নিউজ ডেক্স : জামায়াতে ইসলামী প্রসংশায় পঞ্চমুখ ‘এক সময়ের কঠোর জামায়াতবিরোধী’ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সভাপতি কর্নেল (অব) অলি আহমেদ (বীর বিক্রম)।
খেতাবপ্রাপ্ত এই মুক্তিযোদ্ধা বলেছেন, ‘১৯৭১ সালের জামায়াত আর ২০১৯ সালের জামায়াত এক নয়। দেশকে তারা অনেক ভালোবাসে, তাদের মধ্যে অনেক সংশোধনী এসেছে। জামায়াতের নেতাকর্মীরা দেশকে ভালোবাসে ও তারা দেশপ্রেমিক।’
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) নতুন নির্বাচন ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের কোনো নেতাকে দেখা যায়নি।
অলি আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী সব দলকে আমরা সঙ্গে নেবো। আপনি আমার কথা লক্ষ্য করেননি। কোনও জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টা করলো কারা, অন্যের ঘাড়ের ওপর বন্দুক রেখে কথা বলা ঠিক না। সব সময় আমি অন্যকে দোষ দিয়ে আগাবো এটা ঠিক না। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। ১৯৭১ সালের জামায়াত এবং ২০১৯ সালের জামায়াত এক নয়। দেশকে তারা অনেক ভালোবাসে, তাদের মধ্যে অনেক সংশোধনী এসেছে।’ এসময় দর্শক সারিতে থাকা জামায়াত কর্মীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে হাত তালি দেন।
অলি আহমেদের দাবি, জামায়াত নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তারা দেশপ্রেমিক শক্তি। যারা দেশকে ভালবাসে, দেশকে মুক্ত করতে চায়, দেশবাসীকে মুক্ত করতে চায়, যারাই আমাদের সঙ্গে আসতে চাইবে তাদেরকে আমরা সঙ্গে নেবো। তবে দালাল-বেঈমানদের না।
এসময় এক সাংবাদিক ‘দালাল- বেঈমানদের’ পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কারা যে দালাল-বেঈমান এটা কারও অজানা না। আমাদের অনেকে দালালি করেছে বলে আজকে জাতির এই অবস্থা। আমাদের সঙ্গের সিনিয়র লোক তাদেরকে চেনেন, তারা জানেন গত ১০-২০ বছর ধরে কীভাবে তারা দালালি করছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অলি আহমেদ ১৮ দফা দাবি আদায়ে ‘জাতীয় মুক্ত মঞ্চ’র ঘোষণা দেন। ১৮ দফা দাবি আদায়ের জন্য আর কিছু করবেন কিনা জানতে চাইলে অলি আহমেদ বলেন, ‘দিস ইজ দ্য বিগিনিং! আগে আগে দেখেন কি হয়। এখানে সব মুক্তিযোদ্ধা, কোনও দালালদের কাজ না।’
নির্দিষ্ট কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে অলি আহমেদ বলেন, ‘এটাই তো নির্দিষ্ট কর্মসূচি। গত ১০ বছরে এরকম কর্মসূচি কেউ দিয়েছে? এটাই আমাদের কর্মসূচি, এটা নিয়েই আমরা জনগণের কাছে যাবো। আমাদের এই জাতীয় মুক্ত মঞ্চ কোনও ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মসূচিতে সমর্থন দেবে না। কোনও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে কাউকে সাহায্য করবো না। জনগণকে ভয় দেখানো যাবে না। সরকারকে বোঝাতে হবে আপনারা ভুল পথে আছেন।’
১৮ দফা অতীতে ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে কখনও দেওয়া হয়নি দাবি করে অলি আহমেদ বলেন, ‘শুধু সবার একটাই দাবি ছিল খালেদা জিয়ার মুক্তি। আমি যখন বলা শুরু করেছি মধ্যবর্তী নির্বাচন চাই, তখন সবাই বলা শুরু করেছে। আসলে আমি টেস্ট করার জন্য বলেছিলাম। মধ্যবর্তী নির্বাচন শুদ্ধ কথা নয়, পুনর্নির্বাচন শুদ্ধ কথা।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আছেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, এলডিপি মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, জাগপার নেতা তাসমিয়া প্রধান, খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা আহমদ আলি কাসেমী, ইসলামী সঙ্গীত শিল্পী মুহিব খান। মঞ্চে না বসলেও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়া প্রমুখ।