এলনিউজ২৪ডটকম : লোহাগাড়ার আধুনগর থেকে বিপন্ন প্রজাতির রামগাদি বা বড় গুইসাপ উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) সকালে ইউনিয়নের লোহার দিঘীর পাড়স্থ আখতারিয়া পাড়া থেকে এই গুইসাপটি উদ্ধার করা হয়। যার ইংরেজি নাম রিং লিজার্ড।
পর্যবেক্ষণ শেষে একইদিন বিকেলে চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য বনাঞ্চলে প্রায় ৯ কেজি ওজনের গুইসাপটি অবমুক্ত করা হয়েছে বলে জানান অভয়ারণ্য রেঞ্জ কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন।
তিনি জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল মান্নানের তথ্যের ভিত্তিতে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য রেঞ্জের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে গুইসাপটি উদ্ধার করে। মূলত: বনজঙ্গল ও ঝোপঝাড়ে গুইসাপের বসবাস। বড় গুইসাপ ছোটসাপ, ব্যাঙ, ইদুর, মাছ, কেঁচো, শামুক, কাঁকড়া, হাঁস-মুরগির ছানা ও ডিম খেয়ে জীবিক নির্বাহ করে। ধারণা করা হচ্ছে হাঁস-মুরগির ছানা বা ডিম খাওয়ার জন্য লোকালয়ে হানা দিয়েছে।
তিনি আরো জানান, গুইসাপ বিষধর সাপ ও ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে ফসলের ফলন বৃদ্ধি করে। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় গুইসাপের ভূমিকা অতূলনীয়। এরা খাদ্যশৃঙ্খলে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এদের সংখ্যা হ্রাস পেলে প্রধান খাদ্য পোকামাকড়রের সংখ্যা ও ইদুরের উৎপাত বেড়ে যাবে, অনুকূল পরিবেশ হবে বিষাক্ত সাপের। যা পরিবেশ ও মানুষের জন্য মোটেও সুখকর নয়।
ফসলের জমিতে এখন পোকামাকড় দমনের জন্য উচ্চমাত্রার কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। ফলে অনেক উপকারী অণুজীব ধ্বংস ও মাটির গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়। ফসলে সৃষ্টি হয় নি¤œমাত্রার বিষক্রিয়া যা মানুষকে ধীরে ধীরে ক্ষতি করে। অন্যদিকে গুইসাপ এসব কীটনাশকের চেয়ে অনেক বেশি কাজ করে কোনোরূপ ক্ষতি ছাড়া। এরা মৃত জীবজন্তু খেয়ে পরিবেশকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখে। বড় গুইসাপ বা রামগাদি দেখতে গাঢ় বাদামি বা কালচে, তাতে হলুদ রঙের রিং বিদ্যমান। পা ও নখ লম্বাটে। লেজ চ্যাপ্টা ও শিরযুক্ত। এরা দ্রুত গাছে উঠতে পারে। সাঁতরে খাল-বিল-পুকুর সহজেই পাড়ি দিতে পারে।