ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | প্রকৃতির প্রতিশোধ খুব কঠিন : প্রধানমন্ত্রী

প্রকৃতির প্রতিশোধ খুব কঠিন : প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেক্স : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর দীর্ঘদিন ধরে সরকার পরিচালনা করায় এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা এ ধরনের অর্জনের আরেকটি কারণ।

তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর সরকার বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না আসায় পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করা যায়নি।

আজ মঙ্গলবার (২২ মার্চ) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। শেরেবাংলানগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

’৯৬ সালে সরকার গঠনের সময় দেশে মাত্র ১৫শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, এই সরকার ক্ষমতা হস্তান্তরের সময় সেই বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বাড়িয়ে ৪ হাজার ৩শ’ মেগাওয়াট করে গিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী ৫ বছরে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ১ ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন তো বাড়াতেই পারেনি বরং কমিয়ে ফেলে। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর দেখতে পান দেশের তখন বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা কমে ৩ হাজার ২শ’ মেগাওয়াট হয়ে গেছে।

বিদ্যুৎকে শিল্পায়নের চালিকাশক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের অনেক চর এলাকায় নদী এবং সাগরের তলদেশ দিয়ে যেমন সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। যেখানে গ্রিড লাইন নাই সেখানে সোলার প্যানেল দিয়ে যেমন বিদ্যুৎ দিয়েছি, তেমনি সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে মূল বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। যাতে সেখানে শিল্পায়ন হতে পারে।

তিনি সন্দ্বীপের উদাহরণ টেনে বলেন, সেখানে প্রথমে আমরা সোলার প্যানেল দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের পর সাবমেরিন কেবল দিয়েও বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। চর কুকরীমুকরী, রাঙ্গাবালীতেও আমরা সেভাবে দেওয়া শুরু করেছি।

একসময় দক্ষিণাঞ্চল অবহেলিত ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা বন্দর, সেনানিবাস, সড়ক ও মহাসড়ক ইত্যাদি নির্মাণের মাধ্যমে এই অঞ্চলের উন্নয়ন করেছে, যা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সহায়তা করবে।

প্রধানমন্ত্রী প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় এ অঞ্চলে সবাইকে বেশি করে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলার এবং কৃত্রিম ম্যানগ্রোভ তৈরির আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, প্রকৃতির প্রতিশোধ খুব কঠিন। কাজেই প্রকৃতি কিভাবে এটা করে সেটা আমি নিজের চোখেই দেখেছি বহুবার। তারপরও আমি বলব মানুষের সুরক্ষার যে বিষয়, সেটা আমরা নিশ্চিত করেছি এবং গতকাল আমি বলেছি সবাই গাছ লাগাবেন। যে দায়িত্বটা আমাদের কৃষকলীগের ওপর ন্যস্ত থাকে তাদেরই উদ্যোগে আষাঢ় মাসে সারা দেশে বৃক্ষরোপণ করা হয়।

তিনি বলেন, ১৯৮৪-৮৫ সাল থেকে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়। যদিও সে সময় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের বিষয়টা তেমনভাবে আলোচনায় ছিল না। তার পরও দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনকে দিয়ে মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের যে পদক্ষেপ, তারই অংশ হিসেবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের দায়িত্ব কৃষকলীগের ওপর বর্তায়।

পদ্মা সেতু চালু হয়ে গেলে একসময়কার চরম দুর্দশাগ্রস্ত দক্ষিণাঞ্চলের জনগণের জীবনমান আরো উন্নত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রায় ১৫ হাজার ৭৪৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয় সংবলিত ১২টি প্রকল্প অনুমোদন করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। সূত্র : বাসস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!