ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | হাটহাজারী বড় মাদ্রাসায় ছাত্রদের বিক্ষোভ, ভাঙচুর

হাটহাজারী বড় মাদ্রাসায় ছাত্রদের বিক্ষোভ, ভাঙচুর

নিউজ ডেক্স : হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম (বড় মাদ্রাসা-এর ছাত্ররা ৫ দফা দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। আজ বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা) শিক্ষার্থীদের এ বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল।

মাদ্রাসার ফটক বন্ধ করে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে তারা। এ সময় বিক্ষোভকারীরা মাদ্রাসার সহকারী মহাপরিচালক মাওলানা শেখ আহমদ, শিক্ষক নুরুল ইসলাম জেহাদী ও মাওলানা আনাস মাদানীর দপ্তর ভাঙচুর করে।

বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে মাঝে মাঝে হেফাজত ইসলামের আমির মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফীর পুত্র হেফাজতের প্রচার সম্পাদক ও মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষা পরিচালক মাওলানা আনাস মাদানীর অপসারণ দাবি করা হয়।

বড় মাদ্রাসায় বিক্ষোভের সংবাদ পেয়ে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার রশিদুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মশিউদৌল্লাহ রেজাসহ আইনশৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে অবস্থান গ্রহণ করেন।

জানা যায়, আজ দুপুরের নামাযের পর শিক্ষার্থীরা হেফাজতের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষা পরিচালক মাওলানা আনাস মাদানীর অপসারণসহ ৫ দফা দাবিতে সকল ফটক বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করে।

এ সংবাদ পেয়ে প্রথমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ রুহুল আমিন ঘটনাস্থলে ছুটে যান কিন্তু মাদ্রাসার ফটক বন্ধ থাকায় তিনি ভিতরে প্রবেশ করতে পারেননি।তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি তিনি আইনশৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করেন।

সংবাদ পেয়ে অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকায় আইনশৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উর্ধ্বতম কর্মকর্তাসহ সদস্যরা মাদ্রাসার সামনে অবস্থান গ্রহণ করেন কিন্তু তারা মাদ্রাসার ফটক বন্ধ থাকায় ভিততে প্রবেশ করতে পারেননি।

বিক্ষোভের কারণে চট্টগ্রাম-নাজিরহাট খাগড়াছড়ি মহাসড়কে গাড়ি চলাচলে কোনো সমস্যা না হলেও চারদিকে মাদ্রাসায় গোলযোগের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে আতংক দেখা দেয়।

বিক্ষোভকারীরা মাদ্রাসার ভিতরে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার জন্য বার বার মাইকিং করে এবং মাদ্রাসার বাহিরে অবস্থানকারী উৎসুক জনতাকে শান্ত থাকার জন্য আহ্বান জানায়।

বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে ৫ দফা দাবি সম্বলিত একটি প্রচারপত্র বিতরণ করা হলেও সেখানে কারা বা কাদের পক্ষ থেকে এ প্রচারপত্র বিতরণ করা হয়েছে তার কোনো নাম ছিল না।

তাদের ৫ দফা দাবির মধ্যে প্রথম দাবি হলো মাওলানা আনাস মাদানীকে অনতিবিলম্বে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করা। দ্বিতীয় দাবি ছাত্রদের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বাস্তবায়েন সকল প্রকার হয়রানিমূলক কার্যক্রম বন্ধ করা। তৃতীয় দাবি আল্লামা শাহ আহমদ শফী সাহেব মাযূর এবং অক্ষম হওয়ার কারণে পরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে উপদেষ্টা বানানো। চতুর্থ দাবি ওস্তাদদেরকে মাদ্রাসা থেকে বিয়োগ-নিয়োগ পরিপূর্ণভাবে সূরার নিকট হস্তান্তর করা। পঞ্চম দাবি বিগত শূরার হক্কানী আলেমদেরকে পুনরায় নিয়োগ এবং সূরার মধ্যে দালালদেরকে বহিষ্কার করা।

তাদের এসব দাবি মানা না হলে পরবর্তী কর্মসূচি হিসাবে মাদ্রাসার সমস্ত একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ করা হবে, আদর্শিক এ আন্দোলনে বাধা সৃষ্টি হলে সমস্ত কওমি মাদ্রাসায় আন্দোলনের দাবানল জ্বলে উঠবে, তার জন্য জেলজুলুম সহ যেকোনো ত্যাগের জন্য বিক্ষোভ প্রদর্শনকারীরা তৈরি থাকবে বলে প্রচারপত্রে উল্লেখ করা হয়।

এখন পরিস্থিতি থমথমে থাকলেও মহাসড়কে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।বিক্ষোভকারীরা মাদ্রাসার ভিতরে অবস্থান করায় দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ আলম ৫ দফা দাবিতে হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার একদল শিক্ষার্থীর বিক্ষোভ প্রদর্শনের কথা স্বীকার করে বলেন, সম্ভাব্য অপ্রীতিকর ঘটনা রোধ করতে আইনশৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছে। দৈনিক আজাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!