
নিউজ ডেক্স : জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেছেন, আমরা মোবাইল কোর্ট করতে চাই না। আমাদের যাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে না হয় সে ব্যবস্থা করেন।ডিজিটাল মূল্য তালিকা করে দেব। এক মাসের মধ্যে ডিজিটাল মূল্য তালিকা হবে। আমরা এটা নিশ্চিত করব।
তিনি বলেন, বাজারভিত্তিক কমিটি রয়েছে। বাজারে যদি কোনো সমস্যা দেখি আমরা সরাসরি বাজার কমিটিকে ধরব। ভেজালের বিষয়েও আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। যদি ভেজালের কোনো খবর পাই সঙ্গে সঙ্গে খবর দেবেন। ব্যবস্থা নেব। ওজনে কোনো হেরফের হলে আমাদের জানাবেন৷ চাঁদাবাজির ভোগান্তির বিষয়েও আমরা দেখবো। টিসিবির পণ্য সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বিক্রি শুরুর পরামর্শ দেন জেলা প্রশাসক।
রোববার (১৭ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অবাধ সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কমিটির মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলে। বাংলানিউজ

জেলা প্রশাসক বলেন, এ বাংলাদেশকে কোন জায়গা থেকে কোথায় নিয়ে এসেছেন সেটি কল্পনাতীত। প্রধানমন্ত্রী দেশকে যেখানে নিয়ে যাওয়ার কথা সেখানেই নিয়ে গেছেন। এখন আমাদের কাজ হলো ব্যবস্থাপনাগুলো টিকিয়ে রাখতে হবে, আস্থা আর বিশ্বাসের সঙ্গে। নিজেরা নিজেদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, আমদানিকারকদের সঙ্গে একটা সভা করব৷ উচ্চ পর্যায়ে আমাদের একটি কমিটি দরকার। বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ বা বাজার মনিটরিং কমিটি গঠন করার সুপারিশ দেব। যাতে তারা এটি মনিটরিং করতে পারে।
মমিনুর রহমান বলেন, বন্যা হয় ভারতে দাম বাড়ে বাংলাদেশ। কেন? এত টাকা কেন লাগবে। এত বড়লোক হয়ে কী হবে। করোনায় অনেক মানুষ চলে গেছেন। হাসপাতালে বেড পায়নি অনেকে। নিজেদের সচেতন হতে হবে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করব। যাতে কেউ আমাদের দোষ বলতে না পারে। প্রথমে আমরা সতর্ক করব। পরে কঠোর হব। সভায় ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা তাদের মতামত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের কাছে ব্যক্ত করেন।
চাক্তাই আড়তদার কমিটির সভাপতি আহসান খালেদ বলেন, সিন্ডিকেট, মজুদদারদের হাত থেকে ব্যবসাটা উদ্ধার করতে সোচ্চার হয়েছি। চাহিদা থাকলে বাজার বেড়ে যায়। দশজনের জিনিস একজনে নিয়ে যায়। আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। ভারতে কখন পেঁয়াজের দাম বাড়ছে সেটি খেয়াল রাখতে হবে। ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে বলে আমাদের ওপর দায় দেয়।
রিয়াজউদ্দিন বাজার আড়তদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফারুক শিবলী বলেন, পেঁপে ৮ টাকা থেকে ১০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, আলু ১২ টাকা করে বিক্রি হয়৷ কিন্তু সেগুলো বাজারে যেতে যেতে দ্বিগুণ হয়ে যায়।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেন, পাইকারি আর খুচরা বাজারের মধ্যে ব্যাপক তফাৎ, এটা দূর করতে হবে। চালের আড়তদার বলে আমার কাছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসবে না, ডালের আড়তদার বলবে আমার কাছে না। তাহলে কার কাছে যাবে। আমি চাই সব জায়গায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা হোক। এটা আমাদের একটা আস্থার জায়গা। মোবাইল কোর্ট যতক্ষণ বাজারে থাকে ততক্ষণ দাম ঠিক থাকে, চলে আসলে আবার বাড়ে কেন? নিজেদের সচেতন থাকতে হবে। এ ছাড়াও বাজারভিত্তিক সভা করার পরামর্শ দেন তিনি। সিটি করপোরেশন আর ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সঙ্গেও বৈঠক করা দরকার বলে মন্তব্য করেন।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক অহিদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের চেয়ে আমরা ভালো আছি। আমদানিকারকদের সঙ্গে বৈঠক করা দরকার। পণ্যের দাম একবার বাড়লে সেটি আর কমতে চায় না। তাই তদারকি প্রয়োজন। নিজেদের মধ্যে সচেতনতা থাকতে হবে। তাহলে অন্যরা সচেতন হবে। দেশটা আমাদের সমাজটা আমাদের তাই দায়িত্বও আমাদের। পণ্য অবাধে সরবরাহ করতে পারব, যদি সবাই সচেতন হই।
সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ শাখা) মাসুদ কামাল, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোছাঃ সুমনী আক্তার, চেম্বার অব কমার্সের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ প্রমুখ।
Lohagaranews24 Your Trusted News Partner