নিউজ ডেক্স : ডা. মোস্তফা মোরশেদ আকাশ আত্মহত্যা প্ররোচণা মামলার প্রধান আসামি স্ত্রী তানজিলা হক চৌধুরী মিতু পলাতক রয়েছেন। হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর চট্টগ্রাম আদালতে কয়েকদফা হাজির থাকলেও গত চার ধার্য তারিখ অনুপস্থিত রয়েছেন তিনি। মিতু এরই মধ্যে বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার মামলার ধার্য তারিখে মহানগর হাকিম আদালতে হাজির হননি ডা. মিতু। এ কারণে আদালতের বিচারক মিতুকে শো’কজ করেছেন। এতে তার বিরুদ্ধে কেন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। মিতুসহ ৫ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে দেয়া অভিযোগপত্র বিচারিক কার্যক্রমের জন্য রয়েছে বলে জানালেন সিএমপির সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ। -আজাদী
আদালত থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার এসআই আবদুল কাদের গত ৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অভিযোগপত্রটি জমা দিয়েছিলেন। সেখান থেকে যায় মহানগর হাকিম আদালতে। অভিযোগপত্রভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- মিতুর মা শামীমা শেলী, বাবা আনিসুল হক চৌধুরী, ছোট বোন সানজিলা হক চৌধুরী আলিশা এবং মিতুর কথিত বন্ধু ডা. মাহবুবুল আলম। মামলার ছয় আসামির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ভারতীয় নাগরিক উত্তম প্যাটেলকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
ডা. আকাশ চন্দনাইশের বাংলাবাজার বরকল এলাকার মৃত আবদুস সবুরের ছেলে। নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার ২ নম্বর সড়কের ২০ নম্বর বাড়িতে পরিবার নিয়ে তিনি বসবাস করতেন। গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি তার মা জোবেদা খানম বাদি হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগ এনে ৬ জনকে আসামি করে মামলা করেছিলেন। ৩২ বছর বয়সী ডা. আকাশ থ্রি ডক্টরস নামে মেডিকেল ভর্তির একটি কোচিং সেন্টার চালাতেন। তার স্ত্রী মিতু কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস পাস করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ইন্টার্ন করেন। সেখানেই ডা. আকাশের সঙ্গে তার পরিচয় এবং ২০১৬ সালে বিয়ে হয়। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান মিতু। সেখান থেকে গত বছরের ১৩ জানুয়ারি দেশে ফেরেন।
গত বছরের ৩১ জানুয়ারি ভোরে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বাসায় ইনজেকশনের মাধ্যমে নিজের শরীরে বিষ প্রয়োগ করে আত্মহত্যা করেন আকাশ। আত্মহত্যার আগে ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক ও প্রতারণার অভিযোগ করেন। এর প্রমাণ হিসেবে মিতুর সঙ্গে তার বন্ধুদের বেশ কিছু ছবিও তিনি ফেসবুকে আপলোড করেন। ওইদিন রাতে নন্দনকানন এলাকায় আত্মীয়ের বাসা থেকে মিতুকে আটক করে পুলিশ। আগস্টের শেষ সপ্তাহে উচ্চ আদালত থেকে এ মামলায় জামিন নেন মিতু। এরপর কয়েকদফা চট্টগ্রাম আদালতে মামলার ধার্য তারিখে উপস্থিত হলেও পরে পলাতক হয়ে যান। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনি তিন ধার্য তারিখে পরপর অনুপস্থিত আদালতে। এরই মধ্যে জানা গেল তিনি দেশ ছেড়ে গেছেন।
এ বিষয়ে কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ জানান, আলোচিত এ মামলায় প্রধান আসামি ডা. মিতু আদালতে চারদফা গরহাজির ছিলেন। এ কারণে আদালতের বিচারক তার বিরুদ্ধে কেন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে না জানতে চেয়েছেন বলেও জানান এ কর্মকর্তা।