Home | লোহাগাড়ার সংবাদ | লোহাগাড়ায় ভালো নেই প্রবাসীদের পরিবারগুলো

লোহাগাড়ায় ভালো নেই প্রবাসীদের পরিবারগুলো

149

এলনিউজ২৪ডটকম : প্রবাসে ধরপাকড় ও কর্মহীনতায় আয় কমার প্রভাব পড়েছে লোহাগাড়ায় কোরবানির ঈদে। পূর্বের কোরবানির ঈদে প্রবাসীর পরিবারগুলো একক পশু কোরবানি দিলেও চলতি কোরবানিতে প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভাগে কোরবানি দিচ্ছে প্রায় পরিবার। প্রবাসে আয় কমার পাশাপাশি বাজারে কোরবানি পশুর বাড়তি দামকেও এ জন্য দায়ী করছেন সচেতন মহল।

জানা যায়, লোহাগাড়ার অধিকাংশ পরিবারের লোকজন মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছে। প্রায় প্রবাসীর পরিবার প্রতিবছর একক পশু কোরবানি দিয়ে এসেছে। কয়েক দশক ধরেই এ ধারা চলে এলেও চলতি বছর তাতে ঘটেছে অন্যরকম। হাতেগোণা কয়েকজন ছাড়া বাকিরা অংশীদার ভিত্তিতে কোরবানি দিচ্ছেন।

আরো জানা যায়, মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব, আরব আমিরাতসহ (দুবাই) প্রায় সব দেশেই বৈধ-অবৈধ সব ধরনের প্রবাসীরা কাজ ও মুজুরি নিয়ে বেকায়দায় রয়েছে। এছাড়া সৌদি আরব ও দুবাইতে কাজের পারমিটের (আকামা) মেয়াদ বাড়াতে কপিলরা বিশাল অংকের টাকা দাবি করছেন। এতে অনেক প্রবাসীর জন্য এখান থেকেই টাকা পাঠাতে হচ্ছে।

সৌদি আরব প্রবাসী পুটিবিলার কামাল উদ্দিন ও আমিরাবাদের আবদুল আলিমসহ আরও বেশ কয়েকজন জানান, কাজের ধরন ভেদে একেকটি ভিসা নবায়ন করতে ৪ হাজার থেকে ১২ হাজার রিয়াল (সৌদি বিনিময় অর্থ) দাবি করছেন কপিলরা। কপিল থেকে ভিসা নিয়ে বাইরে ফ্রি (যেখানে ইচ্ছে কাজ করা) কাজ করা ভিসাধারিরা এ ভোগান্তিতে পড়েছেন। সৌদি আরবে বৈধ অভিবাসীর মাঝে এ রকম ভিসাধারী লোক বেশি। আর যারা ওমরাহ করতে এসে চুরি করে থেকে গেছেন তাদের এ ভোগান্তি না থাকলে আয়হীন থাকছেন তারা। এক সময় ভালো আয় করলেও এখন প্রতিটি কাজে সৌদি স্থানীয় নাগরিকরা অংশ নেয়ায় তাদের পর্যাপ্ত আয়ে ছেদ পড়েছে।

একই অবস্থার কথা জানান দুবাই প্রবাসী পদুয়ার জানে আলম। ভিসাধারী অনেক বাঙালি এখানে আগে সরকারের কিছু কাজের এজেন্ট হিসেবে কাজ করতো। বিগত বছর থেকে দুবাইয়ের স্থানীয়রা এসব কাজ ভাগিয়ে নেয়ায় হাজার হাজার বাঙালির আয় কমেছে।

চলতি বছরের শুরু থেকে মালয়েশিয়াসহ অন্য যেসব দেশে ভিসাহীন অভিবাসী রয়েছে তারা ধরপাকড় ও কর্মহীনতায় ভুগছে। ফলে তারা পরিবারকে আগের মতো আর্থিক সহযোগিতা করতে ব্যর্থ হচ্ছেন।

সচেতন মহল ধারণা করছেন, ওমরাহ কিংবা অন্যভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবৈধ প্রবাসী হিসেবে প্রবাস খাটছেন লোহাগাড়ার প্রায় ২০ হাজার মানুষ। সবাই কম-বেশি টাকা দেশে পাঠান। কিন্তু চলতি বছর সেই ধারাবাহিকতায় একটু ভাটা পড়েছে বলে জানা গেছে।

গরু ব্যবসায়ী আকমল হোসেন জানান, লোহাগাড়া উপজেলার সিংহভাগই প্রবাসী। প্রবাসী পরিবারগুলো প্রায় পরিচিত। পূর্বের কোরবানিতে এসব পরিবার ছোট বা মাঝারি সাইজের গরু একক কোরবানির জন্য কিনেছে। কিন্তু এ বছর বাজারে পর্যাপ্ত পবাদিপশু থাকলেও গত বছরের চেয়ে এবার কোরবানি পশুর দামে রেকর্ড ভেঙেছে। আগে যে টাকায় একটি ছোট বা মাঝারি গরু কেনা যেত এ বছর সে টাকায় একটি পশুর সাতভাগে দু বা তিনভাগই পাওয়া যাচ্ছে। ফলে অংশীদারি কোরবানির সংখ্যা বাড়ছে আর পশু বিক্রির হার কমছে। বাড়তি দাম ও প্রবাসে আয় কমায় এ পরিস্থিতি হচ্ছে বলে ধারণা তারও।

উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে একই অবস্থা বিরাজ করছে বলে জানান সেখানকার সচেতন মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!