
নিউজ ডেক্স : আত্মহত্যা করেছে নেশাগ্রস্ত ছেলে, মরদেহ লুকিয়ে নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছিলেন বাবা-মা। খবরটি প্রকাশ্যে আনতে চাননি মা করুনা বেগম।তাই স্বামীকে নিয়ে ছেলের মরদেহ সেপটিক ট্যাংকে বালু দিয়ে ঢেকে রেখেছিলেন। ছেলের মরদেহ গোপনের পেছনে মা যুক্তি দেখালেন ভোটের।
শুক্রবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার নরিনা ইউনিয়নের নরিনা পূর্বপাড়া গ্রাম থেকে আব্দুল করিম (১৮) নামে ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
করিম ওই গ্রামের আলহাজ হোসেনের ছেলে। নিহতের মা ইউপি নির্বাচনে নরিনা ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী প্রার্থী।

এ বিষয়ে সংবাদিকরা জানতে চাইলে করুণা বেগম বলেন, তার মেজ ছেলে করিম দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত। মঙ্গলবার রাতে খাওয়ার পর নিজের ঘরে ঘুমাতে গিয়েছিল সে। পরদিন ভোরে ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে ছোট ছেলের ঘর থেকে উঁকি দিয়ে করিমের মরদেহ ঝুলতে দেখেন তারা। পরে স্বামী-স্ত্রী মিলে মরদেহ নামিয়ে বাড়ির টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে মাটিচাপা দেন।
সেপটিক ট্যাংকে মরদেহ রাখার কারণ জিজ্ঞেস করলে নিহতের বাবা আলহাজ বলেন, প্রায় ২ বছর আগে বড় ছেলের বউ চিঠি লিখে রেখে আত্মহত্যা করেছিল। ওই ঘটনা সামাল দিতে আমি সর্বশ্বান্ত হয়ে গেছি। এবার ছেলের আত্মহত্যার বিষয়টি জানাজানি হলে আবার আইনি ঝামেলা হবে, তাতে আমাদের বর্তমান বসতভিটাও থাকবে না, তাই আমরা বুকে কষ্ট চাপা রেখে ছেলের আত্মহত্যার বিষয়টি গোপন করতেই মরদেহ ট্যাংকিতে মাটি চাপা দিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, বিষয়টি যেন কেউ বুঝতে না পারে, সেজন্যই স্বাভাবিকভাবে আমার স্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলাম।
ছেলের মৃত্যুর ঘটনাটি সহ্য করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছিল। তাই শুক্রবার সকালে স্থানীয় গাড়াদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের কাছে তারা ঘটনা প্রকাশ করেন। এরপর চেয়ারম্যান পুলিশকে খবর দেয়।
খবর পেয়ে শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিবুল হোসেন ও থানার ওসি শাহিদ মাহমুদ খান ও পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল মজিদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ওসি শাহিদ মাহমুদ খান জানান, এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা সেটা ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। করিমের মা ও বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। করিমের মৃত্যুর কারণও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাংলানিউজ