নিউজ ডেক্স : জনসাধারণকে ভোটার হতে উদ্বুদ্ধ করতে স্বাধীনতার মাসের প্রথম দিনকে অর্থাৎ ১ মার্চ জাতীয়ভাবে ভোটার দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সোমবার (২ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) এন এম জিয়াউল আলম সাংবাদিকদের জানান, আজকের মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রতি বছরের ১ মার্চকে ‘জাতীয় ভোটার দিবস’হিসেবে ঘোষণা এবং দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এ বিষয়ক পরিপত্রে ‘খ’ ক্রমিকে উহা অন্তর্ভুক্তিকরণের একটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এর আগে ১ মার্চ ভোটার দিবস পালনের ‘নীতিগত সিদ্ধান্ত’ চূড়ান্ত করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইসির ১৫তম কমিশন সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এমন নুরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম ও শাহাদাত হোসেন চৌধুরী প্রতি বছর ১ মার্চকে ভোটার দিবস পালনের বিষয়ে একমত হন।
৫ সদস্যের কমিশনের মধ্যে ওই সভায় উপস্থিত তিনজন ঐক্যমত হওয়ায় তা কমিশনের সিদ্ধান্ত হিসেবে গৃহীত হয়েছে।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বরের কমিশন সভায় ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ভোটার দিবস বিষয়ে একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। এতে ভোটার দিবস পালনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রাথমিক বিবেচনায় ১ জানুয়ারি ও ৭ জুলাই র প্রসঙ্গ তুলে ধরেন।
এরপর সভায় নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী জানান, যেহেতু প্রতি বছর ১ জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ বছর হন তারা ভোটার হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন, তাই ১ জানুয়ারিকে ভোটার দিবস করা যেতে পারে।
সচিব ওই সভায় জানান, ১ জানুয়ারি তারিখে পাঠ্যপুস্তক দিবস পালন করা হয়।
অপর নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম জানান, যে তারিখে ভোটারের প্রথম তথ্য নিবন্ধন করা হয় সে তারিখেই ভোটার দিবস ঘোষণা করা যথাযথ হবে।
নির্বাচন কমিশনাররা জানান, ভোটার দিবস পালনের মাধ্যমে ভোটার তালিকা হালনাগাদের প্রচার-প্রচারণার গতি বাড়বে। ভোটার দিবস পালনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অনুমোদন নিতে হবে।
কমিশন সভার কার্যপত্রে দেখা যায়, ১ মার্চকে ভোটার দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়ার দ্রুত তা সরকারের অনুমোদন নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাতে বলা হয়েছে।
ভোটার হতে নাগরিকদের উদ্বুদ্ধ করতে বছরের একটি দিনকে ভোটার দিবস পালনে গত ২৭ নভেম্বর কমিশনের ১৩ সভায় নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। এ ধারবাহিকতায় ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন কমিশনের ১৪তম সভায় দুটি তারিখ উপস্থাপন করা হয়।
এতে বলা হয়- মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালের ৭ জুলাই বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠিত হয়। আর ভোটার হওয়ার যোগ্যতা নির্ধারণের ক্ষেত্রে ১ জানুয়ারিতে ব্যক্তির বয়স ১৮ বছর হচ্ছে কি না- তা বিবেচনা করে ইসি। এ কারণেই ১/১ অথবা ৭/৭- তারিখ দুটি নিয়ে ইসির প্রাথমিক আগ্রহ ছিল।
যে কোনো দিবস ঘোষণায় সরকারের সায় নিতে মন্ত্রিসভার অনুমোদন লাগে। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর গুরুত্ব বিবেচনায় ‘ক’, ‘খ’ ও ‘গ’ শ্রেণির যে কোনো একটি দিবস হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে পরিপত্র জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
জাতীয়ভাবে এ দিবস কীভাবে উদযাপন করা হবে, সরকারের পক্ষ থেকে বাজেট কতটুকু বরাদ্দ দেয়া হবে, তা বিবেচনায় যে কোনো একটি শ্রেণিতে রাখা হয় ওই দিবসকে।