Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | শতভাগ ব্যয় সরকারি তহবিল থেকে

শতভাগ ব্যয় সরকারি তহবিল থেকে

নিউজ ডেক্স : চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) ‘বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের শতভাগ ব্যয় হবে সরকারি তহবিল থেকে। গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ১ হাজার ৩৬২ কোটি ৬২ লাখ টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ব্যাপারে অনুমোদন দিয়েছে।

এর আগে এই প্রকল্পের ২৫ শতাংশ অর্থ সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল। গতকালের অনুমোদনের ফলে এখন খালটি পুরোপুরি সরকারি তহবিলের অর্থায়নে খনন করা হবে। এ নিয়ে চসিকের দ্বিতীয় কোনো বড় প্রকল্প ম্যাচিং ফান্ড (উন্নয়ন প্রকল্পের মোট ব্যয়ের যে অংশ সিটি কর্পোরেশনকে দিতে হয়) ছাড়াই অনুমোদন পেল। এ প্রকল্পে ২৫ শতাংশ অর্থায়ন করতে হলে চসিকের প্রায় সাড়ে ৩শ কোটি টাকা প্রয়োজন হতো, যা এখন আর লাগবে না। এর আগে নগরীর সড়ক উন্নয়ন-সমপ্রসারণ ও নানা অবকাঠামো নির্মাণে প্রায় ২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকার প্রকল্পে ম্যাচিং ফান্ড মওকুফ করা হয়েছিল।

এদিকে দ্বিতীয় সংশোধনীতে প্রকল্পের ব্যয় ও মেয়াদ আরেক দফা বেড়েছে। এ দফায় ৮ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে প্রকল্প ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা। চার বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।

২০১৪ সালের জুনে একনেক সভায় বারইপাড়া খাল খনন প্রকল্প অনুমোদন পায়। তখন ঠিক হয়েছিল ৩২৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন বছরের মধ্যে এ কাজ শেষ করা হবে। কিন্তু সরকারি অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় এবং জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতায় প্রথম মেয়াদে প্রকল্পের কোনো কাজ করতে পারেনি চসিক।

এরপর ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে প্রকল্পটি পুনর্বিবেচনা করে আবার অনুমোদন দেয় একনেক। সংশোধনে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। ব্যয় বেড়ে হয় ১ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা। নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে প্রকল্পটির অধীনে বহদ্দারহাটের বাড়ইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত ৬৫ ফুট প্রস্থ এবং ২ দশমিক ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ খাল খনন করা হবে। পাশাপাশি খালের উভয় পাশে ২০ ফুট প্রস্থ ৫ দশমিক ৫ কিলোমিটার সড়ক, ৬ ফুট ফুটপাত, ৫ দশমিক ৮ কিলোমিটার রিটেইনিং ওয়াল এবং ৯টি সেতু নির্মাণ করা হবে। খালটির জন্য প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ সিটি কর্পোরেশন ইতোমধ্যে ৯১১ কোটি টাকা দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনকে।

ইতোপূর্বে একবার খাল খননের কাজ উদ্বোধন করা হয়েছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। দ্বিতীয় দফায় গত বছরের ২৭ নভেম্বর খাল খননের কাজ পুনরায় উদ্বোধন করা হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম খনন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। সরকারি তহবিল থেকে পুরো টাকার সংস্থান হওয়ায় এখন খাল খননের কাজে গতি আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে সভায় যোগ দেন। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, তথ্য ও সমপ্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী সভার কার্যক্রমে অংশ নেন।

চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বাড়ইপাড়া খাল খননের ২য় সংশোধিত প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, আগে প্রকল্পটির জন্য ২৫ শতাংশ অর্থ সিটি কর্পোরেশনের তহবিল থেকে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল। সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদনে শতভাগ সরকারি বরাদ্দ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খাল খনন শেষ হলে শুলকবহর, চান্দগাঁও, নাসিরাবাদ, মোহরা, ষোলশহর, বহদ্দারহাট, বাকলিয়া ও চাক্তাই সংলগ্ন এলাকার ১০ লাখ মানুষ জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে। -আজাদী প্রতিবেদন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!