নিউজ ডেক্স : ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি) নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ভোটাররাই ভোট দিতে যাননি বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে এ কথা জানান তিনি।
তিনি জানান, উত্তর সিটিতে ২৫ দশমিক ৩০, আর দক্ষিণে ২৯ দশমিক ০.২ শতাংশ ভোট পড়েছে। অর্থাৎ দুই সিটিতে ২৭ দশমিক ১৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।
ভোটারদের না আনতে পারার ব্যর্থতা নির্বাচন কমিশনের কি না- ইসি সচিব বলেন, ‘মোটেই না। কারণ ভোটকেন্দ্রে আসার দায়িত্ব ভোটারের। বিয়ের দাওয়াত দেয়ার দায়িত্ব আমার, কিন্তু দাওয়াতে আসবেন কি না সেটা আপনার বিষয়। উন্নত দেশগুলোতে ভোটের হার অনেক কম। অস্ট্রেলিয়ায় ভোট মানুষ দিতে আসে না। অস্ট্রেলিয়া সরকার ও নির্বাচন কমিশন কি ব্যর্থ? মোটেই না। এ জন্য সেখানে আইন করা হয়েছে যে, ভোট না দিতে আসলে ১০০ ডলার জরিমানা দিতে হবে। তারা ১০০ ডলার জরিমানা দেয়, তারপরও ভোট দিতে যায় না।’
ভোটারদের আস্থাহীনতার কারণে কম ভোট পড়েছে কি না- এ বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘অনাস্থার কারণে ভোট দিতে যায়নি, এটা আমার কাছে মনে হয়নি। যারা সরকারি দল তাদের তো অন্তত ভোটে অনাস্থা নেই। তাদের যদি সব ভোটার ভোট দিত, তাহলেও তো এত কম ভোট পড়ত না। তার মানে হল, তাদেরও অনেক ভোটার ভোট দিতে যাননি। আমি ভোট না দিতে গেলেও সমস্যা নেই, যারা সরকারকে সমর্থন করেন তাদের এ ধরনের একটা মনোভাব থেকে হয়তো অনেকেই ভোট দিতে যাননি।’
ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার আরও কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘জনগণ ছুটি পেয়েছে, অনেকে ছুটি ভোগ করেছে। কেউ কেউ ফেসবুক নিয়ে ব্যস্ত ছিল।’
ভোটার উপস্থিতির এ হার নিয়ে নির্বাচন কমিশন সন্তুষ্ট কি না- জবাবে মো. আলমগীর বলেন, ‘আমরা অসন্তুষ্ট না। প্রচার ছিল প্রচুর ছিল। আমাদের ধারণা ছিল, শতকরা ৫০ শতাংশ ভোট পড়বে। কিন্তু তার চেয়ে কম পড়েছে। ভোট কাস্টিংয়ের দিক থেকে পুরোপুরি সন্তুষ্ট না।’
তিনি দাবি করেন, ‘নির্বাচনে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ছিল। পরিবেশ ভালো ছিল। কোথাও কোনো তেমন গণ্ডগোল হয়নি। কাউকে ভোট দেয়ার ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বায়াস (পক্ষপাতদুষ্ট) ছিল না। সবকিছুই সঠিক ছিল।’
নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সুপারিশ থেকে হয়তো ভোটার উপস্থিতি কম থাকার কারণ জানা যাবে বলেও জানান ইসি সচিব।
কেন্দ্রের গোপন কক্ষে গিয়ে একজনের ভোট অন্যজন দিয়েছে। এ নিয়ে কমিশন কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করবে কি না- জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘খুবই অল্প মাত্রায় আপনাদের মিডিয়ার মাধ্যমে এ অভিযোগটি আমাদের কাছে এসেছে। আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি।’
বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটিও আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে শুনেছি। এ বিষয়ে কেউ লিখিতভাবে অভিযোগ করেননি।’
এই দুই অভিযোগ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কমিশনে লিখিতভাবে আসলে তদন্ত করা হবে, অন্যথায় হবে না বলেও জানান ইসি সচিব।