, ডেন্স বিটুমিনাস সার্ফেসিং–বেস কোর্স এবং ডেন্স বিটুমিনাস সার্ফেসিং–ওয়্যারিং কোর্স। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে। এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৪ কোটি ৯০ লাখ ৫৯ হাজার ২৫৯ টাকা ৫৬ পয়সা। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, কাজটি সম্পন্ন করতে ১৮০ দিনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। নোটিশ জারির তারিখ থেকে সময় কার্যকর হবে।

২০১০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর শাহ আমানত সেতু চালু হয়। প্রথমে টোল প্লাজায় তিনটি করে উভয় দিকে ছয়টি লেন নিয়ে সেতুর টোল আদায় কার্যক্রম চালু হয়। সেতুর ওপর যানবাহনের চাপ অত্যধিক হওয়ার কারণে তিন বছর আগে টোল প্লাজার দুই পাশের অযান্ত্রিক যান চলাচলের জন্য রাখা ফ্রি টোল লেন দুটির পরিসর বাড়িয়ে ছোট যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে টোল বুথ করা হয়। এরপর থেকে দুপাশে চারটি করে আটটি টোল বুথ রয়েছে। তারপরও প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটের কারণে যাত্রীদের সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়তে হয়। -বাংলানিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!