নিউজ ডেক্স : চট্টগ্রাম নগরের আকবর শাহ থানার কর্নেলহাট এলাকায় একটি হারবাল প্রতিষ্ঠানে ‘ভুয়া মোবাইল কোর্ট’ পরিচালনা করতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পরেছে দুই প্রতারক। আটকদের একজন স্ত্রীকে ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়ে নিজে সেজেছেন তার পেশকার।
তারা ‘কথিত’ মোবাইল কোর্টের নামে মানুষের কাছ টাকা হাতিয়ে নিতেন। বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে তাদের আটক করে পুলিশে দিয়েছে জনতা।
আটকরা হলেন সৈয়দ মিজান উল্লাহ (৩৮) এবং তার সহযোগী ফারদিন আহমেদ (২৪)। তবে পালিয়ে গেছেন ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়দানকারী পারভীন আক্তার (৩৫)। যিনি আটক সৈয়দ মিজান উল্লাহর স্ত্রী। মিজান সাতকানিয়ার সমরকান্দির ফরিদুল আলমের ছেলে। ফারদিন কিশোরগঞ্জের গৌরাঙ্গপাড়ার রফিক উদ্দিনের ছেলে।
আকবর শাহ থানার ওসি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, দুপুরে কর্ণেলহাটের বাংলাদেশ আয়ুর্বেদিক ওষুধালয়ে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন কাগজপত্র দেখতে থাকেন, এক পর্যায়ে জরিমানার কথা বলে পাঁচ হাজার নিয়ে যায় মিজান ও ফারদিন। পরে তারা ম্যাজিস্ট্রেট ম্যাডাম ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন বলে বাকি টাকা দাবি করে। এ বিষয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে তর্ক বিতর্কের এক পর্যায়ে মিজান বাংলাদেশ আয়ুর্বেদিক ওষুধালয়ের ম্যানেজার মহিদুল ইসলাম মহিদকে ধাক্কা দেয়। এতে আশপাশের লোকজন মিজানকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মিজানের স্ত্রীর ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট পারভীন আকতার পালিয়ে যায়।
ওসি আরো বলেন, পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিজান জানিয়েছে- সে ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আলোকিত কণ্ঠের সম্পাদক এবং ফারদিন আহমেদ তার পত্রিকার ম্যানেজার। মিজানের দেয়া তথ্যমতে, ঢাকায় যোগাযোগ করে আমরা জানতে পারি, আলোকিত কণ্ঠের চট্টগ্রামে কোনো অফিস নেই। এছাড়া মিজানকে তারা চিনে না। পরে তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসি। যাচাই বাছাই করে দেখা গেছে, মিজান ও তার স্ত্রীর পারভিন আকতারের নামে সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যায় আয়ুর্বেদিক ওষুধালয়ের মহিদুল ইসলাম মহিদ বাদি হয়ে আকবর শাহ থানায় সৈয়দ মিজান উল্লাহ, ফারদিন আহমেদ ও পারভীন আক্তারকে আসামী করে মামলা করেন।
বাংলাদেশ আয়ুর্বেদিক ওষুধালয়ের কর্মকর্তা মহিদুল ইসলাম বলেন, বেলা দেড়টার দিকে দুইজন লোক আমাদের প্রতিষ্ঠানে এসে নিজেদের ম্যাজিস্ট্রেটের লোক পরিচয় দিয়ে কাগজপত্র দেখতে চান। আমরা কাগজপত্র দেখানোর পরও তারা ম্যাজিস্ট্রেট ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে বলে আমাদের কাছে টাকা দাবি করে। এরপর আমরা ক্যাশ থেকে ৫ হাজার টাকা দিই। কিছুক্ষণ পর ওই দুই ব্যক্তি বলে ম্যাডাম বলেছে- বাকি টাকা দিতে। অন্তত ১০ হাজার টাকা হলেও দিতে হবে। টাকা নেই বলাতে তারা আমাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। এক পর্যায়ে আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। সাথে সাথে আশপাশের লোকজন এসে ওই দুজনকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। অবশ্য পুলিশ আসার আগে ওই নারী ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট পালিয়ে যায়।