Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | কথার বরখেলাপ করবেন না, ব্যাংক মালিকদের প্রধানমন্ত্রী

কথার বরখেলাপ করবেন না, ব্যাংক মালিকদের প্রধানমন্ত্রী

hasina-20200106233231

নিউজ ডেক্স : ব্যাংক মালিকদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এ পর্যন্ত যা যা চেয়েছেন সব একে একে পূরণ করেছি। কিন্তু আপনারা কথা (ব্যাংক ঋণ ও আমানতে সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি) রাখেননি। এবার আর কথার বরখেলাপ করবেন না, কথা রাখতেই হবে।’

সোমবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (ব্যাব) অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা এসব বলেন।

‘মুজিব বর্ষ’ উদযাপনে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (ব্যাব) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টে ২২৫ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ ‘মুজিব বর্ষ’ ঘোষণা করা হয়।

আগামী পহেলা এপ্রিল থেকে ব্যাংকে ঋণে ৯ শতাংশ ও আমানতে ৬ শতাংশ সুদের হার কার্যকর করতে ব্যাংক মালিকদের প্রতিশ্রুতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যে কথাগুলো ব্যাবের চেয়ারম্যান (নজরুল ইসলাম মজুমদার) বলছিলেন আমি আশা করি, পুনরাবৃত্তি করতে চাই না, আশা করি সেটা কার্যকর হবে। সেটা না হলে তো আমাদের বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটা সমস্যা হয়ে যায়। সেটা আপনারা নিজেরাই ভালো করে জানেন।’

সম্প্রতি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের হেডকোয়ার্টারে বেসরকারি ব্যাংক মালিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ১ এপ্রিলের মধ্যে ব্যাংক ঋণে সুদের হার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। একই সঙ্গে আমানতে সুদের হারও ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে।

আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ব্যাংক সেক্টরকে বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বেসরকারি ব্যাংক- আমি কিন্তু এই খাতটা সর্বক্ষেত্রে উন্মুক্ত করে দিয়েছিলাম। বলেছিলাম বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে হবে। বেসরকারি ব্যাংক দিতে গিয়েও কিন্তু অনেক বাধা এসেছে। পদ্মা সেতুর অর্থ যারা বন্ধ করেছিল তাদেরই আপত্তি ছিল যে এত ব্যাংক দিয়ে হবে কি। বাংলাদেশের অর্থনীতি তো এত বড় না। ‘আমি বলেছিলাম আজকে হয়তো বড় না কিন্তু বড় হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেককে তো আমি ডেকে ডেকে বলেছি আপনারা প্রাইভেট ব্যাংক করেন। আপনারা ব্যবসা বাণিজ্যের পথকে সুগম করে দেন। এখন যেমন আমরা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শুধু দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ করি’।

দেশি বিনিয়োগকারীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষেরও তো বিনিয়োগের সক্ষমতা এখন আছে। আমরা অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি আপনারা সেখানে বিনিয়োগ করবেন। সেখানে কাজ করবেন। আমরা নিজেরা করব। বিদেশি বিনিয়োগ আসবে। সবগুলোই হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সেভাবেই দেশটাকে গড়তে চাই। আর কখনো বাংলাদেশকে যেন পেছনে ফিরতে না হয়। আজকে বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে। সেটুকু আপনাদের কাছে চাই।’

দেশের অগ্রগতি ও বৈশ্বিক পর্যায়ে মর্যাদা বৃদ্ধির কথা তুলে ধরে টানা তিনবারসহ চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা ব্যবসা করেন দেশে বিদেশে যান। হয়তো এই ১০ বছর আগেও আপনারা যখন বাইরে যেতেন বাংলাদেশ শুনে মানুষ কি বলতো। আর এখন কী বলে। নিশ্চয়ই ব্যবধানটা আপনারা বুঝতে পারেন। এখন যে সম্মান আমরা পাই এটা অর্জন করা আমাদের একটা লক্ষ্য ছিল।’

‘আমরা বিজয়ী হয়ে কেন অন্যের কাছে মাথানত করে চলব। আপনারা জানেন অনেক চ্যালেঞ্জ আমাদের মোকাবিলা করতে হয়েছে। অনেক ছড়াই উতরাই পার হতে হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মনে করি সততাই শক্তি, এর মধ্য দিয়ে যে কোনো কিছু অর্জন করা যায়। আজকে আমাদের কেউ ভিক্ষুকের জাতি, ঝড় জলোচ্ছাসের দেশ এভাবে কেউ অবহেলার চোখে দেখে না। আমার একটা লক্ষ্যই ছিল যে এমনভাবে দেশটাকে গড়ে তোলা যে মানুষ যেন বাংলাদেশের নাম শুনলেই সম্মানের চোখে দেখে এবং বাংলাদেশকে সমীহ করে। আজকের বাংলাদেশ আর পিছিয়ে নেই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!