
নিউজ ডেক্স : করোনা সারা দুনিয়ার মতো বাংলাদেশেও ছড়াচ্ছে দ্রুত। এ ভাইরাসের মহৌষধ হিসেবে আক্রান্ত শনাক্তকরণে দ্রুত পরীক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন চিকিৎসকরা। রোগ শনাক্ত করে আক্রান্তদের দ্রুত আলাদা করার কোন বিকল্প নেই বলেও তাঁদের অভিমত।
এক্ষেত্রে যে কোন ধরনের অবহেলা উন্নত দেশগুলোর মতো বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে। পরীক্ষা বাড়াতে গেলে টেস্ট ল্যাব প্রত্যন্ত এলাকায় সহজলভ্য করতে হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা ডা. আজগর আলী চৌধুরী।
তথ্য মতে, করোনা এখন আর শহর কেন্দ্রিক নেই। ছড়িয়ে গেছে গ্রামেও। লকডাউন হয়েছে বিভিন্ন উপজেলাও। এর মধ্যে চট্টগ্রামের বাঁশখালী, আনোয়ারা, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও পটিয়ায় লকডাউন হয়েছে করোনা শনাক্ত হওয়ার কারণে। এখানকার লোকজনের স্যাম্পল নিয়ে পরীক্ষার জন্য দৌঁড়াতে হচ্ছে ফৌজদারহাট। রিপোর্ট আসছে না দ্রুত। এসময় নষ্টের কারণে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মাধ্যমে আরো ছড়ানোর আশংকা থেকেই যায়। লোক সংকটের কারণে গ্রামে পৌঁছাতে অনেক সময় লাগছে সংশ্লিষ্টদের। অথচ একাজে সময় নষ্ট করার একদম সুযোগ নেই বলে মনে করেন ডা. আজগর। এ অবস্থায় পরীক্ষার জন্য দক্ষিণ চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক সাব সেন্টার এবং চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল নির্ধারণ করতে পারলে পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুধু লকডাউন করে বসে থাকলে হবে না। সন্দেহভাজনদের দ্রুত পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে। এর জন্য দরকার কয়েকটি উপজেলা মিলে টেস্ট ল্যাব ও জরুরি চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল তৈরি করা।
চীন, ইতালিসহ বিভিন্ন আক্রান্ত দেশে লোকজনের চলাচলে রাস্তাতেই পরীক্ষার ব্যবস্থা করে ব্যাপকহারে লোকজনকে পরীক্ষার আওতায় আনা হয়েছে। এতে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর লাগাম টানার চেষ্টা অনেক ক্ষেত্রে সফল হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রামে লকডাউন অনেকক্ষেত্রে পুরোপুরি সফল হচ্ছে না আইন প্রয়োগে শৈথিল্য ও মানুষের অসচেতনতার কারণে। এক্ষেত্রে দ্রুত পরীক্ষার মাধ্যমে আক্রান্তদেরকে আলাদা করে ফেলতে পারলে পরিস্থিতির লাগাম টানা সহজতর হবে। অন্যথায় অবস্থা খারাপের দিকেই যাবে।
এদিকে দক্ষিণ চট্টগ্রাম তথা বাঁশখালী, আনোয়ারা, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ, পটিয়া ও বোয়ালখালীর মানুষের জন্য দক্ষিণ চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক পরীক্ষা ল্যাব করতে পারলে এই বিশাল এলাকার মানুষকে করোনা সংক্রমণ থেকে অনেকটাই নিরাপদ রাখা যাবে বলেও জানান তাঁরা। কারণ এখনও পর্যন্ত উত্তর চট্টগ্রামের তুলনায় দক্ষিণে সংক্রমণের হার অনেক বেশি।
এদিকে করোনা শনাক্ত ও চিকিৎসার জন্য দক্ষিণ চট্টগ্রামের চট্টগ্রাম-কঙবাজার সড়ক লাগোয়া কোন হাসপাতালকে কাজে লাগিয়ে সমাধান খোঁজা যায় বলে মনে করেন উল্লেখিত অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। এক্ষেত্রে সংক্রমণ প্রতিরোধে পরীক্ষার কাজটি দ্রুত হবে এবং মানুষের মধ্যেও স্বস্তি ফিরবে। বর্তমানে দুরত্বের কারণে স্যাম্পল কালেকশনে পৌঁছতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। আর আক্রান্ত ব্যক্তি দ্রুত চিকিৎসা পাওয়াও কঠিন হচ্ছে। কারণ রোগীদের সেই প্রত্যন্ত এলাকা থেকে এসে হয় নগরীতে না হয় ফৌজদারহাটে দৌঁড়াতে হয়।
এ বিষয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাসিন্দা মো. জসিম উদ্দিন হিমেল জানান, দক্ষিণ চট্টগ্রামের উপজেলাগুলোতে করোনার অত্যধিক ঝুঁকি রয়েছে। একারণে এখানে ল্যাব স্থাপনের মাধ্যমে অধিক সংখ্যায় মানুষকে পরীক্ষার আওতায় আনতে পারলে দ্রুত ঝুঁকি কমবে।
এদিকে গুরুতর রোগিদের আলাদা করে দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিতে অধিক সংখ্যক হাসপাতাল প্রস্তুত করার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আজগর আলী চৌধুরী। দৈনিক আজাদী