

লোহাগাড়া স্টার সুপার মার্কেটের এরাবিয়ান শাড়ীজ থেকে ছবিটি তোলা
এলনিউজ২৪ডটকম : পবিত্র ঈদুল ফিতরের এখনো বাকি দুই সপ্তাহের মতো। কিন্তু এর আগেই লোহাগাড়ায় জমে উঠেছে ঈদ বাজার। এখন জ্যৈষ্ঠের তীব্র তাপদাহ বিরাজ করছে। এরপরও ক্রেতারা নেমে পড়েছেন ঈদ কেনাকাটায়। ক্রেতাদের ভিড়ে বিক্রেতাদের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক। শেষ মুহূর্তে পছন্দের কাপড় ফুরিয়ে যাবে, দামও থাকবে চড়া। তাই মধ্য রোজার আগে থেকে কেনাকাটা শুরু করেছেন তারা।
এদিকে ক্রেতাদের কাছে টানার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন ব্যবসায়ীরাও। ক্রেতাদের প্রতি লক্ষ্য রেখে দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন পোশাক ও অলংকারে সাজানো হয়েছে লোহাগাড়ার শপিংমলগুলো। বর্ণিল আলোক সজ্জায় মার্কেট গুলোকে সাজানো হয়েছে নতুন করে।

এবার গরমের মাত্রা বেশি থাকায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দোকানগুলোতে ভিড় একটু বেশি ক্রেতাদের। তবে সাধারণ মানের দোকান গুলোতেও মানুষের কমতি নেই। এসব দোকানে এখনই ক্রেতা উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত শপিংমল, সবখানে চলছে কেনাকাটা।
দেশীয় জামদানি, টাঙ্গাইল ও তাঁতের নতুন ডিজাইনের শাড়িসহ নারীদের বিভিন্ন পোশাক বিক্রি হচ্ছে ধুমধারাক্কা। ফ্যাশনের পাশাপাশি ঐতিহ্যতেও গুরুত্ব দিচ্ছেন নারীরা। আর প্রচুর কালেকশনের পাশাপাশি দাম এখনো কম থাকায় খুশি তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, লোহাগাড়ার প্রতিটি মার্কেটে উপচেপড়া ভিড়। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষের পদচারণায় মুখর প্রতিটি মার্কেট। এরমধ্যে তরুণ-তরুণীদের ভিড় সবচেয়ে বেশি। তরুণীরা কাপড় কিনে তাতে বুটিকস শপ থেকে পছন্দের নকশা তৈরি করাচ্ছেন। ফ্যাশন সচেতন রুচিশীল ছেলেরাও পিছিয়ে নেই। তারাও ছুটছেন সমানে।
লোহাগাড়া উপজেলা সদর বটতলী শহরসহ প্রতিটি ইউনিয়নের বাজারে রয়েছে একাধিক মার্কেট। লোহাগাড়া সদরে হাজী বদিউর রহমান মার্কেট, আইস পার্ক শপিং মল, লোহাগাড়া শপিং সেন্টার, স্টার সুপার মার্কেট, সুপার মার্কেট, কর্ণফুলী সিটি, মোস্তফা সিটি, চৌধুরী বেষ্ট প্লাজা, নিউ মার্কেট, এম. কে শপিং সেন্টার, এম. রহমান মার্কেট এবং পদুয়া তেওয়ারী হাটের সিকো মার্কেট, শপিং কমপ্লেক্স, সেভেন ষ্টার মার্কেটে বেচাবিক্রি জমে উঠেছে।
জানা যায়, গুজরাটি চিকেন ব্রান্ডের কাপড় প্রতি গজ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়, জয়পুরী কটন ৪৭০ থেকে ৫০০, সিল্কের কাশ্মীরি কাতান ৩০০ থেকে ৩৫০, বোটা জর্জেট ১৮০ থেকে ২০০, মুম্বাই নেট ৫০০ থেকে ৫৫০, স্টোন নেট ৪৫০ থেকে ৫০০, ভেলভেট ৯০০ থেকে ১ হাজার ৩০০, বোম্বে বুটিকস ৭০০ থেকে ৭৫০ এবং দিল্লি কটন ৬৫০ থেকে ৮৫০ টাকা।
বিক্রেতারা জানান, প্রতি বছর ক্রেতাদের পছন্দের ধরন পাল্টাচ্ছে। সেইসঙ্গে বদলাচ্ছে চাহিদার হিসাব-নিকাশ। এবার লিনেন, সুতি, জর্জেট, কাতান, জামদানি কাপড়ের প্রতি বেশি আগ্রহ ক্রেতাদের। এবার বাজারে আসা নতুন ডিজাইনের মধ্যে রয়েছে বাহুবলী ক্রেজ, লেহেঙ্গা ও সারারা।
স্টার সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী সাত্তার সিকদার জানান, এখানে ঈদের সব ধরনের পোশাক পাওয়া যায়। ক্রেতারা চাইলে পাইকারি দোকানগুলোতেও খুচরা ঈদের পোশাক কিনতে পারেন। প্রতিবারের মতো ঈদে আমরা সব শ্রেণির ক্রেতার চাহিদা পূরণ করতে চাই।
বিক্রেতারা জানান, প্রতি গজ লিনেন কাপড় বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা। জর্জেট কাপড় ১৩০ থেকে ১৫০ ও ভারতীয় কাতান ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। জামদানি কাপড় বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।
তবে ক্রেতাদের অনেকের অভিযোগ বড় মার্কেটে দাম নিয়ে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। ছোট মার্কেটে একই পোশাকের যে দাম, বড় মার্কেটে তার দাম নেয়া হচ্ছে অনেক বেশি। এজন্য তাদের অনেকে ছোট মার্কেট থেকে পোশাক কিনছেন।
কলাউজান এলাকা থেকে আসা তছলিমা বেগম নামে এক ক্রেতা বলেন, ছোট মার্কেটগুলোতে দাম এখনো যৌক্তিক। তাই দাম নিয়ে খুব একটা দর কষাকষি করতে হচ্ছে না। তিনি বলেন, বাচ্চাদের জন্য বেশি কেনা হয়, বড়দের চাইতে। ওদের চাওয়া পাওয়াটা আমাদের কাছে অনেক বড়।
লোহাগাড়া থানা সূত্রে জানা গেছে, ক্রেতারা ঈদ বাজার নির্বিঘেœ করতে বটতলী মোটর ষ্টেশনে একটি পুলিশী টিম সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে।