ব্রেকিং নিউজ
Home | লোহাগাড়ার সংবাদ | লোহাগাড়ায় এতিমখানার চাল আত্মসাতের অভিযোগ

লোহাগাড়ায় এতিমখানার চাল আত্মসাতের অভিযোগ

58

এলনিউজ২৪ডটকম : লোহাগাড়া উপজেলায় এতিমখানার জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি চাল আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। লোহাগাড়া সদরের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার হাফেজ জাহাঙ্গীর আলমের যোগসাজশে এসব এতিমখানার চাল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয় বলে জানা যায়।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে এতিমখানার জন্য গত ২৬ জুন ১৮ ইং তারিখে ২ মে. টন করে চাউল বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু ঐ একই দিন চাল উঠিয়ে এতিমখানাগুলোতে ১ টন করে দিয়ে বাকী ১ টন হাফেজ জাহাঙ্গীর মেম্বারসহ সংশ্লিষ্টরা আত্মসাৎ করেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, রশিদের পাড়া হাফেজ মুহাম্মদ ছমিউদ্দিন শাহ (রঃ) হেফজখানা ও এতিমখানার জন্য ২ মে. টন জি. আর চাল (যার স্মারক নং- ৫১.০১.১৫৪৭.০০০.৪২.০১০.১৭/১১৪৪) এবং লোহাগাড়া রশিদের পাড়া এতিমখানার (নয়া পুকুর পাড়) জন্য ২ মে. টন জি. আর চাল (যার স্মারক নং- ৫১.০১.১৫৪৭.০০০.৪২.০১০৭/১১৪৭) মোট ৪ মে. টন চালের ছাড়পত্র প্রদান করা হয়। ২৬ জুন স্থানীয় হাফেজ জাহাঙ্গীর মেম্বার এতিম খানা দু’টির সভাপতি ও সেক্রেটারীকে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে এ চাল উঠিয়ে নেন। লোহাগাড়া রশিদের পাড়া (নয়া পুকুর পাড়) এতিমখানার সভাপতি মৌলানা নুরুল আবছার প্রকাশ আবছার মেম্বার। অথচ অন্য এক নুরুল আবছারকে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে এতিমখানাটির জন্য বরাদ্দকৃত ২ টন চাল তুলে নিয়ে যান জাহাঙ্গীর মেম্বার। কিন্তু এতিমখানাটিতে দেয়া হয় ২৭,০০০/- টাকা (এক টন চালের বর্তমান মূল্য ২৭ হাজার টাকা হিসাব করে)।

এছাড়া উপজেলার আলোর ঘাট রোডের খানেকা-ই হামেদিয়া মজিদিয়া রশিদিয়া ফোরকানিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা, দুদু ফকির শাহ এতিমখানা ও মসজিদ, পশ্চিম আমিরাবাদ ইসলামিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার জন্যও ২ মে. টন করে চালের ছাড়পত্র দেয়া হয়। কিন্ত খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব এতিমখানায় ২ মে. টনের পরিবর্তে ১ মে. টন করে চাল দেয়া হয়েছে। বাকী ১ মে. টন করে স্থানীয় ইউপি মেম্বার হাফেজ জাহাঙ্গীর আলমসহ কিছু অসাধু ব্যক্তি আত্মসাৎ করেছেন বলে জানা যায়।

রশিদের পাড়া হাফেজ মুহাম্মদ ছমিউদ্দিন শাহ (রঃ) হেফজখানা ও এতিমখানা পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারী হাফেজ মোহাম্মদ দেলোয়ার জানান, ‘আমি অতো কিছু জানি না, জাহাঙ্গীর মেম্বারের মাধ্যমে সব করেছি। তিনি আমাকে প্রথমে ৩০,০০০/-(ত্রিশ হাজার) টাকা দেন, কিন্তু সাংবাদিকরা নিউজ করবে খবর পেয়ে তড়িঘড়ি করে ৫৪,০০০/- (চুয়ান্ন হাজার) টাকার আরেকটি রশিদ (যার নং ২১২) কেটে নিয়ে যায়। প্রথমে দেওয়া ৩০ হাজার টাকার রশিদটি (যার নং ২০৮) বাতিল করে দিতে বলেন তিনি। জেনেছি শুধু আমাদের মাদ্রাসা নয়, লোহাগাড়ার আরো বিভিন্ন এতিমখানার জন্যও জাহাঙ্গীর মেম্বার ২৭,০০০/-(সাতাশ হাজার) টাকা করে পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।’

অভিযুক্ত হাফেজ জাহাঙ্গীর মেম্বার জানান, ‘আমি কোনো এতিমখানার চাল আত্মসাৎ করিনি। আমি এসবে জড়িত নই। যারা স্বাক্ষর দিয়ে চাল তুলেছেন তারাই এব্যাপারে ভাল জানেন।’

শাহ ছমিউদদ্দিন এতিমখানায় প্রথমে ৩০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন কেন?- এ প্রশ্ন করা হলে জাহাঙ্গীর মেম্বার কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আনোরুল ইসলাম জানান, ‘আমার অফিস থেকে নিয়মানুযায়ী যা বরাদ্দ হয়েছে তাই দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ এতিমখানা ও মাদ্রাসার জন্য বরাদ্দকৃত চাল আত্মসাৎ করে থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু আসলামের মোবাইলে বেশ কয়েকবার ফোন করলেও রিসিভ না করায় এ ব্যাপারে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের সাংসদ ড. আল্লামা আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর সাথে যোগাযোগ করা হলে জানান, ‘লোহাগাড়া-সাতকানিয়ায় কোনো প্রকার দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে নাভ। দোষী সাব্যস্থ হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতিমের চাল আত্মসাৎ কিছুতেই বরদাশত করা হবে না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!