এলনিউজ২৪ডটকম : চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের কেরানীহাট হতে মৌলভীর দোকান পর্যন্ত সড়কের উপর মাটির প্রলেপ পরিস্কার করছেন সাতকানিয়া ইটভাটা মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখি হওয়ায় অবশেষে তাদের টনক নড়েছে বলে জানা গেছে। আজ ৪ এপ্রিল সকালে সাতকানিয়া ইটভাটা মালিক সমিতির উদ্যোগে ও দোহাজারী হাইওয়ে থানার সহযোগিতায় মহাসড়কে মাটির প্রলেপ পরিস্কার করার কাজ শুরু হয়। ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব নিজাম উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল আলমের নেতৃত্বে ১০০ জন শ্রমিক এ মাটির প্রলেপ পরিস্কার কাজে নিয়োজিত রয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, আমন ধান কাটার পর থেকে শুরু হয় মাটি ব্যবসায়ীদের দৌঁড়ঝাপ। সিন্ডিকেট করে তারা স্কেভেটর দিয়ে আবাদি জমি থেকে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করে। আর মাটিভর্তি সব ট্রাক চলাচল করে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কে। মাটি ব্যবসায়ীরা আবাদি জমিগুলো থেকে ৩৫–৪০ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নিয়ে যায়। অভিযোগ রয়েছে, তারা জমির মালিকদেরকে মাটি বিক্রিতে বাধ্য করে। কোনভাবে একটি জমির মাটি কিনে নিতে পারলে অন্যান্য জমির মালিকরাও বাধ্য হয়ে তাদের নিকট বিক্রি করে দেয়। না হলে মাটি ব্যবসায়ীরা জমির সীমানা ধরে ৩০–৪০ ফুট গভীরভাবে মাটি কেটে নেয়। তখন অন্যের জমি তাদের দিকে ভেঙে পড়ে যায়। এতে প্রতিবাদ করলেই নেমে আসে শাস্তির খড়গ। মাটি ব্যবসায়ীদের হাতে অনেক জমির মালিককে মারও খেতে হয়েছে। আবাদি জমির উপরের অংশের মাটিগুলো শুকনো হলেও গভীরের মাটিগুলো ভেজা, নরম ও কাদাযুক্ত। অনেক সময় পানিযুক্ত নরম মাটি স্কেভেটর দিয়ে ট্রাকে তুলে দেয়া হয়। এরপর মাটিভর্তি এসব ট্রাক চলাচলের সময় সড়কের উপর নরম মাটি ও ফোটা ফোটা পানি পড়ে। সড়কে পড়া এ মাটির উপর দিয়ে বিভিন্ন যানবাহন চলতে চলতে মাটিগুলো সড়কের বিটুমিনের উপর লেগে যায়। এভাবে গত কয়েক মাস যাবৎ দিন রাত সমান তালে নরম ও কাদাযুক্ত মাটির গাড়ি চলছে মহাসড়কে। মাটিভর্তি ট্রাক চলতে চলতে সড়কের সাতকানিয়া অংশের মৌলভীর দোকান থেকে কেরানীহাট পর্যন্ত এলাকায় সড়কের বিটুমিনের উপর কয়েক ইঞ্চি উঁচু মাটির প্রলেপ পড়ে যায়। অনেক স্থানে মাটির প্রলেপের নিচে হারিয়েছে গেছে সড়কের বিটুমিন। সড়কের উপর জমাট বাঁধা মাটির প্রলেপ বৃষ্টিতে ভিজে পিচ্ছিল হয়ে যায় পুরো সড়ক।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ সামান্য বৃষ্টিতে মহাসড়কের কেরানীহাট থেকে দোহাজারী মৌলভীর দোকান পর্যন্ত পিচ্ছিল হয়ে যায়। এতে যানবাহন চলাচল ব্যাহত ও দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছিল। এ সময় কক্সবাজার ও বান্দরবানমুখী পিকনিকের গাড়িসহ কয়েকশ যানবাহন আটকা পড়েছিল।
দোহাজারী হাইওয়ে থানার ওসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, মহাসড়কের ওই সীমানায় আগেও কয়েক দফা মাটির প্রলেপ সরানোর কাজ করা হয়েছিল। আজ বুধবার দোহাজারী হাইওয়ে পুলিশের সহযোগিতায় সাতকানিয়া ইটভাটা মালিক নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে মহাসড়কের উপর মাটির প্রলেপ পানি দিয়ে পরিস্কার করা হচ্ছে। ফলে মহাসড়কের ওই সীমানায় যানবাহন চলাচলে আর কোন ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে না।