নিউজ ডেক্স : নির্দিষ্ট সময়ে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ না নেওয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সংসদীয় আসন বগুড়া-৬ আসনকে শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত ৮ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ৭ জন শপথ গ্রহণ করলেও শপথ নেননি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণ করার শেষ দিন ছিল গতকাল। ফলে নিয়ম অনুযায়ী মির্জা ফখরুলের সদস্যপদ বাতিল করে তার নির্বাচনি আসন বগুড়া-৪ শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে।
সংবিধানের ৬৭ (১) এর ‘ক’ অনুচ্ছেদে বলা আছে কোনো নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে শপথ নিতে না পারলে ওই সংসদ সদস্যের আসন শূন্য হবে। তবে এই ৯০ দিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে স্পিকার যথার্থ কারণে তা বাড়াতে পারবেন।
কিন্তু শপথ গ্রহণের জন্য সময় চেয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ওই সময়ের মধ্যে কোনো চিঠি দেননি। গতকাল সোমবার ছিলো শেষ ওই সময়সীমার শেষ দিন। একাদশ সংসদের কার্যক্রম গত ২৯ জানুয়ারি শুরু হওয়ায় ৯০ দিনের সেই সময়সীমা সোমবার পেরিয়ে গেছে।
মঙ্গলবার বিকালে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীও জানিয়েছেন, সোমবার পর্যন্ত তার হাতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কোনো চিঠি পৌঁছায়নি।
প্রসঙ্গত, ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে বিজয়ী ছয়জনের মধ্যে ফখরুল বাদে বাকি পাঁচজন শপথ নিয়েছেন। শেষ দিনে বিএনপির চারজন সংসদ সদস্য শপথ নেন, তার তিন দিন আগে নেন অন্যজন।
নানা নাটকীয়তার মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেওয়ার পর ফখরুল দুটি আসনে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছিলেন। নিজের জেলা ঠাকুরগাঁও-১ আসনে তিনি হারলেও বিজয়ী হন দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার আসন বগুড়া-৬ এ।
৩০ ডিসেম্বরের ওই নির্বাচনে ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট পুনর্নির্বাচনের দাবি তোলে। সেই সঙ্গে ঘোষণা দেয়, তাদের জোট থেকে বিজয়ীরা শপথ নেবেন না।
কিন্তু কিছু দিন পর ঐক্যফ্রন্ট থেকে বিজয়ী গণফোরামের দুজন শপথ নিয়ে ফেলেন; এরপর গত ২৫ এপ্রিল বিএনপির একজন শপথ নেওয়ার পরও আগের সিদ্ধান্তে অটল থাকার কথাই জানিয়েছিল বিএনপি।
কিন্তু ২৯ এপ্রিল চারজন শপথ নেওয়ার পর ফখরুল সংবাদ সম্মেলন করে জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ওই চারজন শপথ নিয়েছেন।
তার শপথের বিষয়ে সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট কিছু বলেননি ফখরুল; তবে একদিন বাদে জানান, তিনি সংসদে যাচ্ছেন না।
সরকারি কলেজে শিক্ষকতার চাকরি ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দিয়ে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন।
২০০১ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ফখরুল; খালেদা জিয়ার সরকারে প্রতিমন্ত্রীও হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে হারেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি।
এবারের নির্বাচনে বগুড়া-৬ আসনে ধানের শীষ প্রতীকের ফখরুলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। ওই আসনে মহাজোট থেকে প্রার্থী ছিলেন জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমর।