ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ঢাকা-চট্টগ্রাম বুলেট ট্রেন আপাতত হচ্ছে না

ঢাকা-চট্টগ্রাম বুলেট ট্রেন আপাতত হচ্ছে না

নিউজ ডেক্স : বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে মাত্র এক ঘণ্টায় যাওয়ার জন্য বুলেট ট্রেনের যে ঘোষণা চার বছর আগে রেল কর্তৃপক্ষ দিয়েছিলো সম্ভাব্যতা যাচাই ও নকশা প্রণয়নের পর এখন সে প্রকল্প থেকে সরে এসেছে রেল মন্ত্রণালয়। ২০১৭ সালে প্রকল্পটির অনুমোদনের পর প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয় করে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর রেল মন্ত্রণালয় এখন মনে করছে, এই মেগা প্রকল্পে হাত দেয়ার আগে বর্তমান সিঙ্গেল লাইনগুলোকে ডাবল লাইনে রূপান্তরসহ চলমান প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ করতে হবে।

রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন অবশ্য দাবি করছেন যে বুলেট ট্রেন প্রকল্পটি একেবারে বাতিল হয়ে যায়নি। তিনি বলেন, আমরা সম্ভাব্যতা যাচাই ও নকশার কাজ শেষ করেছি। প্রথমে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ও পরে তা কক্সবাজার পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হবে। কিন্তু এই প্রকল্পে হাত দেয়ার আগে আমাদের কিছু স্বল্প ও মধ্যমেয়াদী প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে। রেল মন্ত্রণালয় এ মূহূর্তে কয়েকটি বিশেষ প্রকল্পের কাজ করছে যার মধ্যে আছে পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রকল্প, দোহাজারী থেকে কঙবাজার-রামু হয়ে ঘুনধুম পর্যন্ত ব্রডগেজ রেললাইন, লাকসাম-আখাউড়া ব্রডগেজ লাইন, টঙ্গী আখাউড়া ব্রডগেজসহ বেশ কিছু সিঙ্গেল লাইন ডাবল লাইনে রূপান্তরের কাজ চলছে।

মন্ত্রী বলছেন, এসব প্রকল্প শেষ করে বুলেট ট্রেনের মতো মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু করতে যেন সমস্যা না হয় সেজন্যই বুলেট ট্রেন ও লাইনের সম্ভাব্যতা যাচাই ও নকশার কাজ করে রাখা হয়েছে। যদিও গণপরিবহন বিশ্লেষক ও বুয়েটের শিক্ষক অধ্যাপক শামসুল হক বলছেন, প্রজেক্টটাই ছিলো একটা চাপানো প্রজেক্ট যা এসেছিলো পেছনের দরজা দিয়ে। তিনি বলেন, বুলেট ট্রেন তো ইলেক্ট্রিফিকেশনের দ্বিতীয় ধাপ। বাংলাদেশ তো প্রথম ধাপই এখনো শুরু করতে পারেনি। আর বুলেট ট্রেন করে দিনে ১০/১২টি ট্রিপ না দিতে পারলে এটা কি ব্যয় সংকুলান করতে পারবে? আবার দিনে ১০/১২টি ট্রিপ দেয়ার মতো যাত্রী বাংলাদেশে আছে এখন?। রেলমন্ত্রী বলছেন, প্রকল্পটি বহাল আছে এবং পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে আরও কিছু প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে বলেই আপাতত একাজে তারা হাত দিতে পারছেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলের একজন কর্মকর্তা বলেন, এটি প্রায় পুরোটাই উড়াল রেলপথের এবং বিদ্যুৎ চালিত। অথচ বিদ্যুৎ চালিত ট্রেনের কোন অভিজ্ঞতাই বাংলাদেশের নেই। ঢাকায় মেট্ররেল চলবে কিন্তু তাও কবে নাগাদ চলবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এ অবস্থায় প্রায় তিনশ কিলোমিটারের বুলেট ট্রেনের জন্য অর্থ পাওয়া অসম্ভব।

২০১৬ সালে ৩০-বছর মেয়াদী যে মহাপরিকল্পনা রেল বিভাগ করেছিলো তাতে বুলেট ট্রেন প্রকল্প না থাকলেও ২০১৭ সালের দিকে এটি আলোচনা আসে। এক পর্যায়ে সরকারের কাছ থেকে প্রাথমিক অনুমোদনের পর সম্ভাব্যতা যাচাই ও নকশার কাজ করা হয় প্রায় ১১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে। এর মধ্যেই নকশার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলে আসে যেখানে দেখা যায় কয়েকটি দৃষ্টিনন্দন স্টেশন নির্মাণও ছিলো এ প্রকল্পের পরিকল্পনায়। এরপর ২০১৮ সালে চীনা একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে সমঝোতাও হয় যা পরে আবার বাতিলও হয়ে যায়।

প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, ঢাকা থেকে কঙবাজার পর্যন্ত মোট ৩৫০ কিলোমিটার উড়ালপথে পাথর বিহীন ট্র্যাক দিয়ে বুলেট ট্রেন চলার কথা। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, ফেনী ও চট্টগ্রামের পাহাড়তলিতে মোট পাঁচটি স্টেশন করার কথা যেগুলো আসলে মাল্টি মোডাল ট্রানজিট হাব হিসেবে ব্যবহৃত হবার কথা। খবর বিবিসি বাংলার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!