ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | দেশীয় কোম্পানির ক্যাপসুলে চলতি মাসেই ভিটামিন ‘এ’ ক্যাম্পেইন!

দেশীয় কোম্পানির ক্যাপসুলে চলতি মাসেই ভিটামিন ‘এ’ ক্যাম্পেইন!

vitamin-a-capsul-20190119162702

নিউজ ডেক্স : রাজধানীসহ সারাদেশে বহুল আলোচিত ভিটামিন-এ ক্যাম্পেইন চলতি মাসেই অনুষ্ঠিত হবে। রাতকানা রোগ প্রতিরোধে জাতীয় পুষ্টি কর্মসূচির আওতায় আজ (শনিবার) দেশব্যাপী ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর দিনক্ষণ নির্ধারিত ছিল।

কিন্তু শেষ মুহূর্তে ভারতের একটি কোম্পানি থেকে আমদানিকৃত ভিটামিন-এ ক্যাপসুলের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় স্বাস্থ্য অধিদফতর কর্মসূচিটি স্থগিত করে। নিয়মিত চলমান জাতীয় এই কর্মসূচি হঠাৎ স্থগিত হওয়ার পর থেক এ নিয়ে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ আজ (শনিবার) দুপুরে জানান, ভিটামিন-এ নিয়ে অভিভাবকদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। চলতি মাসের মধ্যে ভিটামিন-এ ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হবে। তাদের ভিটামিন-এ ক্যাপসুলের সরবরাহ রয়েছে।

তিনি জানান, জাতীয় পুষ্টি কর্মসূচির আওতায় প্রতিবছর দু’বার দুই রাউন্ডে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুদের নীল এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের লাল রঙের ভিটামিন–এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। মূলত রাতকানা রোগ প্রতিরোধের জন্য ১৯৯৪ সাল থেকে দেশের শিশুদের ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়।

তিনি আরও জানান, ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের ক্যাপসুলের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তাই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত ওই প্রতিষ্ঠানের ক্যাপসুল শিশুদের খাওয়ানো হবে না। দেশীয় প্রতিষ্ঠানের সরবরাহকৃত ক্যাপসুল দিয়ে এই প্রচারাভিযান চলবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

নেপথ্যের ঘটনা কি?
স্বাস্থ্য অধিদফতরের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে ২০১৬সালের মার্চ মাসে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ১ লাখ ৪১ হাজার ডলারে (বাংলাদেশি ১ কোটি ২০ লাখ টাকা) স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীন সেন্ট্রাল মেডিসিন স্টোর ডিপোর্টের (সিএমএসডি) মাধ্যমে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

বিশ্ব ব্যাংকের শর্তানুসারে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল কেনার জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়। শর্তানুসারে দরপত্র আহ্বান করলে ভারতের অ্যাজটেক নামে একটি প্রতিষ্ঠান সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কার্যাদেশ পায়। সেখানে আরও শর্ত ছিল ভিটামিন-এ ক্যাপসুল সরবরাহের ক্ষেত্রে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের কাছ থেকে এনওসি সংগ্রহ করতে হবে। নিয়মানুসারে তাদের এনওসি পাওয়ার কথা।

কিন্তু ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর একটি নির্দেশনা ও পরবর্তীতে পিপিআরে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল কেনার ক্ষেত্রে দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে অগ্রাধিকার দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে। এ কারণে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর ভারতের ওই প্রতিষ্ঠানকে এনওসি দিতে অস্বীকৃতি জানালে মালামাল সরবরাহ করা নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। সর্বশেষ আদালত ভারতীয় প্রতিষ্ঠানকে এনওসি দিতে নির্দেশ দেয়। সে অনুসারে প্রতিষ্ঠানটি ক্যাপসুল সরবরাহ করলে তা বিভিন্ন জেলায় পৌঁছে দেয়া হয়।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ভারতীয় ওই প্রতিষ্ঠান এর আগেও ভিটামিন-এ ক্যাপসুল সরবরাহ করেছিল। যে ক্যাপসুল নিয়ে জটিলতা সে ক্যাপসুলের মেয়াদ জুন মাসে শেষ হবে।

ওই কর্মকর্তা জানান, শনিবার (১৯ জানুয়ারি) থেকে ভিটামিন-এ ক্যাপসুলের জাতীয় প্রচারাভিযান শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত সপ্তাহে তারা বিভিন্ন জেলা থেকে খবর পান সরবরাহকৃত ভিটামিন-এ ক্যাপসুল একটি আরেকটির গায়ে লেগে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা সরেজমিন গিয়ে এ তথ্যের প্রমাণও পান। এ কারণে ভিটামিন-এ ক্যাম্পেইন স্থগিত করা হয়।

গণমাধ্যমের ভুল বক্তব্যে বিব্রত স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী : 

এদিকে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান তার বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘মামলা করে ‘ভারতীয় একটি অখ্যাত কোম্পানির কাছ থেকে নিম্নমানের ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাপসুল কিনতে বাধ্য করা হয়েছে’ মর্মে প্রকাশিত বক্তব্য সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন।

ডা. মুরাদ বলেন, এ ধরনের কোনো কথা তিনি বলেননি। গণমাধ্যমকর্মীরা আদালতের মাধ্যমে ভারতের একটি কোম্পানি ভিটামিন-এ ক্যাপসুল সরবরাহ করেছে জানালে তিনি বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছিলেন। ভারতীয় কোম্পানি ভিটামিন-এ ক্যাপসুল কিনতে বাধ্য করেছে -এমন কোনো কথা তিনি বলেননি। তার বক্তব্য ভিন্নভাবে উত্থাপিত হওয়ায় তিনি ‘বিব্রত’ বলে জানান।

সূত্র : জাগো নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!