ব্রেকিং নিউজ
Home | ব্রেকিং নিউজ | লোহাগাড়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চুরির হিড়িক, সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানে নৈশপ্রহরী নেই

লোহাগাড়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চুরির হিড়িক, সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানে নৈশপ্রহরী নেই

50

এলনিউজ২৪ডটকম : লোহাগাড়া উপজেলায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চুরির হিড়িক পড়েছে। গত এক মাসে পৃথক একাধিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে স্ব স্ব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার লোহাগাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। উপজেলায় সর্বমোট ১০৩টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তার মধ্যে ২১টিতে নৈশপ্রহরী আছে।

গত ১৪ মার্চ রাতে লোহাগাড়া মজিদের পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোরের বাউন্ডারী ওয়ালের গেইট ও অফিস কক্ষে তালা ভেঙ্গে স্টীলের একটি আলমিরা নিয়ে গেছে। আলমিরাতে রক্ষিত বিদ্যালয়ের গুরত্বপূর্ণ কাগজপত্র অফিস কক্ষের মেজেতে এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে। এ ব্যাপারে ১৫ মার্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। একইদিন লোহাগাড়া আইডিয়াল স্কুলে চুরির ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হামিদুল হোসাইন লোহাগাড়া লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লোহাগাড়া থানার ডিউটি অফিসার।

অপরদিকে, গত ১১ মার্চ রাতে উপজেলা সদর ফয়েজ শফি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোরেরা জানালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে। আলমিরা ভেঙ্গে ফাইলপত্র তছনছ করে, সৌর বিদ্যুতের বড় ১টি ব্যাটারী, ১টি বৈদ্যুতিক পাকাসহ বেশ কিছু জিনিপত্র নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে পরদিন ১২ মার্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেব প্রসাদ বড়–য়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

গত ৮ এপ্রিল রাতে একই বিদ্যালয়ে চুরির ঘটনা ঘটেছে। পরদিন সকালে বিদ্যালয়ের এসে দেখতে পান সিলিং ফ্যানগুলো গুলো নেই। এছাড়াও বেশ কিছু ব্যবহার্য জিনিসপত্র ও গুরত্বপূর্ণ ফাইলপত্র কে কা কারা নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে পরদিন ৯ মার্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেব প্রসাদ বড়–য়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

গত ৬ এপ্রিল তৈয়ব আশরাফ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চুরির ঘটনা ঘটেছে। পরদিন সকালে বিদ্যালয়ে এসে দেখতে পান ৩টি ফ্যান, ১টি ব্যাটারী, ১টি প্যানেল ও গুরুত্বপূর্ণ ফাইলপত্র চোরেরা নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে গত ৯ এপ্রিল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুবোধ কান্তি সিকদার লোহাগাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

এছাড়াও, গত ৩ এপ্রিল উপজেলা সদর ফয়েজ শফি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হল রুমে উপজেলা শিক্ষা অফিসের মালামাল চুরি হয়েছে। চোরেরা ২০১৭ ও ২০১৮ ইং সনের ৫ম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষার উত্তর পত্র, ২টি টাইপ মেশিন, ২০১৬-২০১৭ সালের ৪০-৫০ বান্ডি বই (প্রতি বান্ডিলে ৫০-১০০টি বই), ৪টি সিলিং ফ্যান ও বেশ কিছু পুরনো জিনিসপত্র নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে ৪ মার্চ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আকরাম হোসেন লোহাগাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

জানা যায়,  গত ১০ এপ্রিল লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চুরির ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম- ১৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে একবার দপ্তরী কাম নৈশপ্রহরী নিয়োগের প্রক্রিয়া চালু হয়েছিল। তদানীন্ত শিক্ষা অফিসার মেরাজ উদ্দিন একটি স্কুলের শিক্ষিকার কাছ থেকে ঘুষগ্রহণের সময় দুদক হাতেনাতে তাকে গ্রেফতার করে। তিনি চাকুরিচ্যুত হন। ফলে দপ্তরী কাম নৈশপ্রহরী নিয়োগ বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৭ সালের দিকে পুণরায় এ প্রক্রিয়া চালু হয়। দপ্তরী কাম নৈশপ্রহরী নিয়োগের কার্যক্রমকে হাতিয়ার হিসাবে গ্রহণ করে একটি মহল ব্যাপকহারে বেকার যুবকদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা গ্রহণ করে এবং তদানীন্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব আলম ও শিক্ষা অফিসার মানবেন্দ্র নারায়নকে প্রলুব্ধ করতে অপচেষ্টা চালায়। কিন্তু ইউএনও এবং শিক্ষা অফিসার তাকে সাই দেননি বলে এলাকার একটি মহল এ সংবাদদাতাকে জানিয়েছেন। ফলে তাদের বিরুদ্ধে নানা অপবাদ দেয়া হয় এবং উভয়ে বদলী হয়ে যান। তখন থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। মেরাতন চুরির ঘটনায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। অনতিবিলম্বে দপ্তরী কাম নৈশপ্রহরী নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!