ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | বিএনপি পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে নাকি নিচ দিয়ে যাবে?

বিএনপি পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে নাকি নিচ দিয়ে যাবে?

নিউজ ডেক্স : বিএনপি এবং টিআইবিসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেও বর্তমানে সেতু দৃশ্যমান হওয়ায় তাদের প্রতিক্রিয়া না থাকার সমালোচনা করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

শনিবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিন্টো রোডে সরকারি বাসভবনে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আলাপকালে এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।

২০১৪ সালে নির্মাণযজ্ঞ শুরুর পর বিজয়ের মাস ১০ ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুতে সবশেষ ও ৪১তম স্প্যান বসানোর মাধ্যমে দৃশ্যমান হয় প্রমত্তা পদ্মা নদীর উপর মূল সেতুর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। তবে যান চলাচলে আরও কিছুটা সময় লাগবে।

পদ্মা সেতু নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি নেতারা সমালোচনা করেছেন, এখন তাদের কোনো কথা শোনা যাচ্ছে না— এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, শুধু বিএনপি নয়, যখন পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং নির্মাণের কাজে হাত দেয় তখন আমরা দেখতে পেয়েছি এটি নিয়ে নানা প্রশ্ন তোলা হয়েছে। দুর্নীতির প্রসঙ্গ আনা হয়েছে, এক টাকাও ছাড় হয়নি। তারপরও বলা হয়েছে দুর্নীতি হয়েছে। যে বিশ্ব ব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপন করেছিল সেই বিশ্ব ব্যাংক কানাডার আদালতে হেরে গেছে। তাদের অভিযোগ যে অসত্য সেটি কানাডার আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। সেই বিশ্ব ব্যাংক পরে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন করার জন্য আবেদন করেছিল, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের আর বিশ্ব ব্যাংকের টাকার দরকার নেই। আমরা নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মা সেতু করব।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, সেই সময় বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে সুর মিলিয়ে আরো অনেকেই, টিআইবি বড় বড় সংবাদ সম্মেলন করেছিল। টিআইবির যারা কর্মকর্তা, যারা নেতৃত্বে আছেন তারা নানা ধরনের সভা-সেমিনার-সিম্পোজিয়াম করে মোটামুটি জনগণকে যতটুকু বিভ্রান্ত করা তাদের ক্যাপাসিটিতে সম্ভব ছিল সবকিছুই করার চেষ্টা করেছে। আরও কিছু প্রতিষ্ঠান যারা সমসময় বাংলাদেশের কোনো একটা কিছু ভুল হলে বা ভুলের গন্ধ পেলে কথা বলে তারাও নানা ধরনের কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে যখন পদ্মার দুই পাড় সংযুক্ত হয়ে গেল সেতুর মাধ্যমে অর্থাৎ তখন এদের মুখে কোনো বক্তব্য নেই। আজকে তৃতীয় দিন তাদের মধ্যে কোনো বক্তব্য নেই। এ নিয়ে তাদের মুখে কোনো ধরনের কথা শুনতে পাচ্ছি না। এতে মনে হচ্ছে পদ্মা সেতু হয়ে যাওয়াতে তারা লজ্জা পাচ্ছেন। তারা খুব আশাহত হয়েছেন বলে অনেকেই ধারণা করছেন। কারণ, দেশের একটু, সরকারের একটু ভুল দেখলে বা দেশের বিরুদ্ধে কোনো কথা যদি বিদেশিরা উচ্চারণ করে তাহলে যে আওয়াজে বিদেশিরা বলে তার চেয়ে দশগুণ আওয়াজে তারা কথা বলেন। কিন্তু দেশের এই অগ্রগতিতে তাদের কোনো কথা নেই। এতে জনগণ প্রশ্ন রাখছে— ওনারা কি দেশের কোনো মঙ্গল চান না?

‘আর বিএনপি? বিএনপি তো বলেছিল, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছিলেন— এই সরকার পদ্মা সেতু করতে পারবে না। আজকে পদ্মা সেতু হয়ে গেছে অর্থাৎ প্রায় সম্পন্ন। বিএনপি চেয়ারপারসনের সাথে সুর মিলিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও জোর গলায়, নানা বিশেষণ দিয়ে নানা কথাবার্তা যুক্ত করে তিনি এবং তার সহকর্মীরা আরও অনেক কথা বলেছেন। আজকে তৃতীয় দিন, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দুই পাড় সংযুক্ত হয়ে গেছে। তাদের মুখে কোনো কথা নেই। এতে মনে হয়েছে পদ্মা সেতু হয়ে যাওয়াতে বিএনপিও লজ্জা পেয়েছে!’

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে দেশের জিডিপি গ্রোথ ১ থেকে ১.৫ শতাংশ বাড়বে এবং এই সেতুর উপর দিয়ে সবাই চলাচল করতে পারবে। বিএনপি যেভাবে বলেছিল যে, পদ্মা সেতু করতে পারবে না এবং খালেদা জিয়া আরও যুক্ত করেছিলেন—  এই সেতুর উপর দিয়ে কেউ যাবেন না। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, তারা কি এই সেতুর উপর দিয়ে যাবেন না নিচ দিয়ে যাবেন? এটি হচ্ছে জনগণের প্রশ্ন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশে এত বড় একটি ঘটনা ঘটলো যেটি নিয়ে সমস্ত গণমাধ্যম প্রশংসায় পঞ্চমুখ, দেশের সমস্ত মানুষ আনন্দ-উল্লাসে উচ্ছ্বসিত; তখন এই গুটি কয়েক ব্যক্তিবর্গ, প্রতিষ্ঠান, বিএনপির মুখে উচ্ছ্বাস নাই। এতে প্রমাণিত হয় এরা কি দেশের ভালো চায় না? এটি মানুষের প্রশ্ন।

সড়কমন্ত্রী বলেছেন আগামী বছরের শেষ দিকে এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছেন ২০২২ সালের জুনে পদ্মা সেতু চালু হবে— এ নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখানে দুটো বিষয়। পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে গাড়ি চলা এবং ট্রেন চলা। আমি মনে করি সেতুমন্ত্রী যেটি বলেছেন সেটি সরকারের প্রচেষ্টা। আগামী বছরের শেষ নাগাদ যাতে পদ্মা সেতু ব্যবহার করতে পারি সেটিই সরকার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

পদ্মা সেতুর টোল নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য ছড়ানো নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে যারা নানা ধরনের বিরূপ প্রচারণায় যুক্ত ছিল, পদ্মা সেতুতে মাথা লাগবে বলে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছিল, যারা এই কাজগুলো করেছিল তারা এখন অপ্রাসঙ্গিকভাবে অসময়ে টোল প্রসঙ্গ এনেছেন। টোলের প্রসঙ্গ আসবে অনেক পরে যখন পদ্মা সেতুতে গাড়ি চলাচলের উপযোগী হবে। এখন এ প্রসঙ্গ অবান্তর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!