____জেসমিন সুলতানা চৌধুরী____
শোন মেয়েরা শোন –
তোমরা হলে মেয়ের জাত,
যদি তোমরা অবলাই থাকো
তাতেই মিলে ভাত,
যদি প্রতিবাদ করো তাতে যায় জাত।
দণ্ড দেয়ার দায়িত্ব
যাদের উপর অর্পিত
তারা করে না কর্ণপাত।
যদি নীরবে অশ্রু মুছে বিচারের আশায় করো মুণ্ডুপাত,
তাতে ও যায় জাত।
প্রতি মূহুর্তে
প্রতিটি পদক্ষেপে
তোমাকে জানানো হয়
এ সমাজ তোমার নয়।
এ সমাজ তাদের ,
যাদের আছে পরিচয়।
কেউ জানেনা ঐ পরিচয়ের আড়ালে
লুকানো পশুটা কতটা ভয়ংকর।
কেউ দেখেনা একেলা ঘরে
হিংস্র তান্ডব ঐ জানোয়ারের।
প্রতিবাদী তুমি নষ্টা,
প্রতিবাদী তুমি পতিতা ,
প্রতিবাদী তুমি বেইশ্যা ।
কে বানালো তোমাকে নষ্টা?
সে খবর যদি জানাও তবে তুমি ভ্রষ্টা ।
হাজারো কন্ঠে উঠবে সুর
তোমার পর্দা নেই,
সংকুচিত পরিধেয় বস্ত্র,
পরিবার দেয়নি তোমাকে শিক্ষার মন্ত্র।
যখন পশুরা হামলে পড়ে,
আঁচড় কেটে অচেনা করে,
ছিঁড়ে ছিঁড়ে টুকরো করে,
মুখমণ্ডল শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে,
রাতের আঁধারে বস্তা ভরে,
ফেলে রাখে রাস্তার ধারে,
বাতাসে বিশ্রী গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে,
কাক আর শকুনে খায় ঠুকরে ঠুকরে,
তবেই পাবে তুমি নারীর সম্মান।
হবে তুমি খবরের শিরোনাম ।
বাংলার আকাশে-বাতাসে, ভূমিতে-নদীতে
তোমার নামে রচিত হবে গীতি কবিতা,
উম্মোচিত হবে তোমার নামে ফলক,
থাকবে আরো নানান ঝলক।
ছড়িয়ে পড়বে দিকে দিকে তোমার ত্যাগের
বিভীষিকাময় স্মৃতি গুলোর দিনলিপি,
তোমার বেঁচে থাকার আকুতি,
শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা,
তোমার অসহায় পরিবারের আর্তচিৎকার।
একবিংশ শতাব্দীতে এসেও হায়েনার হাতে সঁপে দিয়ে প্রাণ,
নারী আজ ও অসহায় করে প্রমাণ।