ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | চট্টগ্রামে ২১ প্লান্টে সক্ষমতার এক চতুর্থাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন

চট্টগ্রামে ২১ প্লান্টে সক্ষমতার এক চতুর্থাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন

ফাইল ছবি

নিউজ ডেক্স : ১০ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের গ্রাহকদের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১০৫৪ মেগাওয়াট। কিন্তু এইদিন চট্টগ্রামের ২১টি বিদ্যুৎকেন্দ্রে পিক আওয়ারে উৎপাদন হয়েছে মাত্র ৫৯৭ মেগাওয়াট। প্রয়োজনীয় অবশিষ্ট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিড থেকে নিয়ে মেটাতে হয়েছে চাহিদা। অথচ সরকারি-বেসরকারি এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের সক্ষমতা রয়েছে ২৩৮২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের।

পিডিবির তথ্য মতে, ১০ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী পাড়ের ৫৪ মেগাওয়াট সক্ষমতার জোডিয়াক পাওয়ারে পিক আওয়ারে সক্ষমতার সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। বাকি ২০টির মধ্যে পিকআওয়ারে রিজার্ভ দেখিয়ে ৪টিতে উৎপাদন বন্ধ ছিল। লো-ডিমান্ড থাকায় কম উৎপাদন হয়েছে ৬টিতে। গ্যাস সংকট দেখিয়ে দুটি, মেরামত জটিলতায় দুটি এবং ইটিপি জটিলতায় পুরোপুরি বন্ধ ছিল একটি। আর বাকি ৫টাতে কম-বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগ বর্তমানে নিজস্ব ব্যবস্থাপনার ক্যাপটিভ পাওয়ার ব্যবহার করছে। যে কারণে গ্রিড থেকে শিল্প-কারখানায় বিদ্যুতের চাহিদা কমেছে। আবার শীতকাল হওয়ার কারণেও ব্যবহার কমেছে বিদ্যুতের। এতে বাধ্য হয়েই উৎপাদন বন্ধ রাখতে হচ্ছে। তবে বিদ্যুৎখাতে সরকারের ব্যয় কমছে না। চাহিদা কমার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন না হলেও বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে নির্ধারিত হিসেবে ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয় পিডিবিকে। আবার ১০ ডিসেম্বর ত্রিপুরা থেকে ৯০ মেগাওয়াট এবং ভেড়ামারা এইচভিডিসির (হাই ভোল্টেজ ডাইরেক্ট কারেন্ট) মাধ্যমে ৬৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি হয়েছে ভারত থেকে। পিডিবির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১০ ডিসেম্বরের মতো চট্টগ্রামে ৯ ডিসেম্বর ১১৭৪ মেগাওয়াট, ৮ ডিসেম্বর ১১৭৫ মেগাওয়াট, ৭ ডিসেম্বর ১০৯৭ মেগাওয়াট এবং ৬ ডিসেম্বর ১১৪৪ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা ছিল। এর বিপরীতে ৯ ডিসেম্বর ৯৪৭ মেগাওয়াট, ৮ ডিসেম্বর ৮৯৫ মেগাওয়াট, ৭ ডিসেম্বর ৮৯০ মেগাওয়াট এবং ৬ ডিসেম্বর ৭১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে চট্টগ্রামের ২১ বিদ্যুৎকেন্দ্রে।

পিডিবির তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ১০ ডিসেম্বর রিজার্ভ দেখানো চট্টগ্রামের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মধ্যে ২৫ মেগাওয়াট রাউজান পাওয়ার প্লান্ট, ১০৫ মেগাওয়াট বারাকা শিকলবাহা, ১০০ মেগাওয়াট জুলধা-ওয়ান একর্ন পাওয়ার প্লান্ট এবং ১০০ মেগাওয়াট জুলধা-টু একর্ন পাওয়ার প্লান্টে পিক আউয়ারে কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়নি। আবার ‘লো ডিমান্ড’ দেখিয়ে ৫০ মেগাওয়াট পতেঙ্গা বারাকা পাওয়ার প্লান্টে পিক আওয়ারে ২৫ মেগাওয়াট, ১০২ মেগাওয়াট সক্ষমতার দোহাজারী কালিয়াইশ পিকিং পাওয়ার প্লান্টে ৫১ মেগাওয়াট, ১০০ মেগাওয়াট জুলধা-থ্রি একর্ন পাওয়ার প্লান্টে ১০ মেগাওয়াট, ৩০০ মেগাওয়াটের আনোয়ারা ইউনাইটেড পাওয়ার প্লান্টে ২২৫ মেগাওয়াট, ১১০ মেগাওয়াট বারাকা কর্ণফুলী পাওয়ার প্লান্টে ৩৪ মেগাওয়াট এবং ১১৬ মেগাওয়াটের আনলিমা এনার্জি লিমিটেড পাওয়ার প্লান্টে ৫১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে।

শিকলবাহা পিকিং পাওয়ার প্লান্টের ব্যবস্থাপক পিডিবির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কামরুদ্দীন আহমদ বলেন, একদিকে মেরামত সংক্রান্ত কারণে আমাদের প্লান্ট দুটি বন্ধ রয়েছে। আবার গ্যাসের সংকটও রয়েছে। সবমিলিয়ে শীতকালের কারণেও চাহিদা কম। যে কারণে কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র পিকআওয়ারে বন্ধ থাকছে কিংবা কম উৎপাদন করছে। তিনি বলেন, দেশের পুরো বিদ্যুৎ সঞ্চালনের বিষয়টি কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। চট্টগ্রামে কম উৎপাদন হলেও তাতে কোনো সমস্যা হয় না। ন্যাশনাল গ্রিড থেকে সারাদেশে চাহিদামাফিক সরবরাহ দেওয়া হয়।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিডিবির আরেক কর্মকর্তা বলেন, বেসরকারি যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্র পাওয়ার জেনারেশনে রয়েছে, তারা উৎপাদন করলেও লাভ, না করলেও লাভ। কারণ তারা বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নির্ধারিত চার্জ পান। একইসাথে বাধ্যতামূলকভাবে সক্ষমতার উপর নির্ধারিত হারে ক্যাপাসিটি চার্জ পেয়ে থাকেন। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন না করলেও পাওয়ার প্লান্টগুলোর কোনো ক্ষতি নেই। -দৈনিক আজাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!