নিউজ ডেক্স : হৃদরোগ বিভাগের জন্য একটি অত্যাধুনিক ইন্ট্রাভাসকুলার আলট্রাসাউন্ড সিস্টেম (আইভাস) মেশিন ক্রয়ে টেন্ডার পরবর্তী কার্যাদেশ দিয়েছিল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হার্টে রিং পরানোর প্রয়োজনীয়তা যাচাইয়ের পাশাপাশি সঠিকভাবে রিং বসলো কিনা, তা খুব সহজেই যাচাই করা যায় অত্যাধুনিক এ যন্ত্রে।
ঢাকার মের্সাস মেডি গ্রাফিক ট্রেডিং লি. নামের এক প্রতিষ্ঠান মেশিনটি ক্রয়ে কার্যাদেশ পায়। কার্যাদেশ প্রাপ্তির পর তারা মেশিনটি সরবরাহও করে। তবে শিপমেন্ট সংক্রান্ত জটিলতায় সার্ভে কমিটির পক্ষ থেকে মেশিনটি গ্রহণে আপত্তি আসে। সে–ই আপত্তিতে এক বছর ধরে বাক্স বন্দি প্রায় সোয়া দুই কোটি টাকার এ মেশিন। গত বছরের মে মাস থেকে হৃদরোগ বিভাগের ক্যাথল্যাব কক্ষে মেশিনটি পড়ে আছে। এ নিয়ে গত ১১ এপ্রিল ‘চমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগ: এক বছর ধরে বাক্সবন্দি সোয়া দুই কোটি টাকার মেশিন/প্রস্তুতকারী দেশ থেকে শিপমেন্ট না হওয়ায় অত্যাধুনিক মেশিনটি গ্রহণ করেনি সার্ভে কমিটি’ শিরোনামে একটি প্রধান প্রতিবেদন প্রকাশ করে দৈনিক আজাদী। ওই প্রতিবেদনে মেশিনটি বাক্স বন্দি থাকার তথ্য নিশ্চিত করে হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ডা. আশীষ দে জানান, প্রস্তুতকারী দেশ থেকে শিপমেন্ট না হওয়ায় সার্ভে কমিটি মেশিনটি গ্রহণে আপত্তি জানিয়েছিল। আপত্তি থাকায় বিধি মোতাবেক মেশিনটি গ্রহণের সুযোগ ছিল না। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানও মেশিনটি ফিরিয়ে নেয়নি। যার কারণে দীর্ঘ দিন ধরে মেশিনটি পড়ে আছে।
এদিকে, মেশিনটির বিষয়ে করণীয় জানতে মন্ত্রণালয়ে কয়েক দফা চিঠি দিয়েছে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ গত এপ্রিলেও বাক্সবন্দি মেশিনটির (আইভাস) বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু মেশিনটির বিষয়ে এখনো পর্যন্ত মন্ত্রণালয়ের কোন নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। এ তথ্য নিশ্চিত করে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, সার্ভে কমিটি যেহেতু কনভিন্সড না, সেহেতু মেশিনটি গ্রহণ করার সুযোগ আমাদের নেই। তাছাড়া যে অর্থবছরে মেশিনটি ক্রয়ের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছিল, সে অর্থ বছরের অবশিষ্ট অর্থ এর মাঝে মন্ত্রণালয়ে ফেরত চলে গেছে। অর্থাৎ মেশিনটি বাবদ যে বরাদ্দ ছিল, তা ফেরত গেছে। তাই চাইলেও এ মেশিন এখন হাসপাতালের পক্ষে কেনা সম্ভব না। মেশিনটির বিষয়ে এখন আমাদের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগও নেই। কেবল মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে পারে। তাই আমরা মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা চেয়েছিলাম। কিন্তু কোন নির্দেশনা এখনো পাওয়া যায়নি।
হৃদরোগ বিভাগের চিকিৎসকরা বলছেন, এই সময়ে একটি অত্যাধুনিক আইভাস মেশিন বিভাগের জন্য খুবই জরুরি। বিষয়টি বিভাগ থেকে হাসপাতাল প্রশাসনকে কয়েক দফায় জানানো হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে আইভাস মেশিন চেয়ে নতুন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছে হাসপাতাল প্রশাসন। চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসানের স্বাক্ষরে গত ২৮ মে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডাইরেক্টর (হসপিটাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্ট) বরাবর এ চিঠি দেয়া হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে হাসপাতাল পরিচালক বলেন, পড়ে থাকা মেশিনটির বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত আমরা নিতে পারছি না। কিন্তু হৃদরোগ বিভাগে অত্যাধুনিক একটি আইভাস মেশিন খুবই দরকার। যার কারণে আইভাস মেশিন চেয়ে আমরা নতুন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছি। -আজাদী প্রতিবেদন