ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | অভাবের তাড়নায় ‘সন্তান বিক্রি’ করতে বাজারে তুললেন মা!

অভাবের তাড়নায় ‘সন্তান বিক্রি’ করতে বাজারে তুললেন মা!

নিউজ ডেক্স : স্বামীর সঙ্গে দীর্ঘদিন যোগাযোগ নেই। নিজে অসুস্থ। থাকেন বাবার বাড়িতে। সেখানেও অভাব। নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। এ অবস্থায় নিজের সন্তানকে ‘বিক্রির জন্য’ বাজারে তুলেছিলেন এক মা! পরে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির হস্তক্ষেপে সন্তান নিয়ে ঘরে ফেরেন ওই নারী। বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ি জেলা শহরের এক বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে বিষয়টি জানাজানির পর জেলাজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। আজ শুক্রবার ওই পরিবারের জন্য আর্থিক সহায়তা নিয়ে যান সংরক্ষিত মহিলা আসনের এক এমপি।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ি হাট বাজারে নিজের ছয় বছরের সন্তান রামকৃষ্ণ চাকমাকে বিক্রি করতে নেন মা পারুল চাকমা। সন্তানের বিনিময় তিনি ১২ হাজার টাকা চান। বিষয়টি কয়েকজনের নজরে এলে তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানান।

পরে সন্তানসহ ওই মাকে কমলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুনীল চাকমার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। চেয়ারম্যান ওই মাকে বুঝিয়ে পরিবারের কাছে পাঠান। পারুল চাকমা খাগড়াছড়ি ভাইবোনছড়ার পাকোজ্জ্যাছড়ি এলাকার কালাবো চাকমার মেয়ে। স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার পর সন্তান নিয়ে তিনি বাবার বাড়িতে থাকেন।

কমলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুনীল চাকমা জানান, বিষয়টি জানার পর আমি সন্তানসহ মাকে অফিসে নিয়ে আসি। পরে পরিবারের জিম্মায় তাদের হস্তান্তর করি।

ভাইবোনছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুজন চাকমা বলেন, পারুল চাকমা শারীরিকভাবে অসুস্থ। মূলত সন্তানকে কোনো ভালো পরিবারে দত্তক দেওয়ার জন্য বাজারে নিয়ে যান তিনি। সেখানে কয়েকজনের কাছে তিনি সন্তানের বিনিময়ে ১২ হাজার টাকা চান। পরে বিষয়টি জেনে আমি দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি। বিষয়টি দুঃখজনক।

এ বিষয়ে শিশু রাম কৃষ্ণ চাকমার মা পারুল চাকমা বলেন, ঘরে খাবার নাই। আমার ওষুধ কেনার টাকা নাই। কিভাবে চলব কিভাবে বাঁচবো। তাই ছেলেকে ভালো পরিবারে দিতে চেয়েছিলাম।

এদিকে শুক্রবার সকালে পারুল চাকমা ও তার সন্তান রামকৃষ্ণকে দেখতে যান সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা। এসময় তিনি পরিবারটিকে ৬ মাসের খাবার সামগ্রী, নগদ অর্থ সহায়তা দেন। একই সঙ্গে তাদের একটি সরকারি ঘর দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলেও জানান।

সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা বলেন, এই যুগে এমন ঘটনা সত্যিই দুঃখজনক। বিষয়টি আমি জানার পর তাদের দেখতে গিয়েছি। মূলত অভাব থেকে এমনটা করেছেন বলে জেনেছি। শিশুটিকে কোনো সরকারি শিশু সদনে পাঠানো যায় কিনা দেখবো। -আজাদী অনলাইন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!