
নিউজ ডেক্স : সাতকানিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাতিয়া খালের উপর নির্মিত ব্রিজটি ধসে পড়লেও তা পুনর্নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই। ব্রিজ না থাকায় সদর ইউনিয়নের নতুন পাড়া, মাজুদ চৌধুরী পাড়া, ডাক্তার সাহেবের পাড়া, মাইজ পাড়া ও পার্শ্ববর্তী সোনাকানিয়া ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়া, ডিলার পাড়া, হাতিয়ারকুল, মাঝের পাড়ার তিন হাজার মানুষ যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। নিরুপায় হয়ে এলাকাবাসী নিজেদের উদ্যোগে ধসে পড়া ব্রিজের পাশেই বাঁশ ও কাঠ দিয়ে নির্মাণ করেছে দেড় ফুট প্রস্থের সাঁকো। ঝুঁকিপূর্ণ এ বাঁশের সাঁকো ভেঙে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
এ খালে ব্রিজ থাকাকালীন প্রতিদিন শত শত গাড়ি পারাপার হতো। ব্রিজ ছাড়া অন্য বিকল্প পথ না থাকায় স্থানীয় মানুষের যাতায়াতের সমস্যা বর্তমানে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম পাশ দিয়ে বয়ে গেছে হাতিয়া খাল। এ খালের ওপর অনেক আগে নির্মিত হয়েছিল ব্রিজ। ব্রিজটির সম্পূর্ণ ধসে খালের পানিতে ভাসছে। তারপরও নতুন পাড়া, মাজুদ চৌধুরী পাড়া, ডাক্তার সাহেবর পাড়া, মাইজ ও পার্শ্ববর্তী সোনাকানিয়া ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়া, ডিলার পাড়া, হাতিয়ারকুল, মাঝের পাড়ার ৩ হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াতের জন্য তৈরি করছেন সাঁকো। এই সাঁকো দিয়ে প্রতিবার ১ জন ঝুঁকি নিয়ে খুব ধীরগতিতে চলাচল করতে পারে। যান চলাচল না থাকায় স্থানীয় শিক্ষার্থীরা ২ কিলোমিটার হেঁটে মির্জাখীল উচ্চ বিদ্যালয়, মির্জাখীল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গারাংগিয়া আলীয়া মাদ্রাসা, গারাংগিয়া রব্বানী মহিলা ফাযিল মাদ্রাসা, সাতকানিয়া সরকারি কলেজ যাতায়াত করছে। তাছাড়া পাহাড়ী এলাকার শীত ও বর্ষা মৌসুমের কৃষি পণ্য ঝুঁকি নিয়ে মাথায় করে এ ব্রিজ দিয়ে পারাপার করছে চাষিরা। হুমকির মুখে রয়েছে মাজুদ চৌধুরী পাড়া, নতুন পাড়াসহ সরকারি ও বেসরকারি অগণিত প্রতিষ্ঠান। হাতিয়া খাল খরস্রোতা হওয়ার কারণে এ ব্রিজের ২ তীর বর্ষা মৌসুমে বারবার ভেঙে যায়। মির্জাখীল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুমন বড়ুয়া জানান, ব্রিজ না থাকায় শিক্ষার্থীরা ২ কিলোমিটার পথ হেঁটে বিদ্যালয়ে আসে। এ ব্যাপারে হাতিয়ারকুল এলাকার ইউপি সদস্য আমানুল আলম চৌধুরী জানান, ব্রিজটি একবার পাকা হবে বলে শুনেছিলাম। এখন পর্যন্ত কিছু হয়নি।
এ ব্যাপারে সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নেজাম উদ্দিন হাতিয়া খালের পাকা ব্রিজটি সম্পূর্ণভাবে খালে ধসে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, জরুরি প্রয়োজনে যাতায়াতে এলাকার জনগণ একটি কাঠের সাঁকো দিয়ে বর্তমানে পারাপার করছেন। ব্রিজটি নির্মাণের জন্য এমপি মহোদয়ের ডিও লেটার নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে আবেদন করেছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকরী পদক্ষেপ নিলে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ তাড়াতাড়ি হবে। অপরদিকে, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরী ব্রিজটির বেহাল দশার কথা স্বীকার করে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তিনি নিজেও ব্রিজটির ব্যাপারে অনেক দেন-দরবার করেছেন। বার বার শুনছেন ব্রিজটির কাজ শুরু হবে কিন্তু আজ অবধি কেনো কাজ শুরু হয়নি তা বোধগম্য নয়। সাতকানিয়া উপজেলা প্রকৌশলী নাশিদ হাসান সিরাজীর নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ব্রিজটি কোনো বিভাগের আওতাধীন তা দেখে বলতে পারব। -ইত্তেফাক