ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | কোচিং বাণিজ্য বন্ধে সরকারের নীতিমালা বৈধ : হাইকোর্ট

কোচিং বাণিজ্য বন্ধে সরকারের নীতিমালা বৈধ : হাইকোর্ট

1913000_pic

নিউজ ডেক্স : কোচিং বাণিজ্য বন্ধে সরকার অনুমোদিত ২০১২ সালের নীতিমালাকে বৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত পৃথক রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিল সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ রায় ঘোষণা করে।

এর ফলে নীতিমালার বাইরে গিয়ে এখন আর কেউ কোচিং করাতে পারবে না বলে জানিয়েছেন শুনানিতে অংশ নেয়া আইনজীবীরা। কোচিং বাণিজ্য বন্ধের নীতিমালা ও কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রশ্নে জারি করা রুলের শুনানি শেষে এ রায় দেয় আদালত।

আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে উপস্থিত ছিলেন এডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।

দুদকের পক্ষে এডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান বাসস’কে জানান, “কোচিং বাণিজ্য বন্ধে সরকার অনুমোদিত ২০১২ সালের নীতিমালাকে বৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছে আজ হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুদক কর্তৃক অনুসন্ধানকে বৈধ বলে রায় দিয়েছে আদালত।”

কোচিং বাণিজ্যের অভিযোগে মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকারের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। দুদকের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ওই নোটিশ দেয়া হয়। পরে ওই নোটিশ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধে নীতিমালা-২০১২ নিয়ে শিক্ষকেরা হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। আদালত গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই চিঠির কার্যকারিতা চার মাসের জন্য স্থগিত করার পাশাপাশি রুলও জারি করে। পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ ‘লিভ টু আপিল’ দাখিল করে। গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে গত ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চকে এ রুলের নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ।

আদালত বিষয়টি নিয়ে শুনানিকালে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে বিশিষ্ট আইনজীবীদের মতও নেন। এদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক এটর্নি জেনারেল ব্যারিষ্টার ফিদা এম কামাল।

২০১২ সালের ২০ জুন কোচিং কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা-২০১২ জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রণীত ওই নীতিমালায় বলা হয়, স্কুল চলাকালীন কোনো শিক্ষক কোচিং করাতে পারবেন না। তবে স্কুলের আগে বা পরের কোনো সময়ে অভিভাবকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠান প্রধান অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ে ফি নির্ধারণ করে দেয়া হয়। নীতিমালায় আরও বলা হয়, কোনো শিক্ষক তার নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে কোচিং করাতে পারবেন না। তবে প্রতিষ্ঠান প্রধানের অনুমতি নিয়ে সর্বোচ্চ ১০ জনের ব্যাচে শিক্ষার্থী পড়ানো যাবে। সে ক্ষেত্রেও প্রতিষ্ঠান প্রধানকে লিখিতভাবে শিক্ষার্থীদের তালিকা জানাতে হবে। কোনো শিক্ষক বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গড়ে ওঠা কোনো কোচিং সেন্টারে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত থাকতে পারবেন না এবং কোনো কোচিং সেন্টারের মালিক হতে পারবেন না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটিকেও কোচিং বাণিজ্য রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বলা হয় ওই নীতিমালায়। পাশাপাশি প্রযোজ্য ক্ষেত্রে কোচিং বাণিজ্য বন্ধে মনিটরিং কমিটি গঠনেরও নির্দেশনা দেয়া হয়। নীতিমালা ভঙ্গ বিষয়ে শাস্তির বিধানও রাখা হয় নীতিমালায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!