Home | উন্মুক্ত পাতা | বিজ্ঞপ্তি/বিজ্ঞাপন | মানবিক আবেদন : কাদের বাঁচতে চায়

মানবিক আবেদন : কাদের বাঁচতে চায়

138

সাজু এবং কামাল লোহাগাড়ায় কর্মরত দুই দপ্তরী। গত কয়েকদিন ধরে তারা আমাকে কিছু বলতে চায়। জিজ্ঞেস করলে বলে, না স্যার। কিছু না। আমার মনে হয় তারা কিছু বলতে চায়। কয়েকদিন বিষয়টা খেয়াল করার পর চারদিন আগে তাদের ডাকলাম। অভয় দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কি বলতে চাও? বলো।

স্যার, আমাদের সহকর্মী কাদের খুব অসুস্থ।

কাদেরকে তো আমি কয়েকদিন আগেও দেখেছি। দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে।

মধ্য বড় হাতিয়ার কাদের না, চাকিফিরানীর কাদের।

ও, তার কি হলো?

ফুসফুসে ঘা হয়েছে। অনবরত রক্ত বমি করে।

কি বলো?

স্যার, তাকে সাহায্য করতে হবে। আপনি উদ্যোগ নিলে পারবেন।

দেখো ভাই, আমি এখন দায়িত্বে নাই। আমি চাইলেও এখন অনেক কিছু পারবো না। তবে হ্যাঁ, আমার পক্ষ থেকে সাধ্যমত তাকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো।

আপনি সহযোগিতা করলে হবে না। আপনাকে লিখতে হবে।

তাদের দুজনের জোরাজুরিতে আমি লিখতে রাজি হই। গত পরশু এক গাদা প্রেসক্রিপশন নিয়ে কাদের আমার বাসায় হাজির। এসেই আমাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে দিল। আমি ছোট অফিসার। আমি চাইলে কিইবা করতে পারি? আমার অনেক অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বলল, স্যার আমি বাঁচতে চাই। আমার ছোট ছোট তিনটা বাচ্চার জন্য আপনি কিছু করেন। আপনি একটু লিখেন। তার কান্নার জোরে আমিও কখন যে চোখের জলে ভেসে গেলাম টেরই পাইনি।

তাঁর পুরো নাম গোলাম কাদের। চাকফিরানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম নৈশপ্রহরী হিসেবে কর্মরত। বড় হাতিয়া ইউনিয়নের চাকিফিরানী গ্রামের মৃত আবদুল মোতালেবের ছেলে তিনি। তিন ভাই তিন বোনের মধ্যে কাদের সবার ছোট। তিনি বিবাহিত এবং তাঁর দুই ছেলে এক মেয়ে। ২০১৩ সালে তার চাকরিটা হয়। বড় ছেলের বয়স সাত বছর আর ছোট ছেলের বয়স দেড় বছর। মেয়েটার বয়স পাঁচ বছর। চাকরির পনের হাজার টাকা বেতন দিয়ে তিন সন্তানকে মানুষ করা নিয়ে কাদের এবং তাঁর স্ত্রী যখন স্বপ্ন দেখছিল, সেই স্বপ্নে হানা দেয় কাদেরের অসুখ।

এই বছর মার্চে একদিন কাশতে কাশতে রক্ত বমির মাধ্যমে কাদের জানতে পারে অসুখের কথা। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেলের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ ইলিয়াছের চিকিৎসাধীন। তাঁর চিকিৎসক তাকে পরামর্শ দিয়েছেন ইন্ডিয়া গিয়ে চিকিৎসা করাতে। একজন নিতান্ত দরিদ্র ঘরের সন্তানের পক্ষে ইন্ডিয়া গিয়ে চিকিৎসা করানো রীতিমত অসম্ভব।

কিন্তু সেই অসম্ভব সম্ভব হয়ে আমরা সবাই একটু হাত বাড়াই। যদি সাধ্যমতো একটু চেষ্টা করি তাহলে ছোট ইরফানের বাবা সুস্থ হয়ে তার কাছে ফিরে আসবে । আসুন না? আমরা হাত বাড়িয়ে দেই।

গোলাম কাদেরের পারসোনাল বিকাশ নম্বর : ০১৮১৭৭০৬২১৪

 

তথ্য সূত্র : ওমর ফারুক, সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার, লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!