Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ‘সিনহাকে হত্যার আগে প্রদীপের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয় লিয়াকতের’

‘সিনহাকে হত্যার আগে প্রদীপের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয় লিয়াকতের’

নিউজ ডেক্স : সিনহা হত্যাকাণ্ড ছিল পূর্বপরিকল্পিত। কক্সবাজারের টেকনাফের মেরিন ড্রাইভের তল্লাশিচৌকিতে সিনহাকে গুলি করে হত্যার আগে ওসি প্রদীপ কুমার দাশের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার কথা বলেছেন পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী।

মুঠোফোন কল রেকর্ড, সরেজমিন অনুসন্ধান ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। ওসি প্রদীপের নেতৃত্বে ১৫ আসামি পরিকল্পিতভাবে সিনহাকে হত্যা করেছেন।

সোমবার কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার অষ্টম দফার প্রথম দিনে আসামিপক্ষের আইনজীবীর জেরার মুখোমুখি হন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র‍্যাব-১৫ কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম। জেরার জবাবে তিনি এসব কথা তুলে ধরেন।

খাইরুল ইসলামকে জেরা করেন প্রদীপ কুমারের জন্য নিযুক্ত আইনজীবী রানা দাশগুপ্ত। রানা দাশগুপ্ত মামলার এজাহার, তদন্ত প্রতিবেদন, সাক্ষীদের দেওয়া সাক্ষ্য নিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জেরা করেন। সকাল সোয়া ১০টায় শুরু হওয়া এই জেরা মাঝখানে এক ঘণ্টার বিরতি দিয়ে চলে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। আদালত পরিচালনা করেন জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল।

জেরার সময় আদালতের কাঠগড়ায় ছিলেন সিনহা হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি প্রদীপ কুমার, লিয়াকত আলীসহ ১৫ আসামি। সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে তাঁদের আদালতে নেওয়া হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও পিপি ফরিদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, অষ্টম দফার প্রথম দিনে আদালতের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জেরা করেন রানা দাশগুপ্ত। জেরার জবাবে তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, সিনহা হত্যা ছিল পূর্বপরিকল্পিত।

হত্যাকাণ্ডের আগে প্রদীপের সঙ্গে লিয়াকতের একাধিকবার মুঠোফোনে কথা হয়েছে। সেই কল রেকর্ড পর্যালোচনা, সরেজমিন ঘটনার অনুসন্ধান এবং প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলে তিনি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। ঘটনার যা সত্য, তাই তিনি প্রতিবেদনে তুলে ধরেছেন। কাল মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জেরা করবেন আসামিপক্ষের আরও চার আইনজীবী। আসামিপক্ষের আইনজীবী আছেন অন্তত ১৩ জন।

পিপি ফরিদুল আলম বলেন, ১৭ নভেম্বর আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়। এর আগে ৭ দফায় মামলার ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ৬৫ জনের সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হয়।

আইনজীবীরা বলেন, প্রথম দফায় গত ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত তিন দিনে এ মামলার সাক্ষ্য দেন দুজন। তাঁরা হলেন মামলার বাদী ও সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস এবং ২ নম্বর সাক্ষী সাহেদুল ইসলাম সিফাত। দ্বিতীয় দফার ৪ দিনে ৪ জন, তৃতীয় দফার ৩ দিনে ৮ জন, চতুর্থ দফার ২ দিনে ৬ জন, পঞ্চম দফার ৩ দিনে ১৫ জন এবং ষষ্ঠ দফায় ৩ দিনে ২৪ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। সপ্তম দফার তিন দিনে সাক্ষ্য দিয়েছেন ছয়জন।

আদালত সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি (টেকনাফে দুটি, রামুতে একটি) মামলা করে। ঘটনার পাঁচ দিন পর, অর্থাৎ ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। চারটি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র‍্যাব।

২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর প্রদীপ কুমারসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র‍্যাব-১৫ কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম। -প্রথম আলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!