Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে প্রতারণা, ৭ বছর পর ধরা

মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে প্রতারণা, ৭ বছর পর ধরা

নিউজ ডেক্স : নিজেকে বিভিন্ন মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে প্রতারণা, ১১টি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এবং ১১টি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত প্রতারক মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীকে (৪২) ৭ বছর পর আটক করেছে র‌্যাব-৭। তিনি হাটহাজারী থানার কাটিরহাট এলাকার আবু তাহের চৌধুরীর ছেলে।

তিনি জানান, মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী প্রতারক। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে তার ব্যবসার শেয়ার দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে। পরবর্তীতে তাদের কোম্পানির শেয়ারের টাকার লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন ব্যাংকের চেক দিত। ভুক্তভোগীরা চেক নিয়ে ব্যাংকে গেলে দেখা যেত তার দেওয়া চেকের বিপরীতে অ্যাকাউন্টে টাকা নেই। এভাবে তিনি বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। ভুক্তভোগীরা তার কাছে পাওনা টাকা চাইলে ভুক্তভোগীদের পূর্বে সংরক্ষিত স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন ভুয়া দলিল দস্তাবেজ তৈরি করে তাদেরই উল্টো মিথ্যে মামলার ভয় ও মামলা করে নাজেহাল করত। মিথ্যা মামলার ভয়ে অনেক ভুক্তভোগীই পাওনা টাকার বিষয়ে মুখ খোলার সাহস করতেন না।

তিনি বলেন, মেজবাহর বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার কাটিরহাটে। তার বাবা স্থানীয় একটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। মেজবাহ গত কয়েকবছরে কয়েকশ কোটি টাকা প্রতারণা করে মানুষজনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন। নিজে এইচএসসি পাস। ১৯৯৮ সালে জাহাজের স্ক্র্যাপের ব্যবসায় জড়িত হন। শুরুতে অল্প পুঁজিতে ব্যবসা করে লাভবান হন। পরে বিভিন্নজনকে পার্টনার করে টাকা পয়সা নেন। ২০০৮ পর্যন্ত ব্যবসা চলতে থাকে। ২০০৮ সালের পরে ব্যবসায় লসের সম্মুখীন হন। যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন তা ফেরত দিতে না পেরে একটা চাপের মধ্যে পড়েন। তখন তার মাথায় প্রতারণার বিষয়গুলো চলে আসে। এরপরই প্রতারণার কৌশল নেয় মেজবাহ। অল্প সময়ের মধ্যে বড় লোক হওয়ার কথা চিন্তা করে। ২০১৪ সালে একটি জাহাজের ছবি দেখিয়ে নিজে জাহাজটি কিনেছে বলে জানান।  এরপর জাহাজ বিক্রির অংশীদার হিসেবে অনেক টাকা হাতিয়ে নেন।

র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমএ ইউসুফ জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রোববার রাত পৌনে ১০টার দিকে নগরের পাঁচলাইশ থানার হামজারবাগ আজাদ কমিউনিটি সেন্টারের মসিউর রহমানের ভাড়া বাসা থেকে মেজবাহকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে মেজবাহ প্রতারণা কথা অকপটে স্বীকার এবং বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে জানান।

ভুক্তভোগীরা সহজে যাতে খুঁজে না পান সেজন্য তিনি নিজ জেলার স্থায়ী ঠিকানায় অবস্থান না করে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করতেন। এছাড়াও তার একাধিক মোবাইলে ঘন ঘন সিম পরিবর্তন করে ব্যবহার করতেন যাতে কেউ সহজে যোগাযোগ করতে না পারেন। বর্তমানে তাকে যাতে চিনতে না পারা যায় সেজন্য সে হেয়ার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট করেছে। মেজবাহের বিরুদ্ধে হাটহাজারী এবং কোতোয়ালী থানায় প্রতারণার ২২টি মামলা রয়েছে। যার মধ্যে ১১টি মামলায় আদালত বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন। ১১টি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে তাকে থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। -বাংলানিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!