আন্তর্জাতিক ডেক্স : কেন্দ্রীয় মালির একটি গ্রামে ডোগন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় একশ জনের মতো নিহত হয়েছে। ওই হামলা থেকে গ্রামটির মাত্র ৫০ জন মানুষ রক্ষা পেয়েছেন।
হামলার পর এখনও ১৯ জন মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। আরও সহিংসতা ঠেকাতে ওই অঞ্চলে বিমান সহায়তা পাঠিয়েছে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী।
কর্তৃপক্ষ বলছে, মোবতি এলাকায় সানগা শহরের কাছে সোবামে দা গ্রামে ওই হামলার ঘটনা ঘটেছে। ওই গ্রামটিতে মাত্র ৩শ জনের মতো বাসিন্দা বসবাস করত। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এখন পর্যন্ত ৯৫ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। এদের অনেকেরই শরীর পোড়া ছিল। এখনও নিহতদের খোঁজে কাজ চলছে।
মালিতে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর কিছু হয়েছে গোষ্ঠীগত বিরোধের কারণে আবার কিছু ছিল জিহাদি গ্রুপের হামলা।
ডোগন শিকারি এবং সেমি নোমাডিক ফুলানি হার্ডার মধ্যে সংঘর্ষ সেখানে নৈমিত্তিক ঘটনা। মালির সরকার বলছে, সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীরা এই হামলা চালিয়েছে এবং এখনও ১৯ জন নিখোঁজ রয়েছে।
আমাদো টোগো নামের এক ব্যক্তি ওই হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে গেছেন। তিনি সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, ৫০ জনের মতো ভারী অস্ত্রসজ্জিত ব্যক্তি মোটরবাইক এবং পিকআপে করে আসে। তারা প্রথমে পুরো গ্রামটি ঘিরে ফেলে এবং হামলা করে। যারাই পালানোর চেষ্টা করেছে তাদেরই হত্যা করা হয়েছে।
আমাদো টোগো আরও বলেন, এই হামলা থেকে কেউ রক্ষা পায়নি। নারী, শিশু, বৃদ্ধ-কেউ না। এদিকে কোন গ্রুপ এখনও পর্যন্ত ওই হামলার দায় স্বীকার করেনি।
ওই অঞ্চলে ডোগন এবং ফুলানি বাসিন্দাদের মধ্যে বহুদিনের দ্বন্দ্ব রয়েছে। এর মূল কারণ ডোগনরা প্রথাগত পদ্ধতিতে চাষবাস করে জীবিকা নির্বাহ করে।
অন্যদিকে, পশ্চিম আফ্রিকা থেকে আসা ফুলানি গোত্রের লোকেরা কিছুটা যাযাবর জীবনযাপন করে। এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ অনেক পুরোনো।
তবে বিবিসি বলছে, ২০১২ সালে ওই অঞ্চলে ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠীর উত্থানের পর থেকে সংঘাত ও হামলার ঘটনা বেড়ে চলেছে। ফুলানিরা ওই অঞ্চলে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী, সে কারণে তাদের সঙ্গে ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠীর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন অভিযোগ করা হয়।