ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ‘পাপ তো করিনি, মানুষের মন্তব্য পজিটিভলি নিচ্ছি’

‘পাপ তো করিনি, মানুষের মন্তব্য পজিটিভলি নিচ্ছি’

নিউজ ডেক্স : ফেসবুকে প্রেম, অতঃপর বিয়ে। প্রেমিকা বয়সে ১৮ বছরের বড়, তার আগের পক্ষের এক সন্তানও আছে।  সম্পর্ক টিকবে তো ? সমাজ বিষয়টিকে কীভাবে নেবে— এসব ভাবতে ভাবতে কেটে যায় সাত মাসেরও বেশি সময়।

ভেবেচিন্তে শেষ পর্যন্ত সব নেতিবাচকতাকে পেছনে ফেলে বিয়ের বিষয়টি সামনে নিয়ে এলেন নাটোরের গুরুদাসপুরের ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামের বাপ্পী হাসান মামুন (২২) নাটোর এন এস সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তিনি।

কিছুদিন হলো মামুন স্টক বিজনেস শুরু করেছেন। ধান, পাট, গম, সরিষাসহ অপচনশীল কৃষিপণ্য নিয়ে কাজ করছেন। এ কাজ করেই এগিয়ে যেতে চান। তার স্ত্রী একই উপজেলার খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোছা. খাইরুন নাহার (৪০)। বর্তমানে তারা নাটোর শহরের একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছেন।

রোববার (৩১ জুলাই) সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার শীর্ষে ছিল তাদের বিয়ের বিষয়টি। মামুন বলেন, সাত মাস আগে আমরা বিয়ে করেছি। এতদিন সম্পর্কের বিষয়ে কাউকে জানাইনি। নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার একটা বিষয় ছিল। সংসার জীবনে পা দিতে যাচ্ছি, আসলেই আমরা ভালো থাকতে পারব কি না। সবকিছু বুঝে শুনে এরপর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিনি বলেন, এসব ক্ষেত্রে পরিবারগুলোতে একটু তো সমস্যা হয়েই থাকে। আমার পরিবার প্রথমে রাজি না থাকলেও পরে মেনে নিয়েছে, তবে তার পরিবার এখনো মেনে নেয়নি। একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়েছে বলে ধারণা করছে অনেকে। সত্যি হলো, আমি তার কলেজের শিক্ষার্থী না। আমি নাটোর এন এস সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। আর তিনি খুবজীপুর মোজাম্মেল হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। আমাদের বিয়ের সময় তিনি প্রভাষক ছিলেন, দুই মাস আগে পদোন্নতি পেয়ে সহকারী অধ্যাপক হয়েছেন। তিনি ডিগ্রিতে দর্শন আর এইচএসিতে যুক্তিবিদ্যা পড়ান।

বাপ্পী হাসান মামুন বলেন, আমাদের কাছে বয়স কোনো বিষয় নয়— বলেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা তো কোনো পাপ করিনি। যার যে ধর্মই হোক, বিবাহ পবিত্র সম্পর্ক। আর আমাদের ধর্ম ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকেও এটা নিষেধ করা হয়নি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনদের মন্তব্যের বিষয়ে  তিনি বলেন, আমরা তো পাপ কাজ করিনি যে, মানুষ জানলে সমস্যা হবে। অনেকেই অনেক মন্তব্য করছে, আমরা সেসব দেখছি। কিন্তু কী করব! মানুষ তো মন্তব্য করবেই। আমরা সব ধরনের মন্তব্যকে পজিটিভলি নিচ্ছি। তাদের বিষয়ে কিছু বলার নেই, তাদের ধন্যবাদ জানাই। আর যারা বিষয়টি পজিটিভলি নিয়েছেন তাদের কাছে দোয়া চাই।  ভালো থাকার জন্যই বিয়ে করেছি, যাতে খারাপ না থাকি, সবাই সেই দোয়া করবেন।

গ্রামের মানুষ বিয়ের বিষয়টি কীভাবে নিয়েছে জানতে চাইলে মামুন বলেন, আমাদের একই উপজেলায় এবং পাশাপাশি ইউনিয়নে বাড়ি। গ্রামে সব ধরনের লোকই বাস করে। এসব বিষয় আবার একটু জটিল। অনেকেই দীর্ঘদিন যাবত অনেক ধরনের মন্তব্য করছিল আমাদের নিয়ে। কিন্তু আমরা তো পাপ কাজ করিনি। সেজন্য তাদের এসব কথা বন্ধ করতে আমরা বিয়ের বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছি।

তিনি বলেন, স্থানীয় এক সাংবাদিকের কাছে বিষয়টি জানিয়ে গতকাল সাক্ষাৎকার দিই। আজ সবগুলো মিডিয়ায় নিউজ হয়েছে। এ একটা নিউজ দেশব্যাপী ভাইরাল হবে ভাবতে পারিনি।

ফেসবুক মেসেঞ্জারে ২০২১ সালের ২৪ জুন দুজনের প্রথম পরিচয়। তারপর গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। তারপর ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। -ঢাকা পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!