বান্দরবানে পর্যটকের ঢল

নিউজ ডেক্স : প্রকৃতির ছোঁয়া পেতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি খ্যাত বান্দরবানে ঢল নেমেছে পর্যটকদের। টানা তিন দিনের ছুটিতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে জেলার দর্শনীয় স্থানগুলো।

জেলা শহর সহ রুমা, থানচি, আলীকদম, রোয়াংছড়ি উপজেলার সবগুলো আবাসিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্ট হাউজ এবং সরকারি রেস্টহাউজগুলোর কোথাও কোনো রুম খালি নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলার অন্যতম পর্যটন স্পট নীলাচল, মেঘলা, চিম্বুক, শৈলপ্রপাত, নীলদিগন্ত, দেবতাকুম, নীলগিরি, বগালেক, ডিমপাহাড়, তমাতুঙ্গী, রেমাক্রী সবগুলো দর্শনীয় স্থানেই এখন পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়।

পর্যটকরা ছুটে বেড়াচ্ছেন কখনো নীলাচলের ভিউ পয়েন্ট, মেঘলা ঝুলন্ত সেতু, ক্যাবলকার, চিম্বুক পাহাড়ের দর্শনীয় স্থানগুলোতে, প্রান্তিক লেকের পানিতে প্যাডেল বোটে, সাঙ্গু নদীতে ইঞ্জিন বোটে। আবার কখনো ঘুরে বেড়াচ্ছেন পাহাড়ের প্রকৃতির গাছগাছালির মাঝে মনোরম পরিবেশে।

ভ্রমণকারী পর্যটক জিমি আহমেদ এবং তুহিনা আক্তার বলেন, প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বান্দরবান। এ যেন অন্যরকম ভালো লাগায় ছুঁয়ে যায় মনপ্রাণ। পর্যটন স্পটগুলোও খুবই সাজানো-গোছানো এবং নিয়মশৃঙ্খলার মধ্যে পরিচালিত হচ্ছে। তবে ক’দিনের ছুটিতে পর্যটকদের বাড়তি চাপে কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। আবাসিক হোটেলগুলোতে সিট পাওয়া যায়নি এবং যানবাহনের সংকটেও ভোগান্তি বাড়িয়েছে। কিন্তু সব ক্লান্তি দূর হয়ে গেছে প্রকৃতির স্পর্শে।

এদিকে ক’দিনের টানা ছুটিতে চিরচেনা বান্দরবান যেন সম্পূর্ণ বদলে গেছে। মনোরম শান্ত প্রকৃতির সৌন্দর্যময় বান্দরবান জেলা হয়ে পড়েছে লোকে লোকারণ্য। যানবাহনের জ্যাম এবং ব্যস্ত নগরীতে রুপ নিয়েছে জেলা শহর।

আবাসিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্টহাউজ এবং সরকারি রেস্টহাউজগুলোর কোথাও কোনো রুম খালি নেই। আবাসিক হোটেলগুলোতে রুম না পেয়ে রুমা, থানচি, রোয়াংছড়ি, আলীকদম উপজেলা সহ জেলা সদরের আশপাশের পাহাড়ি পল্লীগুলোতে পাহাড়িদের মাচাংয়ে অর্থের বিনিময়ে থাকার বিকল্প স্থান হিসাবে বেছে নিচ্ছেন অনেকেই। পর্যটকবান্ধব স্থানীয় পাহাড়িরা অর্থের বিনিময়ে পর্যটকদের রাত্রিযাপন এবং খাবারের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন।

জেলা ট্যুরিস্ট পুলিশের সুপার আব্দুল হালিম বলেন, “পর্যটকদের নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমণ নিশ্চিত করতে যাবতীয় পরামর্শ এবং সহায়তা করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পর্যটক হয়রানি বন্ধে শৃঙ্খলা মেনে ভ্রমণকারীদের ঘুরে বেড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।”

জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, “নতুন রং লাগিয়ে এবং ধুয়ে-মুছে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করে সাজানো হয়েছে সবগুলো পর্যটন স্পট এবং আবাসিক হোটেল। পর্যটকদের বরণে জেলা প্রশাসন, ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং স্থানীয় আবাসিক হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও ট্যুরিস্ট পরিবহন মালিক সমিতি বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। তারমধ্যে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জেলা প্রশাসন পরিচালিত সবগুলো পর্যটন স্পটের প্রবেশ ফি একদিনের জন্য ফ্রি করে দেয়া হয়েছে। ট্যুরিস্ট পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা ভ্রমণকারীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।” -আজাদী অনলাইন