এলনিউজ২৪ডটকম : সাতকানিয়া উপজেলার গারাংগিয়ার পীর সাহেব হযরত শাহ হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাছান ছিদ্দিকী (৭৬) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না-লিল্লাহি লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজেউন)। বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) দুপুর পৌনে ২টায় নগরীর এক বেসরকারী হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি ৩ ছেলে ও ৩ কন্যাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি কিছুদিন যাবত ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে ভূগছিলেন।
শুক্রবার সকাল ১১টায় গারাংগিয়া ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাযায় ইমামতি করবেন মরহুমের জ্যেষ্ঠ সস্তান গারাংগিয়া ইসলামিয়া রব্বানী মহিলা ফাযিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি মাওলানা এআরএম মহিউদ্দিন রাশেদ।
জানা যায়, গারাংগিয়ার পীর সাহেব শাহ হাফেজ আল্লামা মুহাম্মদ মাহমুদুল হাছান ছিদ্দিকী ছিলেন ইমামুত তরিকত হযরত শাহছুফি আল্লামা আবদুর রশিদ হামেদী ছিদ্দিকী প্রকাশ গারাংগিয়ার ছোট হুজুর কেবলার চতুর্থ পুত্র। তিনি নিজের বড় আব্বা সুলতানুল আউলিয়া শাহছুফি আল্লামা আবদুল মজিদ প্রকাশ গারাংগিয়ার বড় হুজুর কেবলা (রাহ.) ও স্বীয় পিতার হাতে খেলাফতপ্রাপ্ত ছিলেন। প্রাথমিক থেকে শুরু করে হেফজখানায় ভর্তি এবং হেফজ শেষে মাদ্রাসায় ভর্তি সবকিছু তাঁর বড় আব্বার তত্বাবধানে সম্পন্ন করেন। গারাংগিয়া ইসলামিয়া কামিল মাদরাসায় ফাযিল পর্যন্ত লেখাপড়া শেষ করে চট্টগ্রামের দারুল উলুম মাদরাসা থেকে কৃতিত্বের সাথে কামিল শেষ করে। পরে হযরত বড় হুজুর কেবলার ঐকান্তিক ইচ্ছাতে গারাংগিয়া মাদ্রাসাস্থ মসজিদে বায়তুর রহমত ও গারাংগিয়া ইসলামিয়া কামিল মাদরাসায় শিক্ষকতায় যোগ দেন। দীর্ঘ ৪৩ বৎসর শিক্ষকতা শেষ করে ২০১৮ সালে তিনি অবসরে যান। তিনি ‘ইমাম সাহেব হুজুর’ নামে সমধিক পরিচিত ছিলেন।
অত্যন্ত সহজ সরল ও অমায়িক স্বভাবের অধিকারী হযরত শাহ হাফেজ শাহ মাওলানা মাহমুদুল হাছান ছিদ্দিকী। সহনশীলতা, আত্মশুদ্ধি ও খোদাভীতির এক জ্বলন্ত আধার ছিলেন তিনি। সুন্নাতে রাসূলের পরিপূর্ণ অনুসরণ করে আমৃত্যু তরিকতের খেদমতের আঞ্জাম দিয়ে গেছেন তিনি। কাদেরিয়া, মুজাদ্দেদিয়া, চিশতিয়া, নক্সবন্দিয়াসহ আট তারিকার খেলাফত প্রাপ্ত ছিলেন। তাঁর হাতে খেলাফত প্রাপ্ত খলিফাগণ বর্তমানে বিভিন্ন খানকায় তরিকতের খেদমতে নিয়োজিত আছেন। তিনি নিজেও দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত গারাংগিয়া তরিকতের খানকায় গিয়ে তরিকতের জিকির-আযকারের মাহফিল পরিচালনা করতেন। তিনি গারাংগিয়া ইসলামিয়া রব্বানী মহিলা ফাযিল মাদ্রাসা ও শাহ মজিদিয়া রশিদিয়া এতিমখানার প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে এই দুই প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক অবদান রাখেন। তাঁর মেঝ ছেলে প্রফেসর ড. এইস. এম এরশাদ উদ্দিন স্বনামধন্য একজন স্কলার। তিনি বর্তমানে তুরস্কের বিখ্যাত আনাতলিয়া মারমারা ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনায় নিয়োজিত আছেন। গারাঙ্গিয়া ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা ও গারাঙ্গিয়া ইসলামিয়া রব্বানী মহিলা ফাযিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য অধ্যাপক শাব্বির আহমদ সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।