নিউজ ডেক্স : রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রত্যক্ষদর্শী প্রধান সাক্ষী থেকে আজ বুধবার আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়ান তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। তাকে রিমান্ডে নিতে পুলিশের করা আবেদনের শুনানির পর আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিন্নিকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়েছিলেন।
আজ বেলা সোয় তিনটার দিকে পুলিশ মিন্নিকে বরগুনার বিচারিক হাকিম মো. সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে হাজির করে। এ সময় আদালতের চারপাশে কড়া পুলিশ প্রহরা ছিল। আদালতের বাইরে মিন্নির বাবা-মা ও আত্মীয়-স্বজনেরা উপস্থিত থাকলেও কারো সঙ্গে তাঁকে কথা বলেত দেওয়া হয়নি। আদালতের কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর বেলা পৌনে চারটার দিকে মিন্নিকে আদালত থেকে বের করে কড়া পাহারায় পুলিশ লাইনসে নেওয়া হয়।

পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের কঠোর নজরদারির মধ্য দিয়ে মিন্নিকে আদালতে হাজির করার পর রষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সনজিব দাস তদন্তকারীর পক্ষে মিন্নির ৭ দিনের রিমান্ড চান। তখন মিন্নির পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। স্থানীয় এমপিপুত্র অ্যাডভোকেট সুনাম দেবনাথ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আগেই স্ট্যাটাস দিয়ে বলেছিলেন, খুনিদের পক্ষে আইনজীবীরা মামলা চালাবেন না।
বিচারক সিরাজুল ইসলাম গাজি কাঠগড়ায় দাঁড়ানো মিন্নির কিছু বলার আছে কি না জানতে চান। তখন মিন্নি আদালতের কাছে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। একইসঙ্গে বলেন, আমি আমার স্বামী রিফাত হত্যার বিচার চাই। এসময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির মামলার ১২ নং আসামি হৃদয়ের জবানবন্দি পেশ করেন। এতে জানা যায়, আসামি হৃদয় রিফাত হত্যার ঘটনায় মিন্নি জড়িত মর্মে জবানবন্দি দিয়েছিল। তদন্ত কর্মকর্তা এছাড়াও ঘটনার আগে নয়ন বন্ড ও রিফাতসহ অন্য আসামিদের সঙ্গে মুঠোফোনে মিন্নির কথোকথনের ‘কল ডিটেইলস’ পেশ করেন। এসব ব্যপারে মিন্নির কাছে আদালত জানতে চাইলে তিনি তখন নীরব ছিলেন। পরে বিচারক তাকে ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
রিমান্ড শুনানির সময় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সনজিব দাস উপস্থিত ছিলেন। তিনি শুনানির বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে বর্ণনা করেন। সনজিব দাস বলেন, রিফাত হত্যা মামলায় আইনজীবীদের কেউ আসামিদের পক্ষে নিয়োজিত না হওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে মিন্নির পক্ষে আদালতে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। তবে রিমান্ড শুনানির সময় বিচারক মিন্নিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়েছেন। মিন্নির বক্তব্যে আদালত সন্তষ্ট ছিলেন না বলেই মামলায় তার পাঁচ দিনের পুলিশি রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
আগের দিন মঙ্গলবার সকালে মিন্নিকে তার বাড়ি থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ লাইনে ডেকে আনা হয়। প্রায় ১২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর রাত নটায় তাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। মিন্নি রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১নং সাক্ষী। ঘটনার দিন স্বামীর সঙ্গে তিনি কলেজে গিয়েছিলেন। কলেজ থেকে ফেরার পথে নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজি রামদা দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। পরে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিফাতের মৃত্যু ঘটে।