Home | সাহিত্য পাতা | কি ছিলো???

কি ছিলো???

317

কামরুন নাহার : শামীমা আর তার স্বামী সরকারি চাকুরী করে। দুজনই সরকারি কর্মকতা। অতএব আর্থিক স্বচ্ছলতা কম ছিল না। দু, সন্তান নিয়ে সুখী সংসার। হঠাৎ সংসারে এলো গোপন অশান্তি। যা কারও সাথেই শেয়ার করতে পারছিল না সে।সে এক অসহ্য সময়।কাকে বলবে? কে শান্তনা দেবে? মনে মনে শেষ হয়ে যাচ্ছিল সে।

সব সময়ই শামীমা ধর্ম বিশ্বাস করে।তবে খুব পালন করা হয়ে ওঠেনা। কখনো সময়ের জন্য অথবা অলসতা।

বিপদের সময় নিজেকে সম্পূর্ণ আল্লাহর কাছে সমর্পণ করে শামীমা। পাচ ওয়াক্ত নামাজ কোরআন তেলায়ত করে সময় কাটে তার। এখন আর চাকরি করে বলে নামাজ পড়তে ভুলে যায় না সে।

বেশ কিছুদিন ধরে তাহাজ্জত নামাজ পড়ছেন তিনি। প্রায় ৬/৭ মাস হলো প্রতিরাতে আড়াইটা, তিনটার দিকে ওঠতেন তারপর নামাজ পড়তেন।ফজর পড়ে একটু ঘুম বা ঘরের কাজ তারপর অফিস।

নামাজ পড়তেন যে ঘরে বিশাল থাই গ্লাসের জানালা।। খোলা জানালা দিয়ে বাতাস আসে খুব তাই তিনি জানালা খুলেই নামাজ পড়তেন।

একরাতে ক্লান্ত শামীমা তাহাজ্জুদ পড়ে নামাজের মাদুরে উপুড় হয়ে পড়ে আছেন। চোখ ভেসে যাচ্ছে পানিতে।

হঠাৎ কে যেন পিঠে হাত রাখলো। স্নেহ ভরা হাত। চোখ ভরা পানি যদি স্বামী দেখে ফেলে তাই সে বললো তুমি যাও আমি ফজর পড়ে আসবো।তাও হাতটা পিঠে আদরের পরশ বুলিয়ে যাচ্ছে। যেন বলছে আর ভয় নাই।

মুখ তোলে শামীমা, স্বামীকে বলবার জন্য তুমি যাও আমি ঠিক আছি। কিন্তু কেউ তো নাই। শামীমা ভাবে হয়তো সে উঠতে উঠতে তার স্বামী শোবার ঘরে চলে গিয়েছে।

শোবার ঘরে আসে সে দেখে মানুষটা ঘুম। নাক ডাকার শব্দ হচ্ছে। বুঝতে পারেনা কখন ঘুমালো মানুষটা। এই মাত্র এসে। একটা খটকা লাগে। ফজর পড়ে ঘরের কিছু কাজ সারে। তারপর নাস্তার টেবিলে তারা।

শামীমা জিগ্যেস করে রাতে ওমন করে পিঠে হাত রাখলে যে। আমায় নিয়ে ভেবনা আমি ঠিক আছি।
মানুষটা অবাক, বলে কখন আমি হাত রাখলাম???

অবাক শামীমা কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। তবে তার যে ঝামেলা ছিল।য সমাধানের উপায় তার জানা ছিল না।
সমাধান হয় তা অলৌকিক ভাবে। সুখে ভরা জীবন তারএখন।

তবু মন মাঝেমাঝে চমকে ওঠে। কে হাত রেখেছিল সেদিন? কল্পনা,বিশ্বাস? নাকি সত্যি কেউ হাত রেখেছিল। অভয় দেবার জন্য।

কে ছিল? কে??

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!