ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | মির্জা ফখরুল কখন যে রাজাকারদের মুক্তিযোদ্ধা বলে বসেন সেই শঙ্কা তথ্যমন্ত্রীর

মির্জা ফখরুল কখন যে রাজাকারদের মুক্তিযোদ্ধা বলে বসেন সেই শঙ্কা তথ্যমন্ত্রীর

নিউজ ডেক্স : বেগম খালেদা জিয়াকে নারী মুক্তিযোদ্ধা বানাতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কখন যে রাজাকারদের মুক্তিযোদ্ধা বলে বসেন সেই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি।

তিনি বলেন, “রাজাকাররাও আসলে মুক্তিযোদ্ধা কারণ তারা পাকিস্তানের পক্ষে যুদ্ধ করেছেন। সেই শংকার মধ্যেই আছি মির্জা ফখরুল কখন আবার তাদের মুক্তিযোদ্ধা বলে বসেন। তাঁর কাছে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞাটা কি আমি জানি না।”

আজ শনিবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের রাজারহাট বাজারে উপজেলার চারটি ইউনিয়ন নিয়ে নবগঠিত ‘দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া’ থানার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এ কথা বলেন। এরআগে ফিতা কেটে নতুন থানার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী।

এসময় চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জাকির হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার ইউনুসসহ পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে নারী মুক্তিযোদ্ধা দাবী করেছেন দলটির মহাসচির মির্জা ফখরুল, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলতে চাই, তিনি মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস পাকিস্তানিদের ক্যান্টনমেন্টেই পাকিস্তানিদের আতিথেয়তায় ছিলেন। একেবারে নতুন বউয়ের আদরে তাকে আতিথেয়তা দেয়া হয়েছিল। এখন হঠাৎ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব আবিষ্কার করলেন খালেদা জিয়া নাকি নারী মুক্তিযোদ্ধা!”

তিনি বলেন, “মির্জা ফখরুল এই কথা বলার পর, পুলিশের আইজি এবং ঢাকার পুলিশ কমিশনার যখন সমালোচনা করলেন তখন বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং বিএনপি’র অন্যান্য নেতারা পুলিশের আইজি এবং ঢাকার পুলিশ কমিশনারের অনেক সমালোচনা করলেন।”

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের প্রতি প্রশ্ন রেখে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “জিয়াউর রহমান দেশের কোন প্রচলিত আইন বলে সেনাবাহিনী প্রধান হয়ে সেনাবাহিনীর পোশাক পরে রাজনীতি করেছিলেন, বিএনপি গঠন করেছিলেন এবং রাষ্ট্রপতিও হয়েছিলেন?”

তিনি বলেন, “জিয়াউর রহমান সাহেব যদি সেনাবাহিনী প্রধান হয়ে দল করতে পারেন, রাজনীতি করতে পারেন, আবার রাষ্ট্রপতিও হয়ে যেতে পারেন তাহলে পুলিশের আইজি এবং ডিএমপি কমিশনার এই উদ্ভট কথার প্রতিউত্তরে যদি কিছু বলে থাকেন সেটি যথার্থই বলেছেন। একটি অসত্য উদ্ভট কথার জবাবে প্রত্যেক নাগরিকেরই বলার অধিকার আছে।”

সরকার বিদেশীদের কাছে ধর্না দিচ্ছে মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা তো কথায় কথায় বিদেশীদের কাছে দৌড় দেয়, কোনো কিছু হলেই বিদেশী রাষ্ট্রদূতদের ডেকে কথা বলে। এমনকি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব নিজে চিঠি লিখেছিলেন কংগ্রেসম্যানদের কাছে বাংলাদেশকে সাহায্য বন্ধ করার জন্য।”

তিনি বলেন, “তাদের নেত্রী খালেদা জিয়া বাংলাদেশকে যাতে সাহায্য বন্ধ করে দেয়, বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা যাতে বাতিল করে এজন্য চিঠি লিখেছিলেন। এজন্য নিজের নামে নিবন্ধ লিখেছেন ওয়াশিংটন টাইমসে। যারা কথায় কথায় বিদেশীদের কাছে দৌড় দেয় তারাই এসমস্ত উদ্ভট কথা বলতে পারে।”

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সরকারের ভিত জনগণের মধ্যে। এখানে কাউকে বিদেশীরা ক্ষমতায় বসিয়ে দিবে না। আমরা জনগণের ক্ষমতায় বলীয়ান, আমরা জনগণের ক্ষমতাতে বিশ্বাস করি। বিদেশীদের কাছে ক্ষণে ক্ষণে দৌড় দেয় বিএনপি এবং তাদের মিত্ররা।”

সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক উস্কানির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের দেশে বিভিন্ন সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য অপচেষ্টা হয়েছে। সেগুলো আমরা সবসময় কঠোর হস্তে দমন করেছি। কে হিজাব পরবে কিংবা পরবে না সেটি তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। সুতরাং এই নিয়ে বিতর্ক তৈরি করার কোনো সুযোগ নেই। কেউ যদি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করে সেটি আমরা কঠোর হস্তে দমন করব।”

দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া নতুন থানা স্থাপন প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রায় দুই বছর আগে প্রধানমন্ত্রী এখানে থানা স্থাপন করার সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন। প্রশাসনিক অন্যান্য ধাপগুলো অতিক্রম করে আজ থানার কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হতে যাচ্ছে।”

তিনি বলেন, “রাঙ্গুনিয়ার অন্য অংশের সাথে কর্ণফুলী নদী দ্বারা দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া বিভক্ত। এই এলাকায় ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষের বসবাস। রাঙ্গুনিয়া থানা থেকে এসে এখানে সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হতো। অপরাধীরা এখানকার পাহাড়ি এলাকায় পালিয়ে যেত। সেই কারণেই এখানে থানা স্থাপন করা অত্যন্ত দরকার ছিল, স্থানীয়দেরও দাবি ছিল।”

উল্লেখ্য, চল্লিশ কিলোমিটারের দুর্গম পাহাড় ও কর্ণফুলী নদী বেষ্টিত রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা, শিলক, কোদালা ও পদুয়া এই চারটি ইউনিয়নকে নিয়ে ‘দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া’ নামে আলাদা নতুন থানা গঠন করা হয়েছে। পাহাড় ও কর্ণফুলী নদী বেষ্টিত দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার বাসিন্দাদের যেকোনো ধরনের পুলিশি সেবা পেতে দুর্গম পথ ও নদী পাড়ি দিয়ে আসতে হয় রাঙ্গুনিয়া থানা সদরে। এখন সেই কষ্ট কমবে তাদের।

রাঙ্গুনিয়া সংসদীয় আসন থেকে একাধিকবার নির্বাচিত সাংসদ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়াকে আলাদা থানায় উন্নীতকরণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানা সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করে সরকার। ইতিমধ্যে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার জন্য ১ জন ওসি, ৩ জন এসআই, ৪ জন এএসআই, ১৮ জন কন্সটেবলসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!