
নিউজ ডেক্স : কর্ণফুলি নদীর মোহনার কাছাকাছি ইছানগর ও ডাঙ্গার চরের মধ্যবর্তী এলাকা এখন ডলফিনের একটি প্রজাতি শুশুকের বিচরণক্ষেত্র। শুশুক স্তন্যপায়ী জলজ প্রাণি।
এখন এটি বিপন্ন প্রাণি হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশে দুই ধরনের শুশুক পাওয়া যায়। একটির বৈজ্ঞানিক নাম Orcaella brevirostris এবং অপরটি Neophocaena phocaenoides.

এই শুশুক শিশু বা শিশু মাছ, হউম মাছ, হুছুম মাছ ইত্যাদি নামেও নদীর পারের মানুষের কাছে পরিচিত। একসময় কর্ণফুলি নদীতে প্রায়ই দেখা যেতো শুশুকের ডুব সাঁতার আর লাফিয়ে বেড়ানোর দৃশ্য।

কিন্তু এখন নদীতে বেড়েছে বড় বড় পণ্যবাহী জাহাজ, অসংখ্য লাইটারেজ জাহাজ আর ছোট-বড় হাজারের অধিক মাছ ধরার ট্রলারের আনাগোনা। ফলে কমছে তাদের সংখ্যা।

স্থানীয় সাম্পান মাঝিরা জানান, মাছ শিকারের আশায় নদীতে এরা ঘুরে ফিরে আর লাফিয়ে বেড়ায় সারাদিন। তবে জোয়ার ও ভাটার সন্ধিক্ষণে এদের চলাচল বেড়ে যায়।
এই সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্যবাহী জাহাজ প্রবেশ ও বাহির হতে থাকে। জাহাজের ঘূর্ণায়মান পাখার আঘাতে কাটা পরে শুশুক। পরে মৃত শুশুক পানিতে ভেসে ওঠে।

কর্ণফুলি নদীতে সাধারণত মিঠা পানির শুশুকের বিচরণ দেখা যায়। প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইউসিএনের লাল তালিকায় প্রাণিটি এখন বিপন্ন। কর্ণফুলি ছাড়া হালদা নদীতেও কিছু সংখ্যক শুশুকের দেখা মিলে।
ছোট ও মাঝারি আকারের মাছই এদের প্রধান খাদ্য। নদীতে শুশুক থাকা মানে ওই স্থানে পর্যাপ্ত মাছ আছে, পানির গুণাগুণ আর জলীয় অবস্থা ভালো। শুশুক এমন সব প্রজাতির মাছ খায়, যেগুলো অন্যান্য মাছের বংশবৃদ্ধির জন্য ক্ষতিকর।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন ও অন্যান্য কারণে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ নদীগুলোর অনেক জায়গায় পলি পড়ে গেছে। ফলে শুশুকরা এখানে চলে এসে বিপন্ন হয়ে পড়েছে তাদের জীবন। অনেক প্রাণীর বিচরণক্ষেত্রও ছোট হয়ে গেছে। নদী গভীর হলে হারিয়ে যাওয়া অনেক বিপন্ন প্রাণি আবার ফিরে আসবে, করবে বংশবৃদ্ধি। বাংলানিউজ