Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | বাবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার দিনেই সড়কে নিথর পাঁচ ভাইয়ের প্রাণ

বাবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার দিনেই সড়কে নিথর পাঁচ ভাইয়ের প্রাণ

নিউজ ডেক্স : চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ার মালুমঘাট এলাকায় সবজিবোঝাই অজ্ঞাত পিকআপের চাপায় ঘটনাস্থলে একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছে আরও তিনজন। তন্মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

আহত তিনজনের একজন মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতাল, অন্যজন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। তবে পায়ে সামান্য আঘাত পেলেও অপরজন বাড়িতেই রয়েছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আজ মঙ্গলবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে নিজ এলাকা হাসিনা পাড়ার সামনে মহাসড়কের পূর্বাংর্শে মর্মান্তিক এই সড়ক দুর্ঘটনাটি ঘটে। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, এটি পরিকল্পিত একটি হত্যাকাণ্ড। কারণ তারা সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে ছিলেন না। হতাহতরা সড়ক থেকে অন্তত দুই ফুট দূরে এক কাতারে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু চকরিয়া থেকে কক্সবাজারগামী সবজিবোঝাই একটি অজ্ঞাত পিকআপ তাদেরকে মুহূর্তের মধ্যে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়।

এতে ঘটনাস্থলেই চারজন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর চমেকে আরো একজন নিহত হয়। আহত হয় আরো এক বোনসহ আরো তিনজন। পরিবার সূত্র জানায়, হতাহতদের মধ্যে সবাই একই পরিবারের সদস্য। নিহত ৫ জনই একে অপরের ভাই। একসঙ্গে একই পরিবারের এত সংখ্যক সদস্যকে হারিয়ে পুরো পাড়ায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

নিহতরা হলেন-চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট স্টেশনের কাছের হাসিনা পাড়ার মৃত সুরেশ চন্দ্র শীলের পাঁচ পুত্র- অনুপম শর্মা (৪৫), নিরূপম শর্মা (৪৩), দীপক শর্মা (৪০), চম্পক শর্মা (৩৮) ও শরণ শর্মা (২৬)। আহতরা হলেন-রক্তিম শর্মা (৩০), প্লাবন শর্মা (২৮) ও বোন মুন্নী শর্মা (৩৪)।

নিহতদের নিকটাত্মীয়রা জানান, নিহতদের বাবা সুরেশ চন্দ্র শীল মারা যান দশদিন আগে। সেই অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠান হওয়ার জন্য সব প্রস্তুতিও নেওয়া হয়। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তাদের প্রয়াত বাবার আত্মার শান্তি কামনায় আজ ভোরে বাড়ির কাছের নির্জন এলাকায় ধর্মীয় কার্য সম্পাদন করতে যান। তখন সবাই ছিলেন এক পোশাকে (সাদা কাপড়ে)। সেখানে তারা মহাসড়কের পূর্বাংশে সড়ক থেকে অন্তত দুই ফুট দূরে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে কারো জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ঠিক সেই মুহূর্তে চকরিয়া থেকে কক্সবাজারমুখী একটি সবজিবোঝাই পিকআপ তাদেরকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর বলেন,মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় একসঙ্গে এক পরিবারের ৫ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় পুরো ইউনিয়নে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে নিহতদের দাফন-কাফনের জন্য নগদ অর্থসহায়তা দেওয়া হয়েছে।

মহাসড়কের মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শাফায়েত হোসেন বলেন, ‘যখন দুর্ঘটনাটি সংঘটিত হয় তখন ছিল ভোরবেলা এবং দুর্ঘটনার স্থানটি অনেকটাই নির্জন এলাকা। তাই ঘাতক পিকআপটিকে এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে সেটি শনাক্ত এবং ঘাতক চালককে আটক করার চেষ্টা চলছে।

খবর পেয়ে নিহতদের বাড়িতে ছুটে যাওয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, বাবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার দিনে একসঙ্গে এত সদস্যের প্রাণহানি হৃদয় বিদারক। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়া হবে। -আজাদী অনলাইন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!