ব্রেকিং নিউজ
Home | অন্যান্য সংবাদ | আল্লাহর কাছে যে আমলগুলো অধিক পছন্দনীয়

আল্লাহর কাছে যে আমলগুলো অধিক পছন্দনীয়

221727_07-29-09

মুফতি মুহাম্মদ মর্তুজা : একজন আশেকের মূল লক্ষ্য থাকে তার মাশুকের মন জয় করা। স্বভাবগতভাবেই মানুষ তার প্রিয় ব্যক্তির পছন্দ-অপছন্দ জেনে সে অনুযায়ী তার মন জয় করার চেষ্টা করে। প্রতিটি মুমিনেরও লক্ষ্য তাঁর মাশুক মহান রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি অর্জন করা। একজন মুমিনের সার্থকতা তার প্রভুর সন্তুষ্টির মধ্যেই নিহিত। তাই প্রতিটি মুমিনের উচিত মহান আল্লাহর কাছে প্রিয় ইবাদতগুলো সম্পর্কে ধারণা রাখা। রাসুলুল্লাহ (সা.) এমন কিছু আমল সম্পর্কে নির্দেশনা দিয়েছেন।

সময়মতো নামাজ আদায় করা : একদিন হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহর নিকট কোন কাজ সব থেকে অধিক পছন্দনীয়? তিনি বললেন, সময়মতো নামাজ আদায় করা। ঈমানের পর ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খুঁটি হলো নামাজ। নামাজের ক্ষেত্রে অবহেলার কোনো অবকাশ নেই; বরং সময়মতো নামাজ আদায়ের লক্ষ্যে যারা মসজিদে অপেক্ষায় থাকে, তাদের জন্য নামাজের সওয়াবই লেখা হয়।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, বান্দা যতক্ষণ পর্যন্ত নামাজের জন্য বসে অপেক্ষা করতে থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত সে নামাজরত থাকে। আর ফেরেশতারাও ততক্ষণ পর্যন্ত তার জন্য এই বলে দোয়া করতে থাকে যে হে আল্লাহ, তুমি তাকে ক্ষমা করে দাও। হে আল্লাহ, তুমি তাকে রহম করো। (আর ফেরেশতারা) ততক্ষণ পর্যন্ত এরূপ দোয়া করতে থাকে, যতক্ষণ সে সেখান থেকে উঠে চলে না যায় কিংবা যতক্ষণ অজু নষ্ট না করে। (মুসলিম, হাদিস : ১৩৯৫)

মাতা-পিতার সঙ্গে উত্তম ব্যবহার করা : হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) আবার জিজ্ঞেস করলেন, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, মাতা-পিতার সঙ্গে উত্তম ব্যবহার করা। পবিত্র কোরআনের বহু আয়াতে মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের মাতা-পিতার সহিত সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন। সুরা ইসরার ২৩ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘আর তোমার রব আদেশ দিয়েছেন যে তোমরা তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করবে না এবং মাতা-পিতার সঙ্গে সদাচরণ করবে। তাদের একজন অথবা উভয়েই যদি তোমার কাছে বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদের উফ বলো না এবং তাদের ধমক দিয়ো না। আর তাদের সঙ্গে সম্মানজনক কথা বোলো।

(সুরা : ইসরা, আয়াত : ২৩)

আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা : এরপর আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)  জিজ্ঞেস করলেন, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। কালের পরিবর্তনে জিহাদের সংজ্ঞাও এখন পাল্টে গেছে। এক কুচক্রীমহল তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে জিহাদ বলে চালিয়ে দিয়ে ইসলামের একটি মৌলিক ফরজকে সুকৌশলে কলুষিত করে দিয়েছে। যার ফলে অনেকেই এখন জিহাদের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজকে অস্বীকার করে বসে। অথচ আমাদের দায়িত্ব ছিল জিহাদ ও সন্ত্রাসের পার্থক্য মানুষের সামনে তুলে ধরা। যেসব কুচক্রীমহল ইসলামের লেবেল ব্যবহার করে দুনিয়াব্যাপী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, তাদের অস্ত্রের ব্যবসা চাঙ্গা করছে, তাদের সম্পর্কে জনসচেতনতা গড়ে তোলা। জিহাদ তো মুক্তি এনে দেয়, ধ্বংস নয়। জিহাদ মানে যুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত না হলে আমরাও এই স্বাধীন বাংলাদেশ পেতাম না। তাই সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ডকে কোনোভাবেই জিহাদ বলে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত নয়।

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)  বললেন, রাসুল (সা.) এগুলো সম্পর্কে আমাকে বলেছেন। আমি তাঁকে আরো অধিক প্রশ্ন করলে তিনি আমাকে আরো জানাতেন। (বুখারি, হাদিস : ৫৯৭০)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!