নিউজ ডেক্স : চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ভবনে আটকে রাখা মো. মিরাজ (২২) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। মিরাজ ডুলাহাজারা ইউনিয়নের রংমহল এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে।
নিহত মিরাজের বড়ভাই মিজানুর রহমান জানান, মিরাজের স্ত্রী ও ১৪ মাসের এক সন্তান রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে গত শুক্রবার সকালে অন্য একটি মেয়েকে নিয়ে চট্টগ্রাম পালিয়ে যায় মিরাজ। এই খবর পেয়ে তিনি ও মিরাজের স্ত্রী চট্টগ্রাম গিয়ে তাকে আটকায়। তাকে এনে বিচারের জন্য স্থানীয় মালুমঘাট এলাকার ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান শওকতের কাছে সোপর্দ করেন। পরে ইউপি সদস্য শওকত চৌকিদার জব্বারের জিম্মায় মিরাজকে ইউপি কার্যালয়ে একটি কক্ষে বন্দি করে রাখা হয়।
স্থানীয় চৌকিদার নুরুল ইসলাম বলেন, মিরাজকে পরিষদের ৩নং কক্ষে বন্দি রাখা হয়। পাহারার দায়িত্বে ছিলাম আমরা দু’জন। এক পর্যায়ে রাতে সাড়া-শব্দ না পেয়ে মিরাজকে ডাকা হয়। কিন্তু তার উত্তর না পেয়ে পেছনের জানালা দিয়ে গিয়ে দেখা যায়, সে কম্বলের ছেঁড়া অংশ দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে।
ডুলাহাজারা ইউপি চেয়ারম্যান নূরুল আমিন বলেন, স্ত্রী ও সন্তান থাকার পরও মিরাজ অন্য একটি মেয়েকে নিয়ে চট্টগ্রাম পালিয়ে যায়। পরে ওই মেয়েসহ তাকে ধরে আনে পরিবারের সদস্যরা। শনিবার সকালে বিষয়টি সমাধানের কথা ছিল। পারিবারিক কলহ মেটাতে মিরাজকে পরিষদের একটি কক্ষে রাখা হয়েছিল। সেখানে গলায় ফাঁস দিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে।
ইউনিয়ন পরিষদে রাতে কাউকে বন্দি রাখার নিয়ম আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, আসলে নিয়ম নেই। তবে বিচারের সুবিধার্থে মিরাজকে সেখানে রাখা হয়েছিল। রাত বেশি হওয়ায় তাকে থানা পুলিশের কাছে নেয়া হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বখতিয়ার উদ্দীন চৌধুরী বলেন, চেয়ারম্যানের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মিরাজের মরদেহ উদ্ধার করে। ধারণা করা হচ্ছে- জনসম্মুখে বড় স্ত্রী তার গায়ে হাত তোলায় সে অপমানে আত্মহত্যা করেছে।
ইউনিয়ন পরিষদে রাতে বন্দি রাখার ব্যাপারে ওসি বলেন, এটা বেআইনি। তবে চেয়ারম্যান মেম্বাররা এমনটি করল কেন বুঝে আসছে না।